ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জেনেশুনেই দণ্ডিত ও ঋণ খেলাপীদের মনোনয়ন দাখিল করে বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮

জেনেশুনেই দণ্ডিত ও ঋণ খেলাপীদের মনোনয়ন দাখিল করে বিএনপি

রাজন ভট্টাচার্য ॥ নির্বাচন কমিশনের আইন অনুযায়ী কোন দণ্ডিত ও ঋণখেলাপী ব্যক্তি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তাছাড়া ফরমে ত্রুটি থাকাসহ সুনির্দিষ্ট কারণে যাচাই-বাছাইয়ের সময় মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী বাতিল হওয়ার বিধান আছে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই বিএনপির বেশিরভাগ আসনে একাধিক ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিয়েছিল। সবকিছু মেনে নিয়েই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন দলটির প্রার্থীরা। গত দুই ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম দিনে বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়াসহ ৮১ প্রার্থী বাদ পড়েছেন। এর মধ্যে হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন অনেক। এ নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে নানা অভিযোগ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, সরকারের নির্দেশে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হচ্ছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সবকিছু জেনে-বুঝে মনোনয়ন দাখিল করেন বিএনপি প্রার্থীরা। আইন অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়টি এখন রাজনৈতিকভাবে ইস্যু তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি। এই প্রেক্ষাপটে আইন মেনে বিএনপির প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পরামর্শও দিয়েছেন তারা। সে সঙ্গে প্রয়োজনে আদালতে যাওয়ার পরামর্শও বিশ্লেষকদের। এবারের নির্বাচনে ২৮ নবেম্বর পর্যন্ত মনোনয়ন দাখিল করেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। বিএনপির পক্ষ থেকে ৩০০ আসনে ৮শ’র বেশি প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। মোট মনোনয়ন জমা পড়ে তিন হাজার ৬৫টি। ২ ডিসেম্বর থেকে মনোনয়ন যাচাই-বাছাই শুরু করে কমিশন। প্রথম দিনে ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। এরমধ্যে বিএনপির ৮১ প্রার্থী বাদ পড়েছেন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খেলাপী ঋণ, আদালতে দ-িত হওয়া ও তথ্যের অসঙ্গতি মূলত এই তিন কারণেই প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। বৈধ মনোনয়নের সংখ্যা এখন দুই হাজার ২৭৯টি। তবে মনোনয়ন বতিলের পরদিন অর্থাৎ সোমবার থেকেই নির্বাচন কমিশনে আপীল শুরু করেছেন সব দলের প্রার্থীই। পাঁচ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপীল করার সুযোগ রয়েছে। নয় ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন। আর ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন। হিসাবে দেখা গেছে, এবার মোট দাখিল করা মনোনয়নের ২৫ দশমিক ৬৪ ভাগ বাতিল হয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে যা ছিল ২২ দশমিক ৬৪ ভাগ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেন দুই হাজার ৪৬৪ জন। তখন বাতিল হয়েছিল ৫৫৭টি। বৈধ মনোনয়নের সংখ্যা ছিল এক হাজার ৯০৩টি। খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে নির্বাচন কমিশনকে ‘পুতুল নাচের’ আসরের সঙ্গে তুলনা করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, কে এম নূরুল হুদার নির্বাচন কমিশন যে ক্ষমতাসীনদের ‘নির্দেশের বাইরে’ এক পাও এগোতে পারবে না, তা মনোনয়ন বাতিলের চিত্র থেকেই স্পষ্ট। একদিকে টার্গেট করে খালেদা জিয়াসহ দলের ৫০ হেভিওয়েট জনপ্রিয় নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্যদের মনোনয়নপত্র বিনা অজুহাতেই বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের একজনের মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়নি। কারণ, তাদের সাধু-সন্ন্যাসী বলে মনে করে নির্বাচন কমিশন। অথচ নির্বাচন কমিশন বলছে, দল দেখে নয়, আইন মেনেই মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। যদিও তা মানতে নারাজ বিএনপি। জানতে চাইলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, বিএনপিসহ মনোনয়ন বাতিল হওয়া সকল নেতার নির্বাচন কমিশনের কাছে আপীল করার সুযোগ আছে। তারা ইচ্ছা করলেই আপীল করতে পারেন। যাদের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে তাদের মনোনয়নপত্রে নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। এটা তো স্পষ্ট। আবার কেউ দ-িত, কেউবা ঋণখেলাপী। কাদের মনোয়ন বৈধ হবে, কাদের হবে না নির্বাচন কমিশনের আইনে এ নিয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আছে। অর্থাৎ ইচ্ছা করলেই কারো মনোনয়ন বাতিল করা যায় না। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতেই বাতিল হয়েছে। তিনি বলেন, মনোনয়ন বঞ্চিতদের আদালতে যাওয়ারও সুযোগ আছে। তারা যদি মনে করেন, কমিশনের কাছে আপীল করে ন্যায়বিচার পাননি তখন যে কেউ আদালতে যেতে পারবেন। একটা বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, আইন মেনে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা করতে হবে। তাছাড়া আইন তো সবার জন্য সমান। বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিলের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে দেখার কোন সুযোগ আছে বলেও মনে করেন না তিনি। রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বাছাইয়ে বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ কয়েক ডজন নামীদামী প্রার্থী রয়েছেন। ১৭ বছরের সাজা নিয়ে কারাগারে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তিনটি মনোনয়নপত্রই বাতিল করা হয় দুর্নীতি মামলায় দ-িত হওয়ার কারণে। এছাড়া খেলাপী ঋণ, তথ্যে অসঙ্গতিসহ বিভিন্ন কারণে বাকিদের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় ছয়টি আসনে এখন বিএনপি বা জোটের কোন প্রার্থী নেই। এসব আসনের মধ্যে রয়েছে বগুড়া-৭, ঢাকা-১, মানিকগঞ্জ-২, জামালপুর-৪, শরিয়তপুর-১ ও রংপুর-৫। বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী মোরশেদ মিল্টনের মনোনয়নপত্রও বাতিল হওয়ায় এখানে বিএনপির কোন প্রার্থী থাকছেন না। বাকি দুটি আসনের মধ্যে খালেদা জিয়ার বিকল্প প্রার্থী হিসেবে বগুড়া-৬ আসনে আছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। টেলিফোন বিল বকেয়া থাকায় ঢাকা-৯ আসনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে বিএনপির অপর প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক নেতা হাবিবুর রশীদ। এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, মামলার দ-, ঋণ খেলাপীর বিষয়টি মাথায় রেখেই বিভিন্ন আসনে একাধিক প্রার্থী দেয়া হয় বিএনপির পক্ষ থেকে। দলের হাইকমান্ডের নির্দেশেই এ কাজটি করা হয়েছিল। তাছাড়া মামলার কারণে খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারছেন না এ বিষয়ে অনেকটা নিশ্চিত ছিল বিএনপি। তাই ভুল করেনি দলটি। ঝুঁকিও নিতে চায়নি। তার সব আসনে একাধিক প্রার্থী দেয়া হয়। আফরোজা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও ঢাকা-৮ আসনে তার স্বামী বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। এই আসনে ১৪ দলের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। গত দুই নির্বাচনে এই আসন থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। ঢাকা-৭ আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসির উদ্দিন আহাম্মেদের স্ত্রী নাছিমা আক্তার কল্পনার মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়েছে। এই আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু। ঋণ খেলাপের কারণে ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী শিক্ষক নেতা সেলিম ভূঁইয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিকের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও এখানে বিএনপির আরেক প্রার্থী জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলামের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। ঢাকা-২ আসনে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে দ- থাকায়। ঋণ খেলাপের কারণে চট্টগ্রাম-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় নেতা আসলাম চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে । চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোঃ নাছিরউদ্দিন এবং তার ছেলে মীর মোঃ হেলাল উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এই আসনে বিএনপির আরেক প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে। তবে বিএনপির অপর প্রার্থী আবু সুফিয়ানের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। খেলাপী ঋণ ও মামলায় সাজার কারণে বাতিল হয়েছে এম মোর্শেদ খানের মনোনয়নপএ। রাজশাহী-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফার বিরুদ্ধে ঋণখেলাপী ও ১০ মামলার তথ্য গোপন করায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। নাটোরে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা বিএনপির সভাপতি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুরও মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। ২০০৭ সালে জঙ্গীবাদ ও নাশকতার পৃথক দুটি মামলায় সাজা হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়। এছাড়া জামালপুর-১ আসনে বিএনপির সাবেক এমপি রশিদুজ্জামান মিল্লাত, কিশোরগঞ্জের সাবেক বিএনপির দলীয় এমপি মেজর অব. আখতারুজ্জামানসহ বহু বিএনপি নেতার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। স্বাক্ষর না থাকায় সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি গোলাম মওলা রনির মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। যদিও সোমবার তিনি ইসিতে আপীল করেছেন। ঋণ খেলাপীর অভিযোগে হবিগঞ্জ-১ আসনের হেভিওয়েট প্রার্থী ড. রেজা কিবরিয়ার মনোনয়ন বাতিল করেছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। মানিকগঞ্জে তিনটি আসনে বিএনপির সাতজনের মনোনয়ন বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার রবিবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনে (ইসিতে) মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের চিঠিটি পৌঁছে দেন। চিঠিতে ফখরুল বলেন, আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক কর্তৃক দলীয় মনোনয়নপত্রে আমার প্রদত্ত স্বাক্ষর গ্রহণ করছে না, যা অনাকাক্সিক্ষত। দৃঢ়তার সঙ্গে জানাচ্ছি যে, মানিকগঞ্জ জেলার প্রতিটি আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা আমার সুপরিচিত এবং আমি নিজে তাদের মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেছি, এ বিষয়ে সন্দেহের বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। এদিকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাই ও ভাতিজার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ঋণ খেলাপের অভিযোগে চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) ও চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসন থেকে সাকা চৌধুরীর ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ও তার ছেলে সামির কাদের চৌধুরী চট্টগ্রাম-৬ আসনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। চট্টগ্রাম-৭ আসনে বিএনপির দুই প্রার্থী আবদুল আলীম ও আবু আহমেদ হাসনাতের মনোনয়নপত্রও ঋণ খেলাপের দায়ে বাতিল করা হয়েছে। তবে এই আসনে বিএনপির অপর দুই প্রার্থী বৈধ হয়েছেন। টিএ্যান্ডটির বিল বকেয়া থাকায় চট্টগ্রাম-৩ (সন্দীপ) আসনে বিএনপি প্রার্থী মোস্তফা কামাল পাশার মনোনয়নও বাতিল হয়েছে। চট্টগ্রাম-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী নুরুল আমিনের মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে। আইনী জটিলতায় খাগড়াছড়ি আসনে বিএনপির প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়ার এবং দ- থাকায় নাটোর-২ আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। তবে দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে। পঞ্চগড়-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী তৌহিদুল ইসলাম মেয়র থাকা অবস্থায় মনোনয়নপত্র দাখিল করায় এবং ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়নপত্র জমা দেয়ায় পঞ্চগড়-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ফরহাদ হোসেন আজাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। মামলার কারণে বরগুনা-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী মতিউর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। দলীয় মনোনয়ন ফরমে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের স্বাক্ষরে মিল না থাকায় গোপালগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির এস এম জিলানীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। লালমনিরহাট-২ আসনে বিএনপির মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের এবং মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ না করায় নওগাঁ-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী নজমুল হকের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সিরাজগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও তার স্ত্রী রোমানা মাহমুদের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। নেত্রকোনা-৫ আসনে দলীয় মনোনয়নপত্রে মহাসচিবের স্বাক্ষর সঠিক না থাকায় আবু তাহের তালুকদার ও রাবেয়া খাতুনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এখানে এখন বিএনপির একক বৈধ প্রার্থী ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ। পটুয়াখালী-২ আসনে বিএনপির শহীদুল আলম তালুকদারের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও তার স্ত্রী সালমা তালুকদার এবং মনির হোসেনের মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে। দিনাজপুর-৩ আসনে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম পদত্যাগ করেননি বলে মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে এবার মনোনয়নপত্র বিক্রির রেকর্ড হয়েছে। চার হাজার ৫৮০ মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে দলটি। সব দল মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। ২৮নবেম্বর শেষদিনে ৩০০ আসনে সব দলের মনোনয়নপত্র জমা পড়ে তিন হাজার ৫৬টি।
×