ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 বাংলা একাডেমির  প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী  আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাঙালীর মনন ও সৃজনশীলতার পরিচয়বহ প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে ভাষা শহীদদের রক্তের ঋণকে ধারণ করে ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানটি। সময়ের স্রোতধারায় আজ সোমবার ৩ ডিসেম্বর বাঙালী জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক প্রতিষ্ঠানটির ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে রবিবার একাডেমির পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। সকাল ১০টায় মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের পাশাপাশি বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র সমাধিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করা হবে। বিকেল ৪টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বৈশ্বিক পটভূমিকায় বাঙালী জাতীয়তাবাদ ও জাতিরাষ্ট্র শীর্ষক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা প্রদান করবেন প্রাবন্ধিক, গবেষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মফিদুল হক। সভাপতিত্ব করবেন কথাসাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়া। স্মৃতিচারণে অংশ নেবেন একাডেমির প্রাক্তন মহাপরিচালক, সচিব ও পরিচালকবৃন্দ। সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করবেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। ইতিহাসের তথ্যসূত্রে, ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারী বাসভবন বর্ধমান হাউসে বাংলা একাডেমির পথচলা শুরু হয়। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পরবর্তী প্রেক্ষাপটে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, গবেষণা ও প্রচারের লক্ষে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে। প্রতিষ্ঠার ৬২ বছর পরও সে লক্ষে অবিচল রয়েছে বাংলা একাডেমি। বাংলা একাডেমির প্রথম সচিব ছিলেন মুহম্মদ বরকতুল্লাহ, তার পদবি ছিল বিশেষ কর্মকর্তা বা স্পেশাল অফিসার। প্রথম পরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহম্মদ এনামুল হক, প্রথম মহাপরিচালক ছিলেন অধ্যাপক মাযহারুল ইসলাম। একাডেমি থেকে প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ হলো আহমদ শরীফ সম্পাদিত দৌলত উজির বাহরাম খানের ‘লাইলী মজনু’। সেই থেকে আজ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার বই। চারটি বিভাগের মাধ্যমে বাংলা একাডেমি বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পাদন করছে। সেগুলো হলোÑ গবেষণা, সংকলন ও ফোকলোর বিভাগ; ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও পত্রিকা বিভাগ; পাঠ্যপুস্তক বিভাগ এবং প্রাতিষ্ঠানিক পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ বিভাগ। একাডেমি প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’র আয়োজন করে। সেই সঙ্গে প্রদান করে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, যা দেশের অন্যতম সম্মানের এক পুরস্কার হিসেবে বিবেচিত। এ ছাড়া রবীন্দ্র পুরস্কার, মযহারুল ইসলাম কবিতা পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার ও প্রবাসী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করে থাকে। এসবের পাশাপাশি বর্ধমান হাউসে ভাষা আন্দোলন জাদুঘর জাতীয় সাহিত্য ও লেখক জাদুঘর এবং লোকঐতিহ্য জাদুঘর পরিচালনা করে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া ভাস্কর নভেরা প্রদর্শনালয় নামে একটি গ্যালারিও রয়েছে একাডেমির অধীনে।
×