ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার মনোনয়ন বাতিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 খালেদার মনোনয়ন  বাতিল  উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ॥  রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াসহ দলের অন্যান্য নেতাদের মনোনয়নপত্র বাতিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এটি সরকারের নিখুত মাস্টারপ্ল্যানের অংশ। রবিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, নৌকাকে জালিয়াতির মাধ্যমে জয়ী করার জন্য বিএনপি নেতাদের মনোনয়নপত্র বাতিলের মধ্য দিয়ে সরকারের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দূরভিসন্ধিমূলক। তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য সরকার দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তফসিল ঘোষণার শুরু থেকেই নির্বাচনের পরিবেশের আরও অবনতি হয়েছে। নৌকার পক্ষে হালে পানি না পাওয়ায় বিএনপিসহ বিরোধী দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের শুধু মামলা দায়ের এবং গ্রেফতার করেই সরকারের সাধ মিটছে না এখন তাদের ভিটে-মাটিতে ঘুঘু চরাতে তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। রিজভী বলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক ও দিনাজপুরের পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন পদত্যাগ করে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তাদের পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি বলে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। রিজভী মনে করেন, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সরকার পরিকল্পনা করেছে, একতরফা নির্বাচন করবে, গায়ের জোরে নির্বাচন করবে এবং জোর করে ক্ষমতায় থাকবে। সেজন্য এসব মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, স্থানীয় সরকারের যিনি প্রধান তিনি যখনই পদত্যাগ করবেন সেটা গৃহীত হতে হবে। এটা আইন, এ আইন বরখেলাপ করে আপনারা তাদের মনোনয়ন বাতিল করছেন এর পরিণাম ভাল হবে না। অবিলম্বে তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করুন এবং মনোনয়নপত্র গ্রহণের ব্যবস্থা করুন। রিজভীর আরও অভিযোগ, সারাদেশে প্রার্থীসহ বেছে বেছে বিএনপির সক্রিয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। প্রার্থীসহ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের লোকেরা। আর নির্বাচন কমিশন হুকুমবরদার মাত্র। কমিশন সরকারের নির্দেশে কাজ করছে। দেশে বিরোধী দল শূন্য নির্বাচনী মাঠ তৈরি করতেই ঘৃণ্য অপকর্ম সাধন করা হচ্ছে। রিজভী মনে করেন, জনগণকে ভোট থেকে দূরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে ভোটের পরিবেশ বিনষ্ট করার পাঁয়তারা করছে। পুলিশসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সরকারী দলের অনাচারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার ঘটনা থেকেই মনে হয়- তারা ভোটারদের ভীতিগ্রস্ত করতে চায়। রিজভী বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কতিপয় কমিশনার সরকারের পক্ষে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন। নির্বাচন কমিশন, পুলিশ প্রশাসন, আইন-আদালত, বিচারিক প্রক্রিয়া সবকিছুর ওপরই সরকার যেন সিন্দাবাদের জীনের মতো সওয়ার হয়ে আছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় রিটার্নিং অফিসার বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পুলিশ কর্মকর্তারা সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন তারা আওয়ামী লীগের পক্ষে। অথচ এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন উদাস কবির মতো আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকল, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য কোন ব্যবস্থা নিল না। রিজভী বলেন, তফসিল ঘোষণার পর গাজীপুরের ওসি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে পোশাক পরে উপস্থিত হয়েছিলেন এবং তিনি সেখানে বক্তব্যও দিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশন এক্ষেত্রে কোন ব্যবস্থা নিয়েছে বলে কারও জানা নেই। তিনি অভিযোগ করেন, শনিবার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদারের নাটোরের বাড়িতে বৈঠক চলাকালে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। ফেনী-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী জয়নাল আবেদিনের বাসায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। তিনি অবিলম্বে এসব গ্রেফতার বন্ধ ও গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি করেন।
×