ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তিন মাস শুল্ক আরোপ নয়

প্রকাশিত: ০৪:১৭, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮

তিন মাস শুল্ক আরোপ নয়

মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চীনের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের আগে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৯০ দিন অপেক্ষা করতে সম্মত হয়েছেন। শনিবার আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এয়ার্সে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর দুই নেতা নতুন করে একে অপরের বিরুদ্ধে বাণিজ্য শুল্ক আরোপ না করতে রাজি হয়েছেন। ট্রাম্প ও শি জিনপিং ৯০ দিন বা আগামী তিন মাস নতুন করে বাণিজ্য শুল্ক আরোপ না করার বিষয়ে একমত হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে উভয় পক্ষ এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাবে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বাণিজ্যযুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার পর এই প্রথম দুই নেতা মুখোমুখি হলেন। জি-২০ সম্মেলনের আগে ট্রাম্প মার্কিন বলেছিলেন, তিনি চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত বাণিজ্য শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশে উন্নীত করতে পারেন এবং এটা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে। সেপ্টেম্বরে ২শ’ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র সারাহ স্যান্ডার্স বলেছেন, ‘উভয় দেশ নতুন করে বাণিজ্য শুল্ক আরোপ না করার বিষয়ে যে সম্মতি প্রকাশ করেছে তা ৯০ দিনের জন্য বহাল থাকবে। এ সময়ের মধ্যে চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কৃষি, জ্বালানি, শিল্প ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করবে।’ তবে চীন কি পরিমাণ কৃষিপণ্য আমদানি করবে তার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি। মার্কিন বাণিজ্য শুল্কের পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষিপণ্য বিশেষ করে সয়াবিন আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এর ফলে মার্কিন খামারিরা বিপাকে পড়েছেন। এদিকে চীন ১ জানুয়ারির পর থেকে মার্কিন পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করা থেকে বিরত থাকতে রাজি হয়েছে। চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত টিভি চ্যানেলে বলা হয়েছে, ১ জানুয়ারির পর উভয় দেশ নতুন করে পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে না। দুই পক্ষের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ট্রাম্প প্রশাসন জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ২৫০ বিলিয়ন ডলার চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। এর পাল্টা জবাব হিসেবে চীন ১১০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে। বুয়েনস এয়ার্সে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং য়ি বলেছেন, দুই নেতার বৈঠকের ফল নিয়ে বেজিং সন্তুষ্ট। তিনি এখন থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের কৃষিপণ্য আমদানি বাড়ানোর খবরটি নিশ্চিত করেন। সারাহ স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, ট্রাম্প-শি বৈঠকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক ফেন্টালিন রফতানি করতে রাজি হয়েছে। শুল্ক আরোপের প্রতিক্রিয়ায় চীন এই পণ্যটি যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করা বন্ধ করে দিয়েছিল। যারা অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে সেটি পাচার করেছে চীনের আইনে তাদের শাস্তি ছিল মৃত্যুদন্ড। হোয়াইট হাউসের দেয়া বিবৃতিতে আরও বলা হয় ট্রাম্প পূর্ব ঘোষণা মতো নতুন বছরে চীনা পণ্যের ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। কারণ এতে চীনের পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণের আশঙ্কা আছে। সব মিলিয়ে বিশ্ব বাণিজ্যের ওপর এটি খুবই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। সারাহ আরও বলেন, একই বিষয়ে বারংবার বিরোধ তৈরি হওয়া এড়াতে দুই নেতা খুব শীঘ্রই বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছেন। যার উদ্দেশ্য হবে দুদেশের মধ্যে সর্ম্পকে ‘কাঠামোগত পরিবর্তন’ আনা।
×