ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির নির্বাচন করা দুরূহ হয়ে যাচ্ছে ॥ মওদুদ

প্রকাশিত: ০৭:৫৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৮

বিএনপির নির্বাচন করা দুরূহ হয়ে যাচ্ছে ॥ মওদুদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রার্থীসহ দলীয় নেতাকর্মীকে গ্রেফতার বন্ধ, গ্রেফতারদের মুক্তি এবং সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনে পুনর্বিন্যাসের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শনিবার বিকেলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে এই দাবি জানায়। বৈঠক শেষে ব্যারিস্টার মওদুদ সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের সাজানো প্রশাসন বহাল রেখে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয় না। ভোটের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গ্রেফতার বন্ধে প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনে রদবদল করতে হবে। দেশব্যাপী পুলিশী অভিযান, গ্রেফতার চলছে। বর্তমান জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পুলিশ সুপার ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সরকারী লোক। পরিবেশ এমন দাঁড়িয়েছে যে বিএনপির নির্বাচন করা দুরূহ হয়ে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত তা প্রহসনের নির্বাচনে পরিণত হতে পারে। আমরা প্রহসনের নির্বাচন চাই না। জাতির জন্য এটা একেবারে শেষ সুযোগ। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হলে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা কঠিন হয়ে যাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সরকারের নীল নক্সা যেভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে তাতে ইসি কিছু করতে পারছে না। জামিন পাওয়া মুশকিল এখন, বিএনপির সাত সম্ভাব্য প্রার্থীকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সরকারের সাজানো প্রশাসনে রাজনৈতিক সরকারের অধীনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডও নেই। মওদুদ বলেন, সারাদেশে এমপি-মন্ত্রীরা পদত্যাগ না করে প্রার্থী হওয়ায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রয়েছে, এমন বলার ন্যূনতম সুযোগ নেই। প্রতিদিন রাতেরবেলায় অভিযানের নামে পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আটক করছে। পুলিশী হয়রানির কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। ’৯১, ’৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে নির্বাচনকালীন প্রশাসনের রদবদল করা হলেও এবার তা না করায় সরকারের অনুগত প্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। ডিসি-এসপি, ইউএনও ও ওসিদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু তারা সরকারের অনুগত বলেই তাদের এসব পদে সরকার নিয়োগ দিয়েছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তাদের স্বাভাবিক কারণেই বদলি করা হলে এতে করে জনগণের আস্থা ফিরে আসবে। তাদের মনে হবে, এবার বুঝি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। এই পরিবেশ যদি সৃষ্টি না হয়, তাহলে নির্বাচন একটি দুরূহ ব্যাপারে পরিণত হবে। এজন্য প্রয়োজন ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসিদের বদলি করা হলে কিছুটা হলেও পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এটা করা না হলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন প্রহসনে পরিণত হবে। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবিনামা সংবলিত চারটি চিঠিও এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এসব চিঠিতে গণগ্রেফতার বন্ধ, গ্রেফতারদের মুক্তি, পুলিশ ও জনপ্রশাসনে প্রত্যাহার এবং রদবদলের মাধ্যমে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল থেকে নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বাতিল, ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের নাম, পদবি ও র‌্যাংক ব্যাজ পরে দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করারও দাবি জানানো হয়। এছাড়াও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ও তার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ সংস্থা-জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদকে (জানিপপ) একাদশ সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষণের অনুমতি না দেয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
×