ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিজয়ের মাসে ‘লালজমিন’ নাটকের একাধিক মঞ্চায়ন

প্রকাশিত: ০৭:৩০, ২ ডিসেম্বর ২০১৮

বিজয়ের মাসে ‘লালজমিন’ নাটকের একাধিক মঞ্চায়ন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শুরু হয়েছে বিজয়ের মাস ডিসেম্বর। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করার দৃঢ় প্রত্যয়ে দেশ-বিদেশের মঞ্চ পরিভ্রমণের ধারাবাহিকতায় এই বিজয়ের মাসে শূন্যন রেপার্টারি থিয়েটার তাদের ‘লালজমিন’ নাটকের ৮টি প্রদর্শনী করবে। এর মধ্যে গতকাল ১ ডিসেম্বর নরসিংদীর শিশু একাডেমির নতুন ভবন মিলনায়তনে ‘লালজমিন’ নাটকের ১৭৫তম প্রদর্শনী হয়। এছাড়া আগামীকাল ৩ ডিসেম্বর ফরিদপুরে নাটকটির ১৭৬তম, ৪ ডিসেম্বর রাজবাড়ীতে ১৭৭তম, ১১ ডিসেম্বর রংপুর ১৭৮তম, ১২ ডিসেম্বর রংপুরে ১৭৯তম, ২৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৮০তম, ২৬ ডিসেম্বর কলকাতার সোনারপুরে ১৮১তম এবং আগামী ২৮ ডিসেম্বর কলকাতায় ‘লালজমিন’ নাটকের ১৮২তম মঞ্চায়ন হবে বলে জানা গেছে। মান্নান হিরা রচিত ‘লালজমিন’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন সুদীপ চক্রবর্তী। আর নাটকে একক অভিনয় করেন বাংলাদেশের মঞ্চ নাটকের সু অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী। নাটকের পোশাক পরিকল্পনা করেছেন ওয়াহিদা মল্লিক। সঙ্গীত পরিকল্পনায় জুলফিকার চঞ্চল ও রামিজ রাজু। সঙ্গীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বারী সিদ্দিকী, রামিজ রাজু ও নীলা সাহা। মঞ্চায়নের নেপথ্য কারিগররা হলেন আতিকুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, মীর্জা শাকিব, মোসাম্মৎ মমতাজ, জুয়েল মিজি, তানভীর সানি ও নিথর মাহবুব। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক মঞ্চনাটক ‘লালজমিন’ সম্প্রতি বেশ আলোচনায় এসেছে। শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রযোজনা ‘লালজমিন’ অনন্য একটি প্রযোজনা। বলা যায় ‘লালজমিন’ নাটকটির গল্প মুক্তিযুদ্ধের একটি খ- চিত্রের বয়ান। মহান মুক্তিযুদ্ধে একজন কিশোরীর অংশগ্রহণ, গল্পের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের ভয়াবহতা, মেয়েটির ত্যাগ-সবশেষে স্বাধীনতা অর্জন দর্শকদের এক নতুন অভিজ্ঞতার সম্মুখে দাঁড় করিয়ে দেয় ‘লালজমিন’। শুধু তাই নয় ‘লালজমিন’ কিশোরীর রক্তরাঙা অভিজ্ঞতার মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্য প্রকাশ। ‘লালজমিন’ নাটকের গল্প তেরো পেরিয়ে চৌদ্দ বছর ছুঁই ছুঁই এক কিশোরী কন্যার। কিশোরীর দু’চোখ জুড়ে মানিক বিলের আটক লাল পদ্মের জন্য প্রেম। সে কৈশোরেই শোনে বাবা-মায়ের মধ্যরাতের গুঞ্জন। শুধু দুটি শব্দ কিশোরীর মস্তকে আর মনে জেগে রয়, মুক্তি-স্বাধীনতা। ওই বয়সে কিশোরী এক ছায়ার কাছ থেকে প্রেম পায়। বাবা যুদ্ধে চলে যায়। অগোচরে কিশোরী নানা কৌশলে যুদ্ধে যাওয়ার আয়োজন করে, সশস্ত্র যুদ্ধ। কিন্তু বয়স তাকে অনুমোদন দেয় না। এক পর্যায়ে কিশোরীর সেই ছায়া প্রেম সম্মুখে দাঁড়ায়। সে তার সেনাপতিকে চিনতে পারে। তারপর যুদ্ধ যাত্রা। লক্ষ্যে পৌঁছবার আগেই পুরুষ যোদ্ধারা কেউ শহীদ হোন, কেউ নদীর জলে হারিয়ে যান। পাঁচ যুবতীসহ যুদ্ধযাত্রী এই কিশোরীর জীবনে ঘটে নানা অভিজ্ঞতা। চৌদ্দ বছরের কিশোরীর ধবধবে সাদাজমিন যুদ্ধকালীন নয় মাসে রক্তরাঙা হয়ে ওঠে। ‘লালজমিন’ কিশোরীর রক্তরাঙা অভিজ্ঞতার মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধোত্তর এক নারীর সংগ্রামী জীবনের নাট্য প্রকাশ। নাটকে দেশের বরেণ্য নাট্যাভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরীর প্রাণবন্ত অভিনয় নিমিষেই দর্শকদের আকৃষ্ট করে। চরিত্রানুযায়ী কণ্ঠের সূক্ষ্ম কাজ যেমন দেখান তেমনি নাচ এবং কোরিওগ্রাফিতে নিজেকে মিলিয়ে দেন গল্পের বুনুনিতে। নাটকের পোশাক সেট আলো সবই যেন মোমেনা চৌধুরীকে নিয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়ে। মঞ্চে মোমেনা চৌধুরী যেন হয়ে ওঠেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম দলিল। প্রসঙ্গত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটম-লে ২০১১ সালের ১৯ মে শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের প্রথম প্রযোজনা ‘লালজমিন’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন হয়। এছাড়া সম্প্রতি মহিলা সমিতি মিলনায়তনে নাটকটির ১৭৪তম মঞ্চায়ন হয়।
×