ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনের আয়োজন করতে হয় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ॥ ইসি রফিকুল

প্রকাশিত: ০৬:১১, ২ ডিসেম্বর ২০১৮

নির্বাচনের আয়োজন করতে হয় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ॥ ইসি রফিকুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নির্বাচন মানেই কিন্তু একদিন। শিডিউলে ৪৬/৪৫ দিন বা যত দিনই থাকুক না কেন, নির্বাচন মানে একদিন, মানে সেই নির্বাচনের দিন। এই নির্বাচনের দিন কী হলো, এটা যদি ঠিক না হয়, এটা যদি আইনানুগ না হয়, তাহলে পরে কিন্তু কমিশনসহ সবাই প্রশ্নবিদ্ধ হব। নির্বাচনের পরিকল্পনা সাজায় নির্বাচন কমিশন ও ইসি সচিবালয়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে নির্বাচনের আয়োজনটা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদেরই করতে হয়। কমিশনের মান, সম্মান, ইজ্জত আপনাদের হাতে ন্যস্ত। নির্বাচনের সব দায়িত্ব আপনারা পালন করবেন। শনিবার নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের প্রশিক্ষকদের নিয়ে আয়োজিত এক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এমনই মন্তব্য করেন ইসি মোঃ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে নির্বাচন করেন নির্বাচন কর্মকর্তারা। আমাদের মান-সম্মান-ইজ্জত আপনাদের হাতে ন্যস্ত। নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে গোপনকক্ষে ভোট দেয়ার যে বিধান রয়েছে, তা যেন কেউ অমান্য না করে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দিতে হবে। যদি আপনারা কাউকে ব্যালটটা দিয়ে দিলেন, গোপন কক্ষে না গিয়ে সে প্রকাশ্যে ভোট দিল। সে বলতেই পারে, তার ভোট সে দেবে- প্রকাশ্যে দিক আর গোপনে দিক। এটা আপনারা করতে দেবেন না। প্রশিক্ষণার্থীদেরও বলে দেবেন, এ ধরনের কর্মকা- বেআইনী, এটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ভোটারকে শনাক্ত করে তবেই তার হাতে ব্যালট দিতে হবে। যতক্ষণ না আপনি নিশ্চিত হচ্ছেন ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে ভোট দেয়ার জন্য ব্যালট পেপার ইস্যু করবেন না উল্লেখ করেন। বলেন, ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন কিনা- সেই সংশয়ের কথা পত্রিকার খবরে ঘুরেফিরে আসছে। আশঙ্কার কথা যদি বার বার বলা হয় ভোট দিতে পারবেন কিনা, এই বিষয়টা আপনাদের ওপর নির্ভর করে। যদি ব্যালটটাকে ঠিকমতো সংরক্ষণ করেন, কেন্দ্রটিকে ঠিকমতো তৈরি করেন, আপনার দায়িত্ব এবং আপনি যাদের ট্রেনিং দেবেন, তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, ছবিসহ ভোটার তালিকা আছে তা যদি আইডেন্টিফিকেশন হয়, আপনারা কাউকে জোর করে বের করে না দিয়ে এজেন্টদের ঠিকমতো রাখেন, তাহলে কোনক্রমেই একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারবে না। প্রত্যেক ভোটাধিকার কেন্দ্রের ভেতর নিশ্চিত করতে হবে। দায়িত্ব কিন্তু এটুকুই। রফিকুল ইসলাম একজন ভোটারের ভোট বেআইনীভাবে অন্য কেউ দিয়ে দিলেও তার যে ভোট দেয়ার বিধান আইনে আছে সে কথাও মনে করিয়ে দেন। কোন ভোটার যদি সত্যিকারের ভোটার হয়ে থাকেন, তার ভোট অন্য কেউ দিয়ে থাকলে তাকে কোন প্রশ্ন ছাড়াই ভোট দিতে দিন। তিনি নির্বাচন কর্মকর্তাদের আশ্বস্ত করে বলেন, আপনাদের নিরাপত্তার জন্য সবাই থাকবেন। নির্বাচনে একেবারে চৌকিদার থেকে সেনাবাহিনী সবাই থাকবেন। আপনাদের জীবন নিয়ে শঙ্কার কোন কারণ নেই। ভোটার যাতে কেন্দ্রে যেতে পারে তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের। ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত নির্বাচনী কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা দেয়াও তাদের দায়িত্ব। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষার পরামর্শ দেন তিনি। আপনার অনুমতি ছাড়া তারা যেন কোথাও যেতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। মালামাল, ব্যালট সবকিছু দেখে গ্রহণ করবেন। এমনও তো হতে পারেÑ সেখানে ব্যালটের পরিবর্তে সাদা কাগজ চলে গেল। সেজন্য সবকিছু আপনারা বুঝে নেবেন। এগুলো আপনাদের দায়িত্বে থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা কারও কাছে এগুলো রেখে কোথাও যাবেন না। তারাও ব্যালটের অপব্যবহার করতে পারে। সর্বক্ষণ এগুলোর সঙ্গে। ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, দিনাজপুর, রাঙামাটি, নওগাঁ, সুনামগঞ্জ ও বান্দরবান জেলার ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবেন এমন চার শতাধিক প্রশিক্ষককে নিয়ে শনি ও রবিবার দু’দিনব্যাপী আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই কর্মশালা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ, ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য দেন।
×