ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ড. কামাল, কাদের সিদ্দিকী, আ স ম রবের প্রতি নাসিমের আহ্বান

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২ ডিসেম্বর ২০১৮

ড. কামাল, কাদের সিদ্দিকী, আ স ম রবের প্রতি নাসিমের আহ্বান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বঙ্গবন্ধুতে বিশ্বাসী এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ হিসেবে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গ ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছে ফিরে আসতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এবং আ স ম আবদুর রবের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার বিকেলে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক বিশাল মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। পয়লা ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস ঘোষণার দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে মুক্তিযোদ্ধারা মিছিল সহকারে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনে যান। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা শপথ গ্রহণ করেন। আগামী নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ, ১৪ দল ও মহাজোটের প্রার্থীদের বিজয়ী করার শপথ গ্রহণ করেন তারা। ‘রাজাকারমুক্ত সংসদ চাই’, ‘তরুণের প্রথম ভোট, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের হোক’ এমন সেøাগানও ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে। মোহাম্মদ নাসিম ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশ্যে করে মোহাম্মদ আরও বলেন, বিএনপির চরিত্র এখনো পরিবর্তন হয়নি। এ কারণে তারা চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান-স্বজনের মনোনয়ন দিয়েছে। তাই এখনও সময় আছে বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের শক্তির পক্ষে আসুন। কী কারণে আপনারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট করেছেন? শুধুমাত্র এমপি হওয়ার জন্য? আপনারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলেন, বঙ্গবন্ধুর কথা বলেন, নিজেরাও মুক্তিযুদ্ধ করেছেন, তাই আপনাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কাছে ফিরে আসার আহ্বান জানাব। একটা এমপি হওয়ার জন্য আদর্শের সঙ্গে বেইমানি করবেন না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে চক্রান্ত করে কোন লাভ হবে না। কেউই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। আগামী নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত চক্রকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করবে দেশের জনগণ। তিনি বলেন, এখন সবার ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সব জেলা-উপজেলায় বিজয় মঞ্চ করা হবে। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের গান, কবিতা আবৃত্তি এবং আওয়ামী লীগ, ১৪ দল ও মহাজোটের সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়া হবে। বিজয়ের মাসে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন হবেই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে গ্রাম-গঞ্জে, পাড়া-মহল্লায় গিয়ে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। শেখ হাসিনাকে বিজয়ী করতে হবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশ এগিয়ে যাবেই। ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না। বিজয়ের মাসে কেউ ফাউল করলে জনগণ তাদের লাল কার্ড দেখিয়ে দেবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে। কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য ভোট কেন্দ্রে পাহারায় থাকবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিরা। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলেছিল, শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে আসবে না। এখন বিএনপি-জামায়াত নাকে খত দিয়ে নির্বাচন করছে। এখন বলছেন আওয়ামী লীগ পরাজিত হবে! তাদের বলে রাখতে চাই আওয়ামী লীগ কখনও পরাজিত হয় না। এবার ভোটের বিপ্লব হবে, ইনশালাহ। এমন বিপ্লব করব বিএনপিকে বাটি চালান দিয়েও খুঁজেও পাওয়া যাবে না!’ বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, নির্বাচনের মাঠ থেকে পালাবেন না। মাঠে খেলা হবে। মেসি-নেইমার গোল মিস করতে পারেন, কিন্তু শেখ হাসিনা গোল মিস করেন না। এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী নৌকার পক্ষে সেøাগান দেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সমাজ কল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি কামাল হোসেনকে সামনে রেখে দাড়িপাল্লা ধানের শীষে তুলে দিয়েছে। বিজয়ের মাসে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে চিহ্নিত জামায়াত-যুদ্ধাপরাধীদের সন্তান-স্বজনদের হাতে ধানের শীষ তুলে দেয়ার অর্থ হলো, ষড়যন্ত্র এখনো থামেনি। এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে পালনের দাবি জানিয়ে সমাবেশের সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, জাতীয় সংসদকে রাজাকারমুক্ত রাখতে সবার ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা যাবে না। অথচ বিএনপি রাজাকারদের সন্তান-স্বজনদের এবার মনোনয়ন দিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বহু দিবস আছে। এমনকি হাতধোয়া দিবস পর্যন্ত আছে। পহেলা ডিসেম্বর আমরা মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালন করার জন্য বহু বছর ধরে বলে আসছি। ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন আমাদের স্মরণ করতে পারে, এ জন্য ১ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধা দিবস পালনের জন্য আমরা বারবার বলে আসছি। স্বাধীনতার ৪৬ বছর পরে প্রধানমন্ত্রী ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। আমরা তা সংসদে পাস করেছিলাম। এখন আমরা জাতীয়ভাবে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন করি। সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক মন্ত্রী শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াসহ অন্য নেতারা বক্তব্য রাখেন। হুমকিধমকি দিয়ে জনগণের মন জয় করা যাবে না ॥ অহেতুক হুমকিধমকি থেকে বিরত থাকার জন্য বিএনপি নেতাদের আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবার ক্ষমতায় আসবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট দু’শতাধিক আসনে বিজয়ী হবে। অনেক আগেই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিএনপি। শনিবার বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সরকারের জাতীয় এইডস/ এসডিটি কর্মসূচী আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
×