ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সংবাদ সম্মেলনে ও. কাদের

মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকা বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাবে

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ২ ডিসেম্বর ২০১৮

মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকা বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নির্বাচন নিয়ে সব শঙ্কা কেটে যেতে শুরু করেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেশের জনগণ উৎসবমুখর ও অনুকূল পরিবেশে যাকে খুশি ভোট দেবে। আমাদের বিশ্বাস আছে, দেশের জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনের পক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট দেবে। এখন সারাদেশে নৌকার পক্ষে গণজোয়ারের সৃষ্টি হয়েছে। এটা আরও বেগবান হবে। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকা বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাবে। শনিবার রাজধানীর ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি ক্রমেই উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বে বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব কিন্তু অটুট রয়েছে। তবে উন্নত গণতান্ত্রিক বিশ্বে তারা (বিএনপি) ক্রমেই বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে। অন্যায় ও অসত্যের সঙ্গে কেউ থাকে না দাবি করে তিনি বলেন, তারা অনেক দেশে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। কই আমরা তো লাখ লাখ ডলার দিয়ে লবিস্ট নিয়োগ করতে যাইনি। তারা (বিএনপি-জামায়াত) লাখ লাখ ডলার খরচ করেও মার্কিনীদের সাড়া পাচ্ছে না, অন্যায় ও অসত্যের সঙ্গে কেউ থাকে না। তারা অগণতান্ত্রিক আচরণ করতে থাকবে আর অন্যরা (বিদেশী রাষ্ট্র) সমর্থন করতে থাকবে- এটা হয় না। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কি আমাদের কথায় চলে? শেখ হাসিনা সরকারের আন্ডারে নাকি তারা? ওদের নিজস্ব সত্তা আছে। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কার পক্ষে থাকবে, আর কার পক্ষে থাকবে না- এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়াশিংটনের ব্যাপার। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের জাতিসংঘ সফরের প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি তো জাতিংঘে গিয়েছিলেন। এত দেন-দরবার করেও সাড়া পাচ্ছেন না, এটা তাদেরই জবাব দিতে হবে। আমাদের এখানে বলার কিছু নেই। জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনের ওপর সরকার কোন পদক্ষেপ নেবে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতের সম্পর্কটা একেবারেই নীতি-আদর্শের ব্যাপার। আমরা জাতীয় পার্টির সঙ্গে স্টেটেজিক্যাল এলায়েন্স করেছি। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের স্টেটেজিক্যাল এলায়েন্স না। তাদেরটা একেবারেই আদর্শিক জোট। বিএনপি সভা-সমাবেশ ডাকলে ওটার মূল হয়ে যায় জামায়াত। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি এখন সরকারের এখতিয়ারে নেই। নির্বাচনের ২৮ দিন বাকি, এই সময় সামনে রেখে আদালত এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনে কি এলো সেটা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। তবে আমরা দেখব এ ব্যাপারে দেশের জনগণ কি বলে। নির্বাচন নিয়ে যারা শঙ্কাবোধ করছেন তাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, এবারের নির্বাচন ভাল নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে সব শঙ্কা কেটে যেতে শুরু করেছে। অনুকূল পরিবেশে জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। বিএনপি শুরুতেই নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করার হীন প্রয়াস চালিয়েছিল। এখন সে অবস্থা নেই। তা কাটিয়ে সারাদেশে নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। তবে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা বিএনপির পুরনো অভ্যাস। ভোটের ফলাফলের আগ পর্যন্ত তারা নানা অভিযোগ করেই যাবে। তারা তাদের অভিযোগগুলো আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছে। তবে তাদের অভিযোগ নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই। তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট হলে আমাদেরই সবচেয়ে ক্ষতি হবে। কারণ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে আমরা বিজয়ী হব তা নিশ্চিত। তাহলে আমরা কেন নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে যাব? বিএনপি বুঝতে পেরেছে তারা আগামী নির্বাচনে হেরে যাবে। তাদের জয়ের কোন আশা নেই। তাই তাদের নালিশ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তারা বলছে আগামী নির্বাচনে ভোট বিপ্লব হবে। ভোট বিপ্লব হবে এটা সত্য, তবে এই ভোট বিপ্লব হবে জগাখিচুড়ির জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×