ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রথমবার পেসার ছাড়া বাংলাদেশ

চার হাজারী ক্লাবে মুশফিক

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

  চার হাজারী ক্লাবে মুশফিক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ একের পর এক মাইলফলক ছোঁয়া যেন তার অভ্যাসেই পরিণত হয়েছে। কিছুদিন আগেই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করার পথে দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংসের মালিক হয়েছেন এবং আরও কিছু রেকর্ডে ঘটিয়েছেন পরিবর্তন। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে শুক্রবার প্রথমদিন মাত্র ১৪ রানের ইনিংস খেলেছেন মুশফিকুর রহীম। আঙ্গুলের ইনজুরির কারণে শতভাগ ফিট না হয়েও খেলতে নেমে এই রান করেই তিনি নতুন এক মাইলফলক ছুঁয়েছেন। তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে টেস্টে ৪ হাজার রান পূর্ণ করেছেন তিনি। চট্টগ্রাম টেস্টে সফরকারীদের ৪ স্পিনার দিয়ে ঘায়েল করেছিল বাংলাদেশ দল। তবে একজন পেসার ছিলেন স্কোয়াডে। এবার প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টাইগাররা যে একাদশ সাজিয়েছে তাতে ৪ স্পিনার থাকলেও নেই কোন স্বীকৃত পেসার। প্রথমবার পেসারহীন একাদশে কোন ম্যাচ খেলতে নেমেছে বাংলাদেশ দল। সিরিজের প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল দুর্বলতাটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের চার স্পিনার সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও অভিষিক্ত নাঈম হাসানের ঘূর্ণিবিষে নীল হয়ে পর্যুদস্তু হয়েছে তারা। ওই ম্যাচে একমাত্র পেসার হিসেবে খেলা বাঁহাতি মুস্তাফিজুর রহমান দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ৪ ওভার বোলিং করার সুযোগ পেয়েছেন। কারণ স্পিনাররা ছিলেন দুর্ধর্ষ এবং উইকেট তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে ভয়ানক। সে কারণেই মিরপুর টেস্টে আলোচনা চলছিল স্পিনবান্ধব উইকেটে একজন বিশেষজ্ঞ পেসারের যদি বোলিংয়ে কোন অবদানই না থাকে তাহলে একাদশে থাকারই কী দরকার? অবশেষে সেটাই সত্য হয়েছে মিরপুর টেস্টের একাদশ নামার পর। চট্টগ্রাম টেস্টে খেলা ৪ স্পিনার থাকলেও এবার নেই কোন স্বীকৃত পেসার। ওপেনার সৌম্য সরকার অনিয়মিত মিডিয়াম পেস করেন, হয়তো কিছু ওভার তাকে দিয়ে করিয়েই চালিয়ে নেবে বাংলাদেশ দল। এর আগে এমন একাদশ কখনও করেনি টাইগাররা। এই প্রথম পেসারবিহীন একটি একাদশ নিয়ে প্রতিপক্ষের মোকাবেলায় নেমে বিরল এক নজিরই গড়েছে স্বাগতিকরা। নিজেদের ১১২তম টেস্টে এই নজির গড়ল বাংলাদেশ। এছাড়া একাদশে ৪ স্পিনার নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো নেমে টেস্ট ইতিহাসেই নতুন এক রেকর্ডের জন্ম দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ইতিহাসে একবারই ৪ স্পিনারের একাদশ দেখা গেছে। ১৯৬৭ সালে এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের একাদশে ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার বিষেণ সিং বেদি, লেগস্পিনার ভগবত চন্দ্রশেখর, অফস্পিনার এরাপল্লি প্রসন্ন ও অফস্পিনার শ্রীনিবাস ভেঙ্কটরাঘবন। তবে বাংলাদেশ দল চার স্পিনার নিয়ে খেলার রেকর্ড গড়লো দুইবার ঘটনাটি ঘটিয়ে। আর এবার তার সঙ্গে ছিল পেসারহীন একাদশের বিরল ব্যাপার। মিরপুরের এই টেস্টে মুশফিক খেলবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল। কারণ আঙ্গুলে চোট পেয়েছিলেন। সে কারণে তার বিকল্প হিসেবে লিটন দাসকেও শেষ মুহূর্তে দলে টানা হয়। ৪ হাজার টেস্ট রানের চেয়ে মাত্র ৮ রান দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মুশফিক শেষ পর্যন্ত পুরোপুরি ফিট না হয়েও নেমেছেন এবং দ্বিতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ৪ হাজার রান পেরিয়ে গেছেন। চা বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারে দেবেন্দ্র বিশুর বলে পয়েন্টে ঠেলে এক রান নিয়ে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন। তামিম ইকবাল ৫৬ টেস্টে করেছেন ৪০৪৯। তাকেও ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল, কিন্তু ১৪ রানে আউট হওয়াতে এখনও তারচেয়ে ৪৩ রান পিছিয়ে মুশফিক দুই নম্বরে। তামিম ১০৬ ইনিংসে ৪ হাজার ছুঁয়েছিলেন, মুশফিকের অবশ্য ১২৩ ইনিংস লেগেছে। ৬৬ টেস্টে এখন তার রান ৩৫.১৪ গড়ে ৪০০৬। ২০০৫ সালে ১৭ বছর বয়সে লর্ডসে টেস্ট অভিষেক মুশফিকের। ক্যারিয়ারে বেশ কয়েকবার উত্থান-পতন পেরিয়ে হাজার রানের দেখা পেতে লেগে যায় প্রায় ৫ বছর। ২০১০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে ১ হাজার স্পর্শ করেন ৪০তম ইনিংসে। ২ হাজার রান করতে লেগেছিল ৬৭ ইনিংস, ৩ হাজার করতে ৯৫ ইনিংস।
×