ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সব দলের ইশতেহারে মদিনা সনদ উল্লেখ করার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

সব দলের ইশতেহারে মদিনা সনদ উল্লেখ করার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়া দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে মদিনা সনদের কথা উল্লেখ করার আহ্বান জানিয়েছেন শোলাকিয়া ঈদগাহের গ্র্যান্ড ইমাম আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। একই সঙ্গে তিনি তবলীগ জামাতে একটি শ্রেণীর বিতর্কিত আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, মাওলানা সাদ কান্ধলভী আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত থেকে খারিজ হয়ে গেছেন বা তিনি কাফের হয়ে গেছেন বলে কোন ফতওয়া দেয়নি দারুল উলুম দেওবন্দ। বাংলাদেশ জমিয়তুল উলামার চেয়ারম্যান শাইখুল হাদীস ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখনই কোন ওয়াদা করেন তখন তা পালন করেন। কওমি মাদ্রাসা সনদের স্বীকৃতি দেয়ার ওয়াদা প্রধানমন্ত্রী করেছিলেন, সেই ওয়াদা তিনি রক্ষা করেছেন। এ জন্য সারাদেশের আলেম সমাজ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। শুক্রবার রাজধানীর খিলগাঁও ইকরা মসজিদ কমপ্লেক্সে জুমার আগে আলেম উলামা ও সাধারণ মুসল্লিদের সামনে এসব কথা বলেন আল্লামা মাসঊদ। দেশের মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন ও সাধারণ আলেমদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করার দাবি করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের মানবিক কারণে সরকারী ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। আলেম ওলামারাও অভাব অনটনের মধ্যে বেঁচে থাকেন। তাই তাদের সরকারী ভাতার আওতায় আনা দরকার। এসময় তিনি কথা বলেন তবলীগ জামাতের চলমান সমস্যা নিয়ে। মাওলানা সাদ কান্ধলভী বলেন, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত থেকে খারিজ হয়ে গেছেন বা তিনি কাফের হয়ে গেছেন বলে ফতওয়া দেয়নি দারুল উলুম দেওবন্দ। দেওবন্দ মাওলানা সাদকে সতর্ক করে বলেছে, তোমার বক্তব্যে অনেক ভুল আছে, তুমি ওই ভুলগুলো থেকে রুজু করবে এবং এই এসব বিষয়ে সতর্ক থাকবে। ভারতের উত্তর প্রদেশের প্রখ্যাত ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ভালবাসে। দেওবন্দ মাওলানা সাদরে বিরুদ্ধে কোন ফতওয়া দেয়নি বরং তাকে সতর্ক করেছে। দাওয়াতের ক্ষেত্রে মাওলানা সাদ কান্ধলভী মাগলুবুল হাল উল্লেখ করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, মানসুর হাল্লাজ যেমন মারিফতের ক্ষেত্রে মাগলুবুল হাল ছিলেন মাওলানা সাদ কান্ধলভী তেমনিভাবে দাওয়াতের ক্ষেত্রে মাগলুবুল হাল ছিলেন। আর যারা মাগলুবুল হাল হয় তাদের কিছু ভুলত্রুটি হয়ে থাকে। যেমন মানসুর হাল্লাজ ‘আনাল হক, আনাল্লাহ’ বলেছেন। শরীয়তে ইতাআতী-ওজাহাতী বলে কোন পরিভাষা নেই উল্লেখ করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, আমরা এখন ইতাআতী-ওজাহাতীর হাল অতিক্রম করছি। তবে শরীয়তে ইতাআতী-ওজাহাতী বলে কোন ইস্তেলাহ নেই, এই দুটা শব্দই বিদআত। সাহাবায়ে কেরাম দাওয়াতের ক্ষেত্রে অনেক বিপদ-আপদের সম্মুখীন হয়েছেন, কিন্তু তারা তো দলে দলে বিভক্ত হয়ে যাননি। কিন্তু আমরা ইতাআতী-ওজাহাতীতে বিভক্ত হয়ে গেছি। সাহাবায়ে কেরামদের আদর্শ অনুসরণ করিনি। দাওয়াতে ক্ষেত্রে বিপদে-আপদে তারা কি করেছেন সেগুলো লক্ষ্য করিনি। বাংলাদেশের অধিকাংশ উলামায়ে কেরামই প্রকৃত আলেম ও ওয়ারিসে নবী নয় উল্লেখ করে আল্লামা মাসঊদ বলেন, প্রকৃত আলেম ও ওয়ারিসে নবী হওয়ার জন্য শর্ত তিনটি। ১. ইলম। ২. মারিফতে ইলাহী। ৩. আমল ও তাকওয়া। এই তিনটির কোন একটি যদি কোন মাওলানার মধ্যে না পাওয়া যায়, তাহলে তাকে প্রকৃত আলেম ও ওয়ারিসে নবী বলা যাবে না। কারণ এই তিনটি একসঙ্গে খুব কম সংখ্যক মাওলানার মাঝে পাওয়া যায়।
×