ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গানে গানে গুণীজন সংবর্ধনা পেলেন আলাউদ্দীন আলী

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

  গানে গানে গুণীজন সংবর্ধনা পেলেন আলাউদ্দীন  আলী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়, ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’ কিংবা ‘ও আমার বাংলা মা’সহ অজস্র কালোত্তীর্ণ গানের সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী। গীতিকবি হিসেবেও লিখেছেন অনেক জনপ্রিয় গান। আপন সৃষ্টির স্বীকৃতিস্বরূপ গানে গানে গুণীজন সংবর্ধনায় ভূষিত হলেন খ্যাতিমান এই সঙ্গীতজ্ঞ। সিটিব্যাংক এনএ প্রবর্তিত এ সম্মাননার ১৬তম আসরে তাকে সম্মানিত করা হলো। শুক্রবার সন্ধ্যায় র‌্যাডিসন ব্লু হোটেলে এ সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আলাউদ্দীন আলীর হাতে সম্মাননা স্মারক, পোর্ট্রেট ও সম্মানীর চেক তুলে দেন সিটিব্যাংক এনএ’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এন রাজাশেকারান (শেখর), চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। আলাউদ্দীন আলীকে নিয়ে কথা বলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, কণ্ঠশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিটিব্যাংক এনএ’র অন্যতম পরিচালক ও বিনিয়োগ ব্যাংকিং প্রধান শামস জামান। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে আলাউদ্দীন আলী বলেন, সম্মাননা পেয়ে আমি অভিভূত। কারণ অনেকেই শিল্পীকে সম্মাননা দিলেও সেটার সঙ্গে সম্মানী দেন না। সিটিব্যাংক দিয়েছে। অনেক শিল্পী আছেন যারা সামান্য আর্থিক সহযোগিতা না পেয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকেও আলিঙ্গন করেন। শিল্পীদের এ বিষয়গুলো নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে। কারণ একটি দেশ কতটা উন্নতি করছে তার অন্যতম নির্ণয়ক হচ্ছে শিল্প-সংস্কৃতির সামগ্রিক অবস্থা। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, আমার বিটিভির সময়কালে আলাউদ্দীন আলী যে সকল সৃষ্টি উপহার দিয়েছেন সেগুলো অনন্য। পৃথিবী তাকে মনে রাখবে। সৈয়দ আবদুল হাদী বলেন, সত্তরের দশকে বাংলা চলচ্চিত্রের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন আমজাদ হোসেনসহ আরও কয়েকজন গুণী পরিচালক। আর সেই চলচ্চিত্রগুলোতে অসাধারণ সব গানের সৃষ্টি করেছেন আলাউদ্দীন আলী। আয়োজনের শেষে ছিল সঙ্গীতানুষ্ঠান। যার শুরুতেই আলাউদ্দীন আলীর সুর, সঙ্গীতে ‘কেউ কোনদিন আমারেতো কথা দিলো না’ গানটি পরিবেশন করেন সৈয়দ আবদুল হাদী। এরপর তিনি গেয়ে শোনান আরেক জনপ্রিয় গান ‘চোখের নজর এমনি কইরা’। এ পর্যায়ে সৈয়দ আবদুল হাদী দর্শকদের উদ্দেশ করে বলেন, আলাউদ্দীন আলী খুব ভাল গাইতেও পারেন, আপনারা শুনবেন? আলাউদ্দীন আলীও দেরি না করে হারমোনিয়ামে সুর তুলে ‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’ গানটির মুখের কয়েকটি লাইন গেয়ে শোনান। এরপর বাকি অংশ গেয়ে শোনান সৈয়দ আবদুল হাদী। এরপর মঞ্চে আসেন ফারজানা আলী। তিনি একে একে গেয়ে শোনান ‘ও আমার বাংলা মা তোর’, ‘আমি আছি থাকবো’। শিল্পী আরিফকে নিয়ে ফারাজানা আলী দ্বৈতকণ্ঠে গেয়ে শোনান ‘তুমি শুধু ভালোবাসা দিও’সহ বেশ কিছু গান। শিল্পীদ্বয় আরও গেয়ে শোনান ‘বন্ধু তিনদিন তোর বাড়িত গেলাম দেখা পাইলাম না’, ‘সুখে থাকো ও আমার নন্দিনী’ গানগুলো। ২০০৪ সাল থেকে নিয়মিতভাবে আয়োজিত হয়ে আসছে এ গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। বিগত বছরগুলোতে এ সংবর্ধনা পেয়েছেন নিলুফার ইয়াসমিন, ফরিদা পারভীন, প্রয়াত ফিরোজা বেগম, সন্্জীদা খাতুন, প্রয়াত সোহরাব হোসেন, ফেরদৌসী রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সুবীর নন্দী, শাহনাজ রহমতউল্লাহ, সৈয়দ আবদুল হাদী, রুনা লায়লা, মিতালী মুখার্জী ও ফেরদৌস ওয়াহিদের মতো গুণী শিল্পীরা।
×