ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সা’দ-জোবায়ের গ্রুপ মারমুখী, টঙ্গীতে জোড় এজতেমা পন্ড

প্রকাশিত: ০৪:৪৮, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

 সা’দ-জোবায়ের গ্রুপ মারমুখী, টঙ্গীতে জোড় এজতেমা পন্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী, ৩০ নবেম্বর ॥ সা’দ-জোবায়ের গ্রুপের মারমুখী অবস্থানের কারণে শুক্রবার থেকে টঙ্গীর বিশ্ব এজতেমা ময়দানে তবলীগ জামাতের যে জোড় এজতেমা শুরু হওয়ার কথা ছিল তা এক পক্ষের বাধার কারণে পন্ড হয়ে গেছে। পুরো এজতেমা ময়দান এখন জোবায়ের দেওবন্দ কওমিপন্থীদের দখলে। সা’দপন্থীরা ৩০ নবেম্বর শুক্রবার থেকে ৫ দিনব্যাপী জোড় এজতেমার ডাক দিলে জোবায়েরপন্থীরা এর বিরোধিতা করে জোড় এজতেমা প্রতিহতের ডাক দেয়। এ পর্যায়ে দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমাবেশ ঘটায় স্থানীয় প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাত থেকে দু’পক্ষ প্রস্তুতি নিতে থাকে এজতেমা ময়দানের দখল নিতে। শুক্রবার সকালে সা’দপন্থীরা বাস-ট্রাকে করে জোড় এজতেমায় যোগ দিতে এসে দেখে গেটগুলোতে তালা। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর সা’দপন্থী মুসল্লিরা এজতেমা ময়দান ত্যাগ করেন। এ দিকে ময়দানের ৫টি গেটে লাঠিসোটা নিয়ে সতর্ক অবস্থানে পাহারা দিতে দেখা যায় জোবায়েরপন্থীদের। স্থানীয় প্রশাসন জনকণ্ঠকে জনান, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে জিএমপি থেকে ব্যাপক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। জল কামানের ৩টি গাড়িসহ র‌্যাব-পুলিশের অবস্থান ছিল এজতেমা ময়দানে ঢোকার রাস্তাগুলোতে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করে সর্বত্র। জুমা নামাজের আযানের পর পর এজতেমা ময়দানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গেটে প্রত্যেক মুসল্লিকে চেক করে করে মাঠের ভেতর ঢোকানো হচ্ছে জুমা নামাজ পড়ার জন্য। সা’দপন্থীরা কোন মুসল্লিকে মাঠে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। কয়েকজন মুসল্লি জনকণ্ঠকে জানান, জোড় এজতেমা হচ্ছে বিশ্ব এজতেমা অনুষ্ঠানের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সভা। প্রতি বছরই এটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। গত ক’দিন ধরে কওমি মাদ্রাসা থেকে বিপুলসংখ্যক ছাত্র এসে অবস্থান নেয় এজতেমা ময়দানে। তারা সা’দপন্থীদের মাঠ থেকে সরে যেতে বাধ্য করে। সা’দপন্থীদের অন্যতম নেতা ওয়াসেকুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, বিপক্ষের বাধায় বিভিন্ন জেলা থেকে জোড় এজতেমায় আগত মুসল্লিরা সা’দপন্থীদের ঢুকতে দেয়নি। তারা আশপাশের মসজিদগুলোতে অবস্থান নেয়। দেওবন্দ কওমিপন্থী ওলামায়ে কেরামরা ঘোষণা করেছিলেন ৭ থেকে ১১ ডিসেম্বর জোড় এজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার। এ ঘোষণা শুনে সা’দপন্থীরা ৩০ নবেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ দিনব্যাপী জোড় এজতেমা অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুপক্ষকে ডেকে জোড় এজতেমা এবং বিশ^ এজতেমা স্থগিত রাখার অনুরোধ করেন। কিন্তু সা’দবিরোধীরা আগে থেকেই এজতেমা মাঠে অবস্থান করায় তাদের শক্ত অবস্থান সৃষ্টি হয়। এতে দুপক্ষই মারমুখী অবস্থানে অবস্থান করতে থাকে। এদিকে দেওবন্দ কওমিপন্থী আলেমদের শীর্ষ মুরব্বি মুফতী মাসুদুল করিম বলেন, জোড় এজেতমার নামে বাতেল সা’দপন্থীরা এজতেমা ময়দানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। তিনি আরও জানান, বিশ^ এজতেমা ময়দান আলেম ওলামা নিয়ে কওমিপন্থীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, জোবায়েরপন্থীরা অভিযোগ করেছেন বিশ^ এজতেমার সাবেক আমির মাওলানা সা’দ ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে তবলীগ অনুসারী মুসল্লিদের বিভ্রান্ত করছিলেন। এ থেকে রক্ষা করতে দেওবন্দ কওমি আলেম ওলামায়েরা এগিয়ে এসেছেন ইসলামের সঠিক দিক-নির্দেশনা ঠিক রাখতে।
×