ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দীর্ঘদিনের জটিলতা কাটল

ইন্টারনেটে সবস্তরে আজ থেকে ভ্যাট ৫ শতাংশ

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

  ইন্টারনেটে সবস্তরে আজ থেকে ভ্যাট ৫ শতাংশ

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেটে ভ্যাট নিয়ে নানা জটিলতার অবসান ঘটছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় আজ এক ডিসেম্বর থেকে ইন্টারনেটের দাম কমাচ্ছে। মন্ত্রণালয় ইন্টারনেটের সবস্তরে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) ৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আইআইজি (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) পর্যায়ে ৫ শতাংশ ও এনটিটিএন (ন্যাশনাল নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক) পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। এখন তা কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের কারণে ইন্টারনেট সেবাদাতা আইএসপির (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) খরচও কমে যাবে। এই সুবিধা গ্রাহকপর্যায়েও পাওয়া যাবে। যদিও গ্রাহক পর্যায়ে আগেও ৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। এরপরও গ্রাহকের ইন্টারনেটসেবা পাওয়ার খরচও কমবে। এতে রাজস্ব আয়ও বাড়বে। এ তথ্য জানিয়েছেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি মন্ত্রী হওয়ার পরই ঘোষণা দিয়েছিলাম সবার আগে ইন্টারনেটের দাম কমাব। দীর্ঘদিন পরে হলেও ইন্টারনেটের ওপর থেকে ভ্যাটের বোঝা নামাতে পেরেছি। আমি বলেছিলাম ইন্টারনেটের দাম না কমাতে পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়া কঠিন হবে। এখন গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম অনেক কমে যাবে। তাছাড়া যারা ইন্টারনেট সার্ভিস দিচ্ছে তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শতকরা ১৫ ভাগ ভ্যাট কমানোর। এখন আর তাদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে না। এখন তারা ৫ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে ইন্টারনেট সার্ভিস দিতে পারবেন। আইআইজি ও এনটিটিএনকে আর তাদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে না। এ বছর সংসদে বাজেট পাসের দিন ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত ভ্যাট ১৫ থেকে ৫ শতাংশ করা হয়। গত ১ জুলাই থেকে তা কার্যকরও হয়েছে। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি) ও মোবাইলফোন অপারেটররা বলেছে, গ্রাহকের ভ্যাট ৫ শতাংশ করা হলেও আইএসপিগুলোর ওপর এনটিটিএন সেবার ১৫ শতাংশ এবং আইআইজির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) আরোপ করা হয়। সূত্র জানিয়েছে, এনটিটিএন (ভূগর্ভস্থ ক্যাবল সেবা) প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট ছিল। আইআইজির (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) সেবার ওপর ছিল ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এই দু’টি ভ্যাটই ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘রিবেট’ পেত। এবারের বাজেটে ‘রিবেট’ সুবিধা বাতিল করে এনটিটিএন সেবার ওপর ১৫ শতাংশ এবং আইআইজির ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট ধরা হয়। ইন্টারনেট সেবাদাতারা ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ক্রয় ও পরিবহনের খরচ বেড়ে যায়। গত ২৫ নবেম্বর অর্থমন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, আইএসপিএবির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে ইন্টারনেটের সব স্তরে ভ্যাট ৫ শতাংশ করতে অর্থমন্ত্রী নির্দেশ দেন। এই নির্দেশ এক ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। ইন্টারনেট সেবাদাতা আইএসপিএর একজন কর্মকর্তা বলেন, এসআরও জারি না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। ভ্যাট সব স্তরে ৫ শতাংশ করা হলেও কস্ট অব প্রোডাক্ট ও সার্ভিস কিছুটা হলেও কমবে। এতে গ্রাহকও উপকৃত হবেন। ইন্টারনেট ব্যবহার খরচ আরও কমানো সম্ভব। বর্তমানে যে হারে ভ্যাট কমানো হয়েছে তা বাস্তবায়নই হচ্ছে বড় কথা। মন্ত্রী বলেন, এখন যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য বিটিআরসি ‘মনিটর’ করবে। গ্রাহকরা যাতে সুবিধা পান এ বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। ইন্টারনেট সুবিধা দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০২১ সালের আগেই এ সুবিধা দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে।
×