ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যশোর পৌরসভা

পরিবেশবান্ধব ৩৬ ডাস্টবিন থেকে ময়লা ফেলবে ৫ কন্টেনার ট্রাক

প্রকাশিত: ০৪:৩৪, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

 পরিবেশবান্ধব ৩৬ ডাস্টবিন  থেকে ময়লা ফেলবে  ৫ কন্টেনার ট্রাক

সাজেদ রহমান, যশোর অফিস ॥ যশোর পৌরসভায় গড়ে উঠছে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। ময়লা ফেলার জন্য শহরে বসানো হচ্ছে কন্টেনার ডাস্টবিন। ঢাকনাযুক্ত হওয়ায় এসব ডাস্টবিন থেকে ময়লার দুর্গন্ধ ছড়াবে না। পরিবেশবান্ধব এ রকম ৩৬টি ডাস্টবিন এসেছে পৌরসভায়। শীঘ্রই এমন আরও ৫৪টি ঢাকনাওয়ালা কন্টেনার ডাস্টবিন আসছে। আর ময়লায় পরিপূর্ণ হলে এসব ডাস্টবিন সরিয়ে নেয়ার জন্য এসেছে ৫টি কন্টেনার ট্রাক। সিটি রিজন ডেভলপমেন্ট প্রকল্প (নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প) থেকে গত ২৫ নবেম্বর যশোর পৌরসভায় এসব ডাস্টবিন ও ট্রাক দেয়া হয়েছে। ২৮ নবেম্বর থেকে পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডে এসব ডাস্টবিন বসানো শুরু হয়েছে। শহর এলাকার বাসাবাড়ি, হোটেল, রেস্তোরা, মার্কেটপাড়ার দোকানপাট থেকে ফেলা ময়লায় এসব ডাস্টবিন ভরে যাওয়া মাত্রই ট্রাকে করে সরিয়ে ফেলে খালি আরেকটি বসিয়ে দেয়া হবে। এতে করে শহর যেমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে, তেমনি থাকবে দুর্গন্ধমুক্ত। পৌর সচিব আজমল হোসেন জানান, শহরে ডাস্টবিন না থাকার কারণে আগে রাস্তার পাশে ময়লা ফেলানো থাকত, যার ফলে সৃষ্টি হতো জনদুর্ভোগ। তবে এসব কন্টেনার ডাস্টবিন চলে আসায় এখন থেকে শহর আর অপরিচ্ছন্ন হবে না। ডাস্টবিন ভরে গেলে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে সেখানে আরেকটি খালি ডাস্টবিন বসিয়ে দেয়া হবে। আর ডাস্টবিনগুলো ঢাকনাযুক্ত হওয়ায় গন্ধ ছড়াবে না, এতে মশা মাছি বসতে পারবে না। ফলে রোগ জীবানু ছড়াবে না। যশোর পৌরসভা সূত্র জানায়, নগর অঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্প (সিটি রিজন ডেভলপমেন্ট প্রকল্প-সিআরডিপি’র) মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে বর্জ্য শোধনাগার গড়ে তোলা হয়েছে। শহরতলীর ঝুমঝুমপুর ময়লাখানায় পরিবেশবান্ধব এই বর্জ্য শোধনাগার গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে যশোর শহরসহ জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে ময়লা এনে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। বর্জ্য শোধনাগারে ময়লা দিয়ে উৎপাদন করা হবে জৈব সার, বায়োগ্যাস ও বিদ্যুত। সামনের মাসে বর্জ্য শোধনাগারটি চালু হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা যায়, বর্জ্য শোধনাগারে আবর্জনা থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। আর এ উৎপাদিত বিদ্যুত ময়লা প্রক্রিয়াজাতকরণের বিভিন্ন প্লান্ট পরিচালনায় ব্যবহার হবে। পঁচনশীল, দাহ্য, কাচ ও লোহা জাতীয় বর্জ্য ওই কেন্দ্রে প্রক্রিয়াজাত করা হবে। সেপটি ট্যাংকের বর্জ্য থেকে পরিবেশবান্ধব জৈব সার উৎপাদন করে বাজারজাত করা হবে। পাশাপাশি এ থেকে উৎপাদিত বায়োগ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে আশপাশের এলাকার বাসা বাড়িতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সরবরাহ করা হবে। সূত্র মতে, ১৩ দশমিক ২৫ একর আয়তনের ময়লা প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচু প্রাচীর বেষ্টিত করা হয়েছে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার্থে। সেখানে কম্পোস্ট প্লান্ট, প্রি-ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, বায়োগ্যাস ডাইজ্যেস্টার, কন্ট্রোল ল্যান্ড ফিল সেইভ ও ইন্ট্রিগেট স্যানেটারি ল্যান্ড ফিল সেইভ স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি অফিস, স্টাফ কোয়ার্টার, ট্রাক রাখার শেড নির্মাণ করা হবে। পাঁচটি পুকুর খনন করে সেখানে প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রের ডাস্ট ফেলা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ময়লা প্রক্রিয়াজাত কেন্দ্রে ২০ থেকে ৩০ টন বর্জ্য ডাম্পিং হবে। ১০ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পে পর্যায়ক্রমে ৪৫ টন বর্জ্য ডাম্পিং করা হবে। পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু জানিয়েছেন, সিআরডিপি (সিটি রিজন ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট) প্রজেক্ট থেকে যশোর পৌরসভায় ৩৬টি কন্টেইনার ডাস্টবিন ও ৫টি কন্টেনার ট্র্রাক দেয়া হয়েছে। অচিরেই আরও ৫৪টি কন্টেনার ডাস্টবিন পাওয়া যাবে। ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য এসব কন্টেনার শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হবে।
×