ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম চালুর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ১ ডিসেম্বর ২০১৮

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম চালুর উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর সড়কে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফেরাতে রিমোট কন্ট্রোল সিস্টেম চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১০টির মতো ট্রাফিক ইন্টারসেকশন প্রস্তুত করা হয়েছে। এর মধ্য থেকে ছয়টি ইন্টারসেকশন বুঝে নেয়ার জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) চিঠি দিয়েছে। কিন্তু পথচারী পারাপার ও লাল-সবুজ বাতির সঙ্কেত নিয়ন্ত্রণে সঠিক নির্দেশনা নেই। এজন্য রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব নিতে অনীহা দেখাচ্ছে পুলিশ। তবে ত্রুটি-বিচ্যুতি ঠিক করে দিলে এ দায়িত্ব পালন করবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ‘নির্মল বায়ু ও টেকসই পরিবেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় রাজধানীর প্রতিটি সড়ক ইন্টারসেকশনে ডিজিটাল কাউন্টডাউন টাইমার স্থাপন করে সিটি কর্পোরেশন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এগুলোতেও নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়ছে। সবগুলো মেরামতের পর নির্ভুল অবস্থায় বুঝে নিতে চায় তারা। এ বিষয়ে পুলিশ ও সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে আলাপ-আলোচনা চলছে। রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থার মাধ্যমে মূলত সময় ও বাতি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সড়কে গাড়ির চাপ অনুযায়ী দূর থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে সিগন্যালের সময় ডিজিটাল ডিসপ্লেতে দেখানো হবে। ফলে চালকরা বুঝতে পারবেন কতক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করতে হবে। এছাড়া, রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থাতেই সিগন্যালের বাতিগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও পুলিশ বলছে, এই পদ্ধতির মাধ্যমে সময় নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে। কিন্তু বাতি ও পথচারী পারাপারের বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। সে কারণে তারা বিষয়টিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে। এগুলো পুরোপুরি সেরে দিলে পুলিশ তার দায়িত্ব নিতে চায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, দীর্ঘদিন অকেজো রাজধানীর সিগন্যাল বাতিগুলো মেরামত করে যানবাহন চালানোর উদ্যোগ নেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এজন্য পুলিশ ও ডিএসসিসিকে নির্দেশনা দেয়া হয়। সে কারণে সংস্থা দুটি কাজও শুরু করেছে। কয়েকটি পয়েন্টে পরীক্ষামূলক স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল বাতিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টাও করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তা সফল হয়নি। তাই পুরো সিগন্যালিং ব্যবস্থা রিমোর্টের দ্বারা নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ডিএসসির ছয়টি ইন্টারসেকশন চূড়ান্তভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে। এগুলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ইন্টারসেকশন, কদম চত্বর ইন্টারসেকশন, মৎস্য ভবন ইন্টারসেকশন, কাকরাইল মসজিদ ইন্টারসেকশন, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ইন্টারসেকশন ও শাহবাগ ইন্টারসেকশন। এ বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম-কমিশনার ট্রাফিক (দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ট্রাফিক সিগন্যালগুলোয় এখনও ত্রুটি রয়েছে। সিগন্যালে কিভাবে সময় নিয়ন্ত্রণ করা হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা নেই। কখন লাল ও কখন সবুজ বাতি জ্বলবে আবার কত সময়ের জন্য জ্বলবে এবং কিভাবে পথচারী পারাপার হবে সে বিষয়গুলো এ্যাডজাস্টমেন্ট করা হয়নি। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি চালু করেছি। ত্রুটিগুলো মেরামত করে দেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। সব ঠিক হলে আমরা রিমোটের মাধ্যমে সিগন্যাল বাতিগুলো পরিচালনা করতে পারব।’ এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও ডিএসসিসি’র প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগকে চিঠি দিয়েছি। তারা কখন বুঝে নেবে সেটা তাদের বিষয়। যদি কোন ত্রুটি থাকে সেগুলো আমাদেরকে নির্দিষ্ট করে জানালে সেরে দিতে পারব। কিন্তু এখনও আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে এমন কোন অভিযোগ পাইনি।’ বর্তমানে দুই সিটি কর্পোরেশনের ৬২টি ট্রাফিক ইন্টারসেকশনের ৮৮টি সিগন্যাল রিমোট কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনায় আনার কাজ চলছে। গত ১৬ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গবর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের ‘ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন’ সংক্রান্ত এক সভায় সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত ট্রাফিক সিগন্যালে স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনা পুলিশকে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়।
×