জলবায়ু পরিবর্তন রোধে অস্ট্রেলিয়া সরকারকে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করতে এবার দেশটির স্কুল শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে। তাদের দাবি, অস্ট্রেলিয়া সরকারের জলবায়ু নীতি ‘অপর্যাপ্ত’। শুক্রবার পুরো দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে না গিয়ে ওই বিক্ষোভকে সমর্থন দিয়েছে। -বিবিসি
সরকারের জলবায়ু নীতির প্রতিবাদ করতে আগে থেকেই এই কার্যক্রম ঘোষণা করে সব শিক্ষার্থীদের এতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল আয়োজকরা।
গত সোমবার পার্লামেন্টে আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছিলেন, ‘আমরা চাই স্কুলগুলোতে বিক্ষোভ কম আর লেখাপড়া আরও বেশি করে হোক।’ শুক্রবার সড়কে নেমে বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা তাদের প্রতিবাদে নামার ইচ্ছাকে আরও দৃঢ় করেছে। বিক্ষোভরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা আজ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার পরিণতি ভবিষ্যতে আমাকেও ভুগতে হবে।’ সুইডেনের ১৫ বছরের কিশোরী গ্রেটা থানবার্গ তাদের এ আন্দোলন শুরুতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে বলে জানান আয়োজকরা।
১৫ বছরের গ্রেটা থানবার্গ সুইডেনেও একই আন্দোলন করছে। ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু চুক্তির সময় অস্ট্রেলিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে তাদের কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ ২০০৫ সালের তুলনায় ২৬ থেকে ২৮ শতাংশ কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এ সপ্তাহের শুরুতে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশিরভাগ দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কার্বন নিঃসরণ কমাতে ব্যর্থ হয়েছে।
‘ইমিশন গ্রাপ রিপোর্ট’ অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া গত বছর থেকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নিজেদের জলবায়ু কৌশলে ‘কোন পরিবর্তনই আনেনি’। অস্ট্রেলিয়ার প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের রাজধানীতে এবং ২০টির বেশি আঞ্চলিক শহরে ‘স্কুল স্ট্রাইক ফর ক্লাইমেট’ নামে এ বিক্ষোভ হয়েছে।
মিলু এ্যালব্রেক ও হ্যারিয়েট ও’শিয়া ক্যারি নামে ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের ১৪ বছরের দুই কিশোরী এ আন্দোলন শুরু করে। হ্যারিয়েট বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জরুরী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি এমন কিছু যা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদের জন্য আমাদের ভাবতে হবে। আমরা চিঠি লিখেছি, আরও অনেক কিছু করেছি। কিন্তু তাতে কোন পরিবর্তন আসেনি। সত্যি বলতে, শিক্ষাই আমাদের একমাত্র শক্তি। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টির গুরুত্ব বুঝাতে শুক্রবার আমরা সেটাকেই বিসর্জন দিয়েছি।’ আন্দোলনে অংশ নেয়া ১৪ বছরের জেন হিঞ্চক্লিফি বলেন, ‘আমি ভোটের মাধ্যমে মতপ্রকাশের মতো বড় হওয়া পর্যন্ত চুপ করে বসে থাকতে পারি না। সবাই, আমরা সবাই জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি এবং দূষণের কারণে আমরা সম্পূর্ণ অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।’