ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জিততে চায় উইন্ডিজ

প্রকাশিত: ০৬:৪১, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

জিততে চায় উইন্ডিজ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘরের মাটিতে বাংলাদেশ দলকে পেয়ে নারকীয় উল্লাসে মেতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গত জুলাইয়ে টেস্ট সিরিজে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল পেসারদের দাপটে সফরকারীদের দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে। মাত্র ৪ মাসের ব্যবধানে মুদ্রার ঠিক উল্টোপিঠ দেখছে ক্যারিবীয়রা। বাংলাদেশ সফরের প্রথম টেস্টেই স্বাগতিক স্পিনারদের দাপটে নতি স্বীকার করেছে তারা। এবার ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই তাদের শুরু হচ্ছে আজ থেকে। কিন্তু ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্রেথওয়েট দাবি করলেন তার দলের ক্রিকেটাররা ঘুরে দাঁড়াতে জানে এবং এবার ম্যাচ জিতে সিরিজ ড্র করতে আত্মবিশ্বাসী সবাই। স্বাগতিক স্পিনারদের ঠেকানোর মন্ত্রও জানিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে দলের ক্রিকেটারদের। তিনি মনে করেন, নিজেদের পরিকল্পনামাফিক ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ব্যাট করলে স্পিন বড় কোন সমস্যায় ফেলবে না। বাংলাদেশের মাটিতে স্পিনই বড় শত্রু উপমহাদেশের বাইরের সফরকারী দলগুলোর জন্য। সেটা আগেও প্রমাণ হয়েছে এবং এবার সফরে এসে হাড়ে-হাড়ে টের পেয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলও। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হয়েছেন নিজেদের মেলে ধরতে। কিন্তু মিরপুরে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে, সিরিজ হার ঠেকাতে হলে জিততে হবে এ ম্যাচ। অধিনায়ক ব্রেথওয়েট তাই নিজ দলের ব্যাটিং সমস্যার সমাধান নিয়ে বললেন, ‘প্রতিটি ব্যাটসম্যানকে নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। ব্যাটসম্যানদের জন্য বেশ দুরূহ উইকেটে সর্বশেষ ম্যাচটি খেলা হয়েছে। আমরা যখন নিজেদের পরিকল্পনায় ইতিবাচক হতে পারব এবং নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারব তখনই কিছু করতে পারব। যদিও এটা সহজ হবে না, ক্রিজের অবস্থা বুঝে আমাদের ফুটওয়ার্ক ঠিকভাবে কাজে লাগানোর ওপর এটা নির্ভর করছে।’ এই টেস্টেও নিশ্চিতভাবে স্পিনবান্ধব উইকেটই থাকবে। তবে স্পিনের চেয়ে তুলনামূলকভাবে পেস বোলিংয়ে বেশ শক্তিধর ক্যারিবীয়রা। সেটা চট্টগ্রাম টেস্টের চরম স্পিননির্ভর উইকেটে করে দেখিয়েছেন পেসার শ্যানন গ্যাব্রিয়েল। মিরপুরে অবশ্য নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি খেলতে পারবেন না। দলের বোলিং কম্বিনেশন নিয়ে ব্রেথওয়েট বলেন, ‘অবশ্যই এখানে একটা সামঞ্জস্য (স্পিন ও পেস) থাকবে। প্রথম টেস্টে স্পিনটাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিসাধন করেছে, কিন্তু এটা প্রমাণ হয় না যে পেসাররা উইকেট নিতে পারবে না। আমার মনে হয়, যদি নিজেদের পরিকল্পনা মাফিক বোলিং করতে পারি তাহলে আমরা চাপ বাড়াতে পারব এবং উইকেট আনতে পারব। ভাল কিছু করার ক্ষেত্রে আমি পেস এবং স্পিন দুটোর ওপরই আস্থা রাখছি।’ ব্রেথওয়েট যতই মন্ত্র জপতে থাকুন কিংবা সতীর্থদের সাহস জোগাতে স্পিনভীতির বিষয়টি উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন, আসলে ব্যাটসম্যানদের সেই দুর্বলতা স্পষ্ট হয়েছে প্রথম টেস্টেই। সেখান থেকে উত্তরণের জন্য কি ধরনের চেষ্টা করতে হবে তা নিয়ে ব্রেথওয়েট আরও বলেন, ‘এ রকম উইকেটে ইতিবাচক থাকাটাই চাবিকাঠি। প্রথম টেস্টে বাউন্সে অনেক বৈচিত্র্য ছিল, এমনকি আমাকেও সামনে এগিয়ে যেতে হয়েছে। দায়িত্বটা নিজেদের ওপরই নিজস্ব ডিফেন্সে আস্থা রাখা এবং আক্রমণাত্মক মনোভাব দেখানো। আমার মনে হয় নিজের পায়ের শিথিলতা রাখা এবং যে বলই আসুক সেটার যথাযথ বিচার করা বড় বিষয়। আমার মনে হয় কিভাবে আমরা এটা করব সে ব্যাপারে নিজেদের মনটাকে ভারমুক্ত রাখা প্রয়োজন। আমি অবশ্যই বিশ্বাস করি আমরা এটা করতে পারব।’ এবার হয়তো চরম প্রতিশোধ নেয়ার মোক্ষম সুযোগ বাংলাদেশের। গত জুলাইয়ে ২-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ হয়ে ফেরার পর একই বেদনা ফিরিয়ে দেয়া ক্যারিবীয়দের। কিন্তু ব্রেথওয়েট বলেন, ‘আমার মনে হয় প্রথম ইনিংসে আমরা ৪০/৫০ রান তাদের বেশি দিয়ে ফেলেছিলাম। তাছাড়া আমরা চারটি ক্যাচ ফেলেছিলাম। আমরা যদি এ বিষয়গুলোর উন্নতি ঘটাতে পারি এবং শীর্ষ পাঁচজনের কাছ থেকে কিছু পেয়ে বড় সংগ্রহ প্রথম ইনিংসে করতে পারি সেটা আমাদের সিরিজ ড্রয়ের জন্য উপযুক্ত অবস্থানে নিয়ে যাবে। আমরা আত্মবিশ্বাসী। ছেলেরা সবসময়ই খুব ভালভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। আমাদের লড়াই করার জন্যই নামতে হবে এবং নিজেদের পরিকল্পনার সঙ্গে লেগে থাকতে হবে।’ এই বিশ্বাসের কারণেই ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার পরও চাপে নেই ক্যারিবীয়রা। দাবিটা ব্রেথওয়েটেরই, ‘আমরা চাপের মধ্যে নেই। আমরা জানি আমাদের কি করতে হবে। হা, অবশ্যই আমরা ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছি, তাই আমাদের সিরিজ ড্রয়ের দিকে মনোযোগী হতে হবে। শীর্ষ পাঁচকে অবশ্যই ভাল জুটি করতে হবে যা আমাদের এই শেষ টেস্ট জয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।’
×