ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কোন মন্তব্য যাতে বিরূপ প্রভাব না ফেলে

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নজর রাখা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৬, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নজর রাখা হচ্ছে

ফিরোজ মান্না ॥ নির্বাচনকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজর রাখা হচ্ছে। বিটিআরসিসহ আরও দুটি গোয়েন্দা সংস্থা এই কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি ফেসবুকে এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা বিরূপ মন্তব্য করার কারণে র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করেছে। বিটিআরসি বলছে, শুধু ফেসবুকের ওপরই নয় সামাজিক যোগাযোগের অন্য মাধ্যম ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, স্কাইপে, ইমোর ওপরও নজর রাখছে। যাতে সরকার ও দেশ বিরোধী কোন মন্তব্য সমাজে বিরূপ প্রভাব না ফেলে। ইতোমধ্যে এসব এ্যাপস নজরে রাখার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। বিটিআরসি জানিয়েছে, বিএনপি জামায়াত এতদিন ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, স্কাইপে, ইমো ব্যবহার করে নেতাকর্মীরা কথা বলে আসছিল। এখন থেকে এই এ্যাপসগুলোও নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে। দেশে এতদিন এই এ্যাপসগুলোর মাধ্যমে কথা বললেও ধরার কোন যন্ত্রপাতি ছিল না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। যাতে কেউ কোন ষড়যন্ত্র করতে না পারে। কোন সহিংস ঘটনা ঘটাতে না পারে তার জন্য সব মাধ্যমকে মনিটর করা হবে। সম্প্রতি সরকারের একজন অবসরপ্রাপ্ত উপসচিবকে র‌্যাব গ্রেফতার করেছে। তিনি ফেসবুকে সরকার বিরোধী ছড়া লিখেছিলেন। এদিকে, ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ, স্কাইপে, ইমো ব্যবহার করে সরকার ও দেশ বিরোধী কথা বলেছেন তাদের দুটি গোয়েন্দা সংস্থা ও বিটিআরসি কঠোর নজরদারিতে রেখেছে। যে কোন সময় আরও কয়েকজন গ্রেফতারের অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন আর এসব এ্যাপ ব্যবহার করে যে যা খুশি বলতে পারবে না। এ সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হবে। সরাসরি ফোন কল থেকে নিরাপদ মনে করে এসব এ্যাপ ব্যবহার করে তারা তৃণমূল পর্যন্ত নানা নির্দেশ ও পরামর্শ দিয়েছে। স্মার্ট এ্যাপ ব্যবহার করে ভয়েস কল করতে টাকাও গুনতে হচ্ছে না। ভাইবার, হোয়াটসএ্যাপ ও ইমোর মতো এ্যাপ ব্যবহার করে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতাকর্মীরা যোগাযোগ রক্ষা করা তাদের জন্য এখন ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কাজটি শুধু বিএনপিই করছে না। জামায়াত এসব এ্যাপের বেশি সুবিধা ভোগ করছে। তারা কোথায় কি করতে হবে-কি করতে হবে না তার নির্দেশ দিচ্ছে বলে তথ্য প্রযুক্তিবিদরা মনে করছেন। কারণ ক্ষমতাসীন দলের এসব এ্যাপের সুবিধা নিতে হচ্ছে না। তাদের এমনিতেই একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে। ক্ষমতাসীনরা বিষয়টি নিয়ে খুব একটা ভাবছেও না। কিন্তু এই বিষয়টি ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য একটি মহল সক্রিয় রয়েছে। তারা চাইবে কি করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা যায়। এই চক্রান্তের সঙ্গে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত হচ্ছে। বিদেশ থেকে দেশে যে সব নির্দেশ আসছে তা সরকারের লোকজন জানতে পারছে না। ওটিটি ব্যবহার করে কথা বলা হচ্ছে। বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসি কঠোর নজরদারি করে যাচ্ছে। তবে ওটিটি সারা দুনিয়াকেই চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। স্মার্ট এ্যাপগুলোর ওপর এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে উন্নত দেশগুলোতে এ সব এ্যাপগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের দেশেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ কোন ষড়যন্ত্র করতে পারবে না। কারণ বিটিআরসি ইতোমধ্যে কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা বলছেন, প্রযুক্তি দিয়েই প্রযুক্তি রোধ করতে হবে। স্মার্টফোন এ্যাপগুলোকেও নজরদারিতে আনা সম্ভব। যদি সেই ধরনের প্রযুক্তি থাকে। তবে একটা জিনিস ঠিক যে, বিশ্বব্যাপী এসব এ্যাপ কিভাবে ব্যবহার হবে তা নিয়ে চিন্তা করে যাচ্ছে। ডাটার ওপর ভিত্তি করে বিনা টাকায় কথা বলার বিষয়টি বিশ্বব্যাপীই আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হোয়াটসএ্যাপ, ইমো, ভাইবার মাইপিপল এ্যাপগুলোর মধ্যমে শুধু বিদেশ থেকে কল করা হচ্ছে না, দেশের মধ্যেও এখন ডাটা ব্যবহার করে ভিডিও ও ভয়েস কল করা হচ্ছে। ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই এ্যাপগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে। এতে আন্তর্জাতিক কল কমছে। সরকারের রাজস্ব বাড়াতে এসব এ্যাপগুলোও থেকে অর্থ আদায় করতে হবে।
×