ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মার্কিন সিনেটে ভোট

ইয়েমেন যুদ্ধে সমর্থন নয়

প্রকাশিত: ০৪:২২, ৩০ নভেম্বর ২০১৮

ইয়েমেন যুদ্ধে সমর্থন নয়

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রত্যাহারে মার্কিন সিনেট একধাপ অগ্রসর হয়েছে। বুধবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ৬৩ জন সিনেটর এই যুদ্ধে সমর্থন বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৭ সিনেটর। সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যার পর সৃষ্ট কূটনৈতিক বিবাদের মধ্যে এ ভোট অনুষ্ঠিত হয়। বিবিসি ও এএফপি। ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের অভিযানের সমর্থন থেকে সরে আসার পক্ষে রায় দিয়েছেন মার্কিন সিনেটররা। তবে সিআইএ প্রধান জিনা হাসপেল কংগ্রেসের শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন না। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেনে হামলা চালিয়ে আসছে। উদ্দেশ্য দেশটির বৈধ শাসক প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বো মানসুর হাদির সরকারকে স্থিতিশীল অবস্থায় রাখা। ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা হাদি সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। তবে এবার মার্কিন সিনেটররা এই যুদ্ধে সমর্থন বন্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। বিবিসি জানায়, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকা-ের পর থেকে তাদের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন কমে গেছে। ২ অক্টোবর খাশোগি বিয়ের জন্য কাগজপত্র নিতে ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে গিয়ে হত্যাকা-ের শিকার হন। তুরস্ক সরকারের দাবি করে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে। তাকে হত্যা করে তার মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়েছে। তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের একজন উপদেষ্টা বলেন, ১৫ সদস্যের সৌদি কিলিং টিমের প্রধান খাশোগিকে হত্যার পর যুবরাজ বিন সালমানের দফতরে চারবার ফোনে কথা বলেছেন। সিআইএ জানিয়েছে, খাশোগিকে নিয়ে যুবরাজের ভাই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত খালেদ বিন সালমানের ফোনালাপ নিয়ে তদন্ত করে তারা এই মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছে। ওই প্রতিবেদনে যুবরাজ হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সঙ্গে একমত হননি। বুধবার সিনেটের শুনানিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাদের তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করলেও সিআইএ প্রধান জিনা হাসপেলের অনুপস্থিতিকে স্বাভাবিকভাবে নেয়নি অনেকে। একজন সিনেটরের অভিযোগ, কিছু আড়াল করতেই হাসপেল উপস্থিত ছিলেন না। ট্রাাম্প সৌদি আরবকে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে দেখে থাকেন। তিনি দেশটির রাজপরিবারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে থাকেন। গত সপ্তাহে সিআইএর একটি প্রতিবেদনও তিনি যেখানে সৌদি যুবরাজকে হত্যার জন্য দায়ী করা হয়। সিনেট ফরেন কমিটির চেয়ারম্যান সিনেটর বব কর্কার বলেন, এটা সবার কাছেই স্পষ্ট যে সৌদি যুবরাজ জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি বুঝি যে সৌদি আরব আমাদের মিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি যে যুবরাজ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছেন’। এদিকে ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তারা ইয়েমেনে শান্তি আলোচনা শুরুর কাছাকাছি রয়েছেন। মিডল ইস্ট আইয়ের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। গুতেরেস বলেন, শান্তি ফিরিয়ে আনতে সৌদি আরবের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যুবরাজ কিংবা অন্য যে কোন সিনিয়র কর্মকর্তার সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত। আমি বিশ্বাস করি বর্তমান এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। হুথি ও সৌদি জোটের সহিংসতা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ইয়েমেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় অনেক আগেই এই যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
×