ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোনাল্ডোর শততম জয়, শেষ ষোলোয় জুভেন্টাস

প্রকাশিত: ০৪:৩২, ২৯ নভেম্বর ২০১৮

রোনাল্ডোর শততম জয়, শেষ ষোলোয় জুভেন্টাস

জাহিদুল আলম জয় ॥ ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের আসর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। এই আসরে নিজেকে অবিসংবাদিত সেরা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। একের পর এক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে আরও একটি গৌরবময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন পাঁচবারের ফিফা সেরা তারকা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ইতিহাসে প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে ১০০ ম্যাচ জয়ের অনন্য রেকর্ড গড়েছেন। রেকর্ড গড়ার ম্যাচে অবশ্য গোল পাননি সি আর সেভেন। ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ান তারকা মারিও মানদুকিচের লক্ষ্যভেদে অতিথি স্প্যানিশ ক্লাব ভ্যালেন্সিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়েছে স্বাগতিক ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়ন জুভেন্টাস। এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই নকআউট রাউন্ড অর্থাৎ শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে তুরিনের ওল্ডলেডিরা। ওল্ডট্রাফোর্ডে গ্রুপের আরেক ম্যাচে ইনজুরি সময়ে বেলজিক তারকা মারোইন ফেলাইনির একমাত্র গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছে সুইস ক্লাব ইয়াং বয়েজকে। এই জয়ে জোশে মরিনহোর দলেরও নকআউট রাউন্ড (দ্বিতীয় রাউন্ড) নিশ্চিত হয়েছে। ‘এফ’ গ্রুপ থেকে এক ম্যাচ হাতে রেখে সেরা ষোলোর ছাড়পত্র পেয়েছে আরেক ইংলিশ পরাশক্তি ম্যানচেস্টার সিটিও। স্বাগতিক ফরাসী ক্লাব অলিম্পিক লিঁওর সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে সিটিজেনরা। গ্রুপের আরেক ম্যাচে জার্মান ক্লাব হোফেনহেইমকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে ইউক্রেনের শাখতার ডোনেস্ক। এরপরও গ্রুপে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে লিঁও। বড় কোন নাটকীয়তা না হলেও ফরাসী ক্লাবটিরই নকআউট রাউন্ডের টিকেট পাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে। দ্বিতীয় রাউন্ড (শেষ ষোলো) নিশ্চিত করতে এক পয়েন্ট পেলেই চলতো জুভেন্টাসের। কিন্তু পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই সেটা নিশ্চিত করেছে ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়রা। প্রতিপক্ষের মাঠে এর আগে প্রথম লেগের ম্যাচে ২-০ গোলে জয় পেয়েছিল জুভেন্টাস। কিন্তু নিজেদের মাঠে আশানুরূপ খেলতে পারেনি দলটি। ম্যাচের প্রথমার্ধে গোছানো তেমন কোন আক্রমণও করতে পারেনি তারা। ফলে সাদামাটাভাবে শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ কিছু সুযোগ পেয়েও স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পাচ্ছিল না দলটি। মারিও মানজুকিচের গোলটিই হয় ম্যাচের নিয়ন্ত্রক। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে প্রায় গোল খেয়ে বসেছিল জুভেন্টাস। দারুণ দক্ষতায় দলকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক ভয়চেখ স্ট্যাসনি। কর্নার থেকে মউকতার দিয়াখাবির নেয়া হেড একেবারে গোলমুখ থেকে ফিরিয়ে দেন এ গোলরক্ষক। এ অর্ধে এটাই ছিল বলার মতো আক্রমণ। তবে দ্বিতীয়ার্ধে দারুণ গোছানো ফুটবল খেলে দুই দলই। বিশেষ করে জুভেন্টাস। ৫৯ মিনিটে কাক্সিক্ষত গোলটিও পায় তারা। জুয়াও কানসালোর কাছ থেকে বল পেয়ে গোলমুখে আড়াআড়ি পাস দেন রোনাল্ডো। তা থেকে আলতো টোকায় জাল খুঁজে নেন মানজুকিচ। ৬৮ মিনিটে দিবালার দারুণ এক শট ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক নেতো ফিরিয়ে না দিলে ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারতো জুভেন্টাস। ৭৩ মিনিটে আরও একটি দারুণ সেভ করেন গোলরক্ষক। রোনাল্ডোর নেয়া দারুণ হেড রুখে দেন তিনি। ৮০ মিনিটে মানদুকিচের শটও রুখে দেন গোলরক্ষক। শেষদিকে বেশ কিছু আক্রমণ করেছিল ভ্যালেন্সিয়া। তবে গোলের দেখা পায়নি। তাই হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। পাঁচ ম্যাচে চার জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকেট পেয়েছে জুভরা। এই ম্যাচেই পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জেতা রোনাল্ডো পেয়েছেন শততম ম্যাচ জয়ের স্বাদ। প্রথম লেগে অলিম্পিক লিঁওর কাছে ঘরের মাঠে হেরে গিয়েছিল সিটিজেনরা। এরপর টানা তিন ম্যাচ জিতে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। তবে লিঁওর বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডে আবারও হোঁচট খেতে বসেছিল পেপ গার্ডিওলার দল। ২-১ গোলে হারতে বসার মুখে শেষদিকে গোল করে দলকে মূল্যবান এক পয়েন্ট পাইয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টিনার তারকা ফরোয়ার্ড সার্জিও এ্যাগুয়েরো। লিঁও’র পক্ষে জোড়া গোল করেন আইভরিকোস্টের ম্যাক্সওয়েল করনেট। ম্যানসিটির পক্ষে প্রথম গোল পরিশোধ করেন আয়মারিক লাপোর্তে। গোল মিসের মহড়ায় প্রথমার্ধে স্কোরলাইন থাকে গোলশূন্য। ৫৫ মিনিটে ম্যাচের প্রথম গোল করেন করনেট। মিনিট সাতেক পরে সমতা ফেরান লাপোর্তে। ৮১ মিনিটে আবারও লিঁওকে এগিয়ে দেন করনেট। এর দুই মিনিট বাদে আবারও সিটিজেনদের পক্ষে সমতা ফেরান এ্যাগুয়েরো।
×