ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের মন্তব্য

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন, লুটপাট বিএনপিতে

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন, লুটপাট বিএনপিতে

তপন বিশ্বাস ॥ খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেছেন, শুধু চরমপন্থীরাই বলবে, অন্যরা ক্ষমতায় গেলে দেশ চরমপন্থীদের হাতে চলে যাবে। সম্প্রতি বিএনপি নেতা মেজর হাফিজের এক বক্তব্যের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ে নিজ দফতরে জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, চরমপন্থী কারা তা দেশ ও জাতি জানে। ২০০১ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা মানুষ ভুলে যায়নি। আগুন সন্ত্রাসীদের এ দেশের মানুষ ভুলতে পারে না। দেশ ভারত হয়ে যাওয়া, মসজিদে উলুধ্বনি, কপালে সিঁদুর এসব কথা দেশের মানুষ এখন আর বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। আর বিএনপি ক্ষমতায় গেলে লুটপাট হয়। আসলে তারা বেসামাল হয়ে পড়েছেন। ক্ষমতায় আসার লক্ষ্যে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তারা আবার অপপ্রচারে নেমেছে। কিন্তু জনগণ আবারও এর জবাব দেবে। সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের টকশোতে বিএনপির নেতা মেজর হাফিজ বলছেন, ঐক্যফ্রন্ট ক্ষমতায় না এলে দেশ চরমপন্থীদের হাতে চলে যাবে। কারা এই চরমপন্থী? কোন দল লালন করে এদের? একটু পেছনে তাকালেই দেশের জনগণ তা মনে করতে পারে। আগে একবার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রচার ছিল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এদেশ ভারত হয়ে যাবে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়ও এলো। কিন্তু বাংলাদেশ বাংলাদেশই রয়ে গেল। বরং ভারত থেকে গঙ্গার পানির হিস্যা আদায় করল। দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হলো। বিরোধিতা করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলো আমরা পানি কম পাচ্ছি। যেখানে ভারত থেকে বিএনপি সরকার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেনি, সেখানে তারা নির্লজ্জের মতো এই অভিযোগ আনল। নানা বিরোধিতার মধ্যে কাটিয়ে দিল পাঁচটি বছর। পরে ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতায় এলো বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। নির্বাচনের পর দেশব্যাপী শুরু করল তা-ব। সারাদেশে একযোগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ল--ভ-, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী শক্তির নারকীয় তা-ব, হত্যা, ধর্ষণ, উচ্ছেদ, লুণ্ঠন, জোরপূর্বক চাঁদা আদায়, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগসহ এমন কোন হীন কাজ নেই যা ঘটেনি। মানবতা চরমভাবে লঙ্ঘিত হয় তখন। এ ঘটনা প্রতিহিংসার রাজনীতিতে মানবতা লাঞ্ছিত। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ল--ভ-। মহান মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনাবিরোধী শক্তি বাংলাদেশ জুড়ে শুরু করে নারকীয় তা-ব। এদের সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ, সম্পত্তি থেকে উচ্ছেদ, সম্পদ লুণ্ঠন, জোরপূর্বক চাঁদা আদায়, শারীরিক নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের মতো অসংখ্য ঘটনা মানবতা ক্রন্দনরত। বিদীর্ণ বাংলাদেশ। নির্মম। পাশবিক। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাত অর্থাৎ ২০০১ সালের ১ অক্টোবর মধ্য রাত থেকে শুরু হয় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন। সংখ্যালঘুর পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপরও শুরু হয় এই নির্যাতন। নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার অভিযোগে নির্যাতন শুরু হলেও মুহূর্তে এতে নতুনমাত্রা যোগ হয় অসহায় সংখ্যালঘু নারী ধর্ষণ। যুবদল-ছাত্রদলের এই মিশন থেকে রেহাই পায় না আবালবৃদ্ধবনিতা। গর্ভবতী মহিলারাও রক্ষা পায়নি তাদের হাত থেকে। এমনকি সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে পাট ক্ষেতে বাচ্চা প্রসব করার ঘটনাও ঘটে এ সময়। জোট সরকারের পৈশাচিক চেহারা মুহূর্তে প্রকাশ পায় তাদের অনুসারীদের কর্মকা-ে। রাতভর ধরে চলে ধর্ষণ। গ্রাম ঘিরে ধর্ষণে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে এই নরপিশাচরা। একই পরিবারের তিন থেকে পাঁচ সংখ্যালঘু নারী এক সঙ্গে ধর্ষিত হওয়ার ঘটনাও ঘটে। কোথাও মা মেয়ে এক সঙ্গে, কোথাও মা মেয়ের সঙ্গে পুত্রবধূ এবং পুত্রবধূর মাও ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আবার কোথাও স্বামীকে বেঁধে তার ও সন্তানদের সামনে মাকে ধর্ষণ করেছে তারা। অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী থেকে ডিগ্রী পড়ুয়া সংখ্যালঘু মেয়েদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয় যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়েদের তুলে নিয়ে এরা মদ খেয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০০১ সালে ক্ষমতায় এতে তারা দেশব্যাপী সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলে। তারা বাংলাভাইয়ের মতো সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে। এ সম্পর্কিত রিপোর্ট সর্বপ্রথম জনকণ্ঠ প্রকাশ করে। পত্রিকায় বাংলাভাই সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে প্রথমে তারা বলে ‘বাংলাভাই’ জনকণ্ঠের সৃষ্টি।
×