ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কিশোরকে হত্যা ও লাশ গুম মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

কিশোরকে হত্যা ও লাশ গুম মামলায় চার জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব সংবাদদাতা, মানিকগঞ্জ, ২৭ নবেম্বর ॥ এক কিশোরকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ৬ টুকরা করে হত্যা ও লাশ গুমের দায়ে ৪ জনের মৃত্যুদ- ও ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদ- এবং প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ শহীদুল আলম ঝিনুক। মঙ্গলবার দুপুরে বিচারক এই রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিরা হলো- রাকিবুল, সুলতান, সোহেল ও রফিক এবং যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত আসামিরা হলো- রুবেল, সজীব ও আকিবুল। এই মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে শরীফুলকে। হত্যাকা-ের পর থেকে সুলতান ও সজীব পলাতক আছে। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাইরের ধল্লা ইউনিয়নের খাসেরচর গ্রামের খোকন মিয়ার ছেলে অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জহিরুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে যায় বাস্তা গ্রামের সুলতানের বাড়িতে। জহিরুল রাতে বাড়ি না ফেরায় তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করে বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন বিষয়টি থানাকে জানালে পুলিশ ওই দিন বিকেলে সুলতানের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তল্লাশি করে ওই বাড়ি থেকে পুলিশ জহিরুলের মোবাইলের দুটি সিমকার্ড, হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার করে। নিখোঁজের দুই দিন পর ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে সুলতানের বাড়িসংলগ্ন প্রবাসী আবদুল কাইয়ুমের বাড়ির বাথরুমের সেপটি ট্যাঙ্কির ভেতর থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় জহিরুলের গলা ও হাত-পা বিচ্ছিন্ন ৫ টুকরা লাশ পাওয়া যায়। টাঙ্গাইল নিজস্ব সংবাদদাতা টাঙ্গাইল থেকে জানান, চাঞ্চল্যকর শিশু জুয়েল হাসান (৬) হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যুদ- দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে জেলা ও দায়েরা জজ আদালতের বিচারক শওকত হোসেন চৌধুরী এ দ-াদেশ দেন। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। দ-প্রাপ্ত আবদুর রহিম (৪০) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিল মাগুরাটা গ্রামের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে। জানা গেছে, ২০১৬ সালের ১৮ নবেম্বর রাতে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বিল মাগুরাটা গ্রামে ধর্মসভা (ওয়াজ মাহফিল) অনুষ্ঠিত হয়। সভাস্থলের পাশেই নিহত শিশু জুয়েল হাসানের বাবা শহিদুর রহমান ও মা রোজিনা বেগম চায়ের দোকান করেন। ওই চায়ের দোকানে শিশু জুয়েল হাসানও অংশ নেয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে চায়ের দোকান থেকে চলে যায় জুয়েল হাসান। পরে রাত ১টার দিকে ধর্মসভা শেষ হলেও জুয়েল হাসান আর ফিরে না আসায় বাবা মা জুয়েল হাসানকে খুঁজতে থাকে। পরদিন সকাল সাড়ে ৯টায় পাশের এলাকা পিচুরিয়া কবরস্থানের পাশে ধানক্ষেত থেকে চোখ উপড়ে ফেলানো জুয়েলের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। চাঁদপুর নিজস্ব সংবাদদাতা চাঁদপুর থেকে জানান, ফরিদগঞ্জ উপজেলার আলোনিয়া গ্রামে বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকা না দেয়ায় মা আলিমের নেছাকে গলা কেটে হত্যার অপরাধে ছেলে সফিকুর রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা অর্থদ- দিয়েছে আদালত। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় জেলা ও দায়রা জজ জুলফিকার আলী খান এ রায় দেন। হত্যার শিকার আলিমের নেছা ওই গ্রামের সাহাজ উদ্দিনের স্ত্রী এবং যাবজ্জীবন কারাদ- প্রাপ্ত মোঃ সফিকুর রহমান তার ছেলে। উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ভোর ৪টার দিকে বিদেশ যাওয়ার জন্য টাকা না দেয়ায় আসামি সফিকুর রহমান ক্ষিপ্ত হয়ে তার মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। কিছুক্ষণ পরে ওই কক্ষ থেকে শব্দ হলে সাহাজ উদ্দিন ওই কক্ষে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তার স্ত্রীকে দেখতে পান। তিনি চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই আলিমের নেছার মৃত্যু হয়। পরদিন সকালে পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠায়। এই ঘটনায় ওইদিনই বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সাহাজ উদ্দিন ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত করে সন্দেহজনকভাবে নিহতের ছেলে সফিকুর রহমানকে আটক করে। পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালতের কাছে মাকে সে নিজেই হত্যা করেছে মর্মে জবানবন্দী দেয়।
×