ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দাপুটে জয়ে সমতায় ফিরল পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

দাপুটে জয়ে সমতায় ফিরল পাকিস্তান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুবাই টেস্টে ইনিংস ও ১৬ রানের বিশাল জয়ে তিন টেস্টের সিরিজে ১-১এ সমতা ফিরিয়েছে পাকিস্তান। ৫ উইকেটে ৪১৮ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল সরফরাজ আহমেদের দল। জবাবে ৯০ ও ৩১২ রানে অলআউট হয় কেন উইলিয়ামসনের নিউজিল্যান্ড। টম লাথাম, রস টেইলর আর হেনরি নিকোলসের দৃঢ়তাপূর্ণ তিন হাফ সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ইনিংস হারের লজ্জা এড়াতে পারেনি কিউইরা। সব ছাপিয়ে আলোচনায় ইয়াসির শাহ। প্রথম ইনিংসে ৮ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬টিসহ মোট ১৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে সর্বকালের সেরা বোলিংয়ে গ্রেট ইমরান খানের পাশে নাম লিখিয়েছেন এই লেগস্পিনার। অবধারিতভাবে ম্যাচসেরাও হয়েছেন ইয়াসির। আবুধাবিতে সোমবার শুরু সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ৪১ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংস ৬ শিকারের জন্য খরচ করেছেন ১৪৩। অর্থাৎ ১৮৪ রানের বিনিময়ে ম্যাচে ১৪ উইকেট ইয়াসিরের। ১৯৮২ সালে লাহোর টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপেক্ষ ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন ইমরান, ১১৬ রান খরচায়। বর্তমান পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর সেই কীর্তি ছোঁয়ার ম্যাচে দলকে সিরিজে সমতা ফেরানো দারুণ এক জয় এনে দিয়েছেন তুখোড় এ লেগস্পিনার। প্রথম ইনিংসে একটুর জন্য আক্ষেপে পুড়তে হয়েছিল। ৮ উইকেট পেয়েছেন ঠিকই কিন্তু পাকিস্তানের পক্ষে ইনিংসে সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটা যে গড়া হয়নি। সেরা ১৯৮৭ সালে লাহোরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আব্দুল কাদিরের ৫৬ রানে ৯ উইকেট। আর ১৯৭৯ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮৬ রানে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন সরফরাজ নওয়াজ। ইয়াসিরের সামনে হাতছানি ছিল ম্যাচে পাকিস্তানের পক্ষে সেরা বোলিংয়ের নতুন রেকর্ড গড়ার। দ্বিতীয় ইনিংসে রেকর্ড ছুঁতে ৬টি আর ভাঙ্গতে হলে ৭টি উইকেট দরকার ছিল তার। ৩২ বছর বয়সী ঘূর্ণিবোলারকে শেষ পর্যন্ত গ্রেটের পাশে নাম লিখিয়ে যৌথরেকর্ডেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। সরফরাজ আহমেদের দলকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে হলে মঙ্গলবার চতুর্থদিন আরও ১৯৭ রান দরকার ছিল নিউজিল্যান্ডের। সেটি হতে দেননি ইয়াসির। আগের দিন প্রতিরোধ গড়া টম লাথামকে দিনের শুরুতেই ফিরিয়ে দেন পেসার হাসান আলি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে এগোনো অভিজ্ঞ টেইলরকে ফাঁদ পেতে বিদায় করেন বিলাল আসিফ। বাঁহাতি স্পিনারকে সুইপ করতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে ইয়াসিরের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় টেইলরের ৭ চার ও ১ ছক্কায় গড়া ৮২ রানের আকর্ষণীয় ইনিংসটি। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কিপার বিজে ওয়াটলিংও। কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে আবার বোল্ড করে ফেরান হাসান। ইনিংস ব্যবধানে পরাজয় ঠেকাতে প্রায় একাই দলকে টানছিলেন নিকোলস। বোল্ড করে ১৮৭ বলে ৭৭ রান করা এই মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানের প্রতিরোধ ভাঙ্গেন হাসান। তিনি নেন ৩ উইকেট। দাপুটে জয়ে সন্তুষ্ট পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ ম্যাচের নায়ক ইয়াসির ও দুই সেঞ্চুরিয়ান হারিস সোহেল আর বাবর আজমকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। স্কোর ॥ পাকিস্তান প্রথম ইনিংস ॥ ৪১৮/৫ ডিক্লেয়ার (১৬৭ ওভার; ইমাম ৯, হাফিজ ৯, আজহার ৮১, হারিস ১৪৭, শফিক ১২, বাবর ১২৭*, সরফরাজ ৩০*; গ্রান্ডহোম ২/৪৪, আইজাজ ১/১২০, বোল্ট ১/১০৬)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস ॥ ৯০/১০ (৩৫.৩ ওভার; রাভাল ৩১, লাথাম ২২, উইলিয়ামসন ২৮*, টেইলর ০, নিকোলস ০, ওয়াটলিং ১, গ্রান্ডহোম ০, সোধি ০, ওয়াগনার ০, আইজাজ ০, বোল্ট ০; হাসান ১/২৫, ইয়াসির ৮/৪১) ও দ্বিতীয় ইনিংস ॥ (ফলোঅন) ৩১২/১০ (১১২.৫ ওভার; লাথাম ৫০, টেইলর ৮২, নিকোলস ৭৭, ওয়াটলিং ২৭, ডি গ্র্যান্ডহোম ১৪, সোধি ৪, ওয়াগনার ১০, আইজাজ ৫*, বোল্ট ০; আব্বাস ০/২৯, হাসান ৩/৪৬, ইয়াসির ৬/১৪৩, হাফিজ ০/৬, বিলাল ১/৬১, হারিস ০/১৬)। ফল ॥ পাকিস্তান ইনিংস ও ১৬ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ॥ ইয়াসির শাহ (পাকিস্তান)। সিরিজ ॥ তিন টেস্ট ১-১এ চলমান।
×