ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কের্চ প্রণালী খুলে দিয়েছে রাশিয়া

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ২৮ নভেম্বর ২০১৮

কের্চ প্রণালী খুলে দিয়েছে রাশিয়া

প্রায় ২৪ ঘণ্টার অচলাবস্থার পর জাহাজ চলাচলের জন্য ক্রিমিয়ার কাছের কের্চ প্রণালী খুলে দিয়েছে রাশিয়া। তবে আটক ইউক্রেনের জাহাজগুলো ছেড়ে দেয়ার আন্তর্জাতিক আহ্বান রাশিয়া প্রত্যাখ্যান করেছে। এ ঘটনায় ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার অধিকৃত ক্রিমিয়া উপকূলে ইউক্রেন নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজ আটক করেছে রাশিয়া। জাহাজগুলো জব্দ করার আগে সেগুলোর দিকে গুলি ছুড়ে কয়েক ইউক্রেনীয় নাবিককে আহত করেছে রুশ নিরাপত্তা বাহিনী। এর আগে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর থেকে আজোভ সাগরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখতে ক্রিমিয়ার কাছের কের্চ প্রণালী বন্ধ করে দিয়েছিল। ইউক্রেনের জাহাজ আটকের পর সোমবার সকালের দিকে রাশিয়া এ প্রণালী ফের খুলে দিয়েছে। প্রণালীর উপরকার সেতুর নিচ থেকে ট্যাঙ্কার সরিয়ে নিয়েছে তারা। কের্চ প্রণালীর উপরের সেতুটি রাশিয়ার মূল ভূখ-ের সঙ্গে অধিকৃত ক্রিমিয়াকে সংযুক্ত করেছে। কৃষ্ণ সাগর থেকে ইউক্রেনের কোন জাহাজ আজোভা সাগরে যেতে হলে এই সেতুর নিচ দিয়েই যেতে হয়। অবৈধভাবে জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগ তুলে রবিবার রাশিয়া কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেনের দুটি গানবোট এবং একটি টাগবোট জব্দ করে। এ নিয়ে প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। শুরুতে ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের নৌযানে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগ তোলে। জবাবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়, আগে থেকে না জানিয়ে তাদের জলসীমায় গানবোট পাঠিয়ে ইউক্রেন ইচ্ছা করে ‘যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি’ করেছে। ইউক্রেনের জাহাজগুলো আটকাতে রাশিয়া ওই দিন কের্চ প্রণালীর সেতুর নিচে ট্যাঙ্কার রেখে সেখান দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়। সোমবার দিনের শুরুতে রাশিয়ার এফএসবি নিরাপত্তা বিভাগ জানায়, তাদের সীমান্ত টহল বোটগুলো কৃষ্ণ সাগরে ইউক্রেন নৌবাহিনীর জাহাজগুলো জব্দ করেছে এবং সেগুলো থামাতে অস্ত্র ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় ইউক্রেনের তিন নাবিক আহত হন। তাদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং তারা আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে এফএসবি। জাহাজগুলো কোন আইন ভঙ্গ করেনি দাবি করে রাশিয়া সামরিক আগ্রাসন চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। রাশিয়াকে শাস্তি দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে তারা। রাশিয়ার অনুরোধে সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ ঘটনাটি নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার সহকারী রাষ্ট্রদূত দিমিত্রি পোলিয়ানস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পেত্রো পোরোশেঙ্কো সামরিক বাহিনী ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পোরোশেঙ্কো জানিয়েছেন, দেশে সামরিক আইন জারির জন্য পার্লামেন্টের কাছে প্রস্তাব রাখবেন তিনি। ক্রিমিয়াকে নিজেদের সীমান্তভুক্ত করে নেয়া ও ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে মস্কোপন্থী বিদ্রোহীদের সমর্থন দেয়াকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সম্পর্ক আগে থেকেই নাজুক হয়ে আছে, এর মধ্যে এ ঘটনা দেশ দুটিকে বৃহত্তর সংঘাতের দিকে ঠেলে দেয়ার ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষদের। ইউক্রেন তাদের আটক নৌজাহাজ ফেরত চেয়েছে এবং নাবিকদের মুক্তি দাবি করেছে।
×