ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যথা যখন বন্ধু

প্রকাশিত: ০৬:৫৯, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

ব্যথা যখন বন্ধু

আমাদের সাধারণ প্রবৃত্তি হলো ব্যথা হলেই ব্যথানাশক খেয়ে নেয়া। আমরা কখনও ভেবে দেখেছি কি ব্যথা কেন হয়? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যথা আমাদের উপকারি বন্ধু, অনেক শারীরিক অসামঞ্জস্যই ব্যথার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আমাদের শরীরে কোন কারণে প্রদাহ সৃষ্টি হলে ব্যথা হয়। ব্যথা একটি জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়া যা শরীর থেকে স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে সিগন্যাল পৌঁছে দেয় যা আমরা অনুভব করতে পারি। শরীরে প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হরমোন বিদ্যমান যা ছোটখাটো ব্যথাকে আমাদের মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌঁছতে দেয় না। অর্থাৎ যে ব্যথা আমরা অনুভব করি তা অতি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত। ব্যথানাশকের কাজ হলো স্নায়ুকে ব্লক করে দিয়ে ব্যথার অনুভূতি মস্তিষ্কে পৌঁছাতে না দেয়া। তাই ব্যথানাশক সেবন ব্যথার প্রকৃত কারণকে আড়াল করতে পারে। ব্যথার কারণ নির্ণয় : প্রাথমিক পর্যায়ে ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রেই জটিলতা এড়ানো যায়। যেমন ধরুন কোমর ব্যথা। আমাদের বেশিরভাগ তীব্র কোমর রোগীই রোগ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, কোমরে তীব্র ব্যথা হওয়ার কয়েক মাস আগে থেকেই হালকা ব্যথা অনুভূত হতো যা তিনি ব্যথানাশক সেবন করে দমিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু এখন আর ব্যথানাশকে কাজ হচ্ছে না। এইসব ক্ষেত্রে এম আর আই করে দেখা যায় রোগীটি জটিল ধরনের ডিস্ক প্রল্যাপ্স বা পি এল আই ডি তে আক্রান্ত। অর্থাৎ দুই কশেরুকার মধ্যবর্তী ডিস্কটি বের হয়ে স্নায়ুর ওপর প্রচ- চাপ সৃষ্টি করার আগে বার বার ব্যথা তৈরি করে শরীরকে সংকেত দিয়েছে। এক্ষেত্রে রোগী ব্যথানাশক সেবন করে ব্যথাকে দমিয়ে না দিলে হয়ত এই ব্যাপক প্রল্যাপ্স প্রতিহত করা যেত। ব্যথানাশকের বিকল্প কী : ব্যথার কারণ নির্ণয় হলো ব্যথার চিকিৎসার মুল স্তম্ভ। কারণ নির্ণয় করতে পারলে নানা ধরনের চিকিৎসার মাধ্যমে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন ধরুন, একজন ঘাড় ব্যথার রোগী উঁচু বালিশে ঘুমান। এটিই যদি তার ঘাড় ব্যথার মূল কারণ হয়ে থাকে তবে বালিশ পরিবর্তনেই তার ব্যথা নিয়ন্ত্রণ হয়ে যেতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাপারটি এতটা সহজ নাও হতে পারে। যেমন অস্টিও আথ্রাইটিস যদি হাঁটু ব্যথার কারণ হয় তবে তা নিয়ন্ত্রণে ইলেক্ট্রোথেরাপি এমন কি ইনজেকশনের মাধ্যমে সোডিয়াম হায়ালুরোনেট প্রয়োগ পর্যন্ত করতে হতে পারে। সবই নির্ভর করে রোগের তীব্রতার ওপর। তবে এক কথা নির্দিধায় বলে দেয়া যায় যে সামান্য ব্যথাকে অবহেলা না করে কারণ নির্ণয় করে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে চিকিৎসা খরচ ও জটিলতা দুটোই খুব সফলতার সঙ্গে এড়ানো যায়। ডাঃ মোহাম্মদ আলী বিভাগীয় প্রধান, ফিজিওথেরাপি বিভাগ উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল উত্তরা, ঢাকা। মোবাইল : ০১৮৭২ ৫৫৫ ৪৪৪
×