ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রুটিপূর্ণ ইমপ্লান্ট ॥ মাসুল গুনছে রোগীরা

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

ত্রুটিপূর্ণ ইমপ্লান্ট ॥ মাসুল গুনছে রোগীরা

ত্রুটিপূর্ণ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য রোগীদের ক্ষতি হচ্ছে। কোন নির্দিষ্ট দেশে নয়, প্রায় সব দেশেই এমন হচ্ছে। আইন কানুনের দুর্বলতা ও ত্রুটিপূর্ণ পরীক্ষা নিরীক্ষা যার অন্যতম কারণ। দেখা গেছে চিকিৎসা ব্যবস্থা বিভিন্ন ত্রুটির জন্য প্রতিস্থাপন রোগীদের যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগী মারাও যাচ্ছে। -গার্ডিয়ান কৃত্রিম প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে পেসমেকার, আর্টিফিসিয়াল হিপ, কন্ট্রাসেপটিভ ও ব্রেস্ট ইমপ্লান্ট সবচেয়ে বেশি করা হয়। এসব রোগীরাই সাধারণত সবচেয়ে বেশি অপারেশন পরবর্তী জটিলতায় ভুগে থাকেন। শারীরিক সমস্যা থেকে রেহাই পেতে অনেক সময় তারা ফের অপারেশন করান। অনেক ক্ষেত্রে রোগী মারা যায়। ইমপ্লান্ট সামগ্রী বাজারজাত করার আগে ঠিকমতো পরীক্ষা নিরীক্ষা করাও হয় না। সমীক্ষায় দেখা গেছে, কেবল যুক্তরাজ্যে ২০১৫ থেকে ১৮ সালের মধ্যে ইমপ্লান্ট সামগ্রীতে ৬২ হাজার ত্রুটি ধরা পড়েছে। ত্রুটিপূর্ণ সামগ্রী প্রতিস্থাপন করা রোগীদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জটিল শারীরিক সমস্যা নিয়ে পরবর্তীতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছেন। এসব রোগীদের মধ্যে ১ হাজার ৪ জন মারা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) গত এক দশকে ৫৪ লাখ ত্রুটিপূর্ণ ইমপ্লান্ট সামগ্রীর হিসাব দিয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ সামগ্রীর বেশিরভাগই বাইরে বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করা হয়েছে। ত্রুটিপূর্ণ ইমপ্লান্ট সামগ্রী ব্যবহারের ফলে অপারেশনের পর ১৭ লাখ রোগীর বিভিন্ন রকম শারীরিক জটিলতা হয়েছে বলে জানা গেছে। যাদের মধ্যে ৮৩ হাজার মারা গেছে। প্রায় ৫ লাখ রোগী পুনরায় অপারেশন করে ত্রুটিপূর্ণ ওই সামগ্রী অপসারণ করেছেন। ৩৬টি দেশের ৫৯টি মিডিয়া আউটলেটের ২৫২ জন সাংবাদিকের সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে এফডিএ ওই মূল্যায়নটি করেছে। বিশ্বজুড়ে কৃত্রিম ইমপ্লান্টের ৪শ’ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা হয়ে থাকে। এসব সামগ্রীর যথাথভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে বাজারে ছাড়ার জন্য রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা রোগীদের শারীরিক অবস্থা ঠিকমতো যাচাই না করে ইমপ্লান্ট করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। ব্রিটেনের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসের প্রধান প্রফেসর ডেরেক এলডারসন বলেছেন, ত্রুটিপূর্ণ ইমপ্লান্ট সামগ্রী ব্যবহারের ফলে সাধারণ মানুষ যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাতে এ বিষয়ে আইন কানুন পরিবর্তন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। প্রতিটি ইমপ্লান্টের বিস্তারিত তথ্য জাতীয় নিবন্ধনে তালিকাভুক্ত করতে হবে।
×