ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সিআইএর মূল্যায়নে সন্দেহ সিনিয়র সৌদি শাহজাদার

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ২৬ নভেম্বর ২০১৮

সিআইএর মূল্যায়নে সন্দেহ সিনিয়র সৌদি শাহজাদার

তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটের ভেতর সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যায় যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান নির্দেশ দিয়েছিলেন, সিআইএর এই মূল্যায়ন নির্ভরযোগ্য হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের সিনিয়র শাহজাদা তুর্কী আল ফয়সাল। শনিবার আবুধাবিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন। খবর আরব নিউজের। সৌদি গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান শাহজাদা তুর্কী বলেন, পরিস্থিতির মূল্যায়নে সিআইএর নির্ভুলতা সর্বোচ্চ মানের নয়। এ রকম অনেক উদাহরণ আছে। রাজপরিবারের এ প্রভাবশালী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতও ছিলেন। সিআইএর মূল্যায়নের ওপর সন্দেহের কথা জানাতে গিয়ে ২০০৩ সালের মার্কিন আগ্রাসনের আগে ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্র বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনের দিকেও ইঙ্গিত করেন শাহজাদা তুর্কী। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সে সময় ইরাকে ব্যাপক প্রাণঘাতি অস্ত্র থাকতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিল; পরে তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। নিউইয়র্কভিত্তিক বৈরুত ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শাহজাদা তুর্কী আরও বলেন, সেটি ছিল বড় ধরনের ভুলের জাজ্বল্য প্রমাণ। যা একটা পুরো মাত্রার যুদ্ধ ও হাজার হাজার লোককে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কেন সিআইএকে কাঠগড়ায় দাঁড় করায় না, তার কারণ খুঁজে পাই না আমি। ইস্তানবুলের কনসুলেটে কী হয়েছে, কে কী করেছে, কে দায়ী, কে নয়, এ বিষয়ে এটিই আমার উত্তর। গতমাসে তুরস্কের সৌদি কনসুলেটের ভেতরে সাংবাদিক খাশোগিকে হত্যায় যুবরাজের নির্দেশ বিষয়ক সিআইএর মূল্যায়নের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। খাশোগি এ মার্কিন সংবাদমাধ্যমেই কলাম লিখতেন। সিআইএ তার মূল্যায়নের বিস্তারিত প্রেসিডেন্ট, কংগ্রেসসহ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অন্যান্য অংশকে জানিয়েছে বলে গত সপ্তাহে বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছিল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তাদের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা খাশোগি হত্যাকান্ড নিয়ে কোন উপসংহারে পৌঁছায়নি। তবে কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়ে ধারণা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের একটি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুবরাজ বিন সালমানই যে খাশোগিকে ‘নিশ্চুপ’ করিয়ে দিতে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, সে সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ডিং সিআইএর কাছে আছে বলে সংস্থাটির পরিচালক জিনা হাসপেল তুর্কী কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গত ২ অক্টোবর ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর খাশোগিকে মেরে ফেলতে সৌদি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকেই নির্দেশ এসেছিল বলে অভিযোগ আঙ্কারার। প্রথমে রিয়াদ এ বিষয়ে পরস্পরবিরোধী কথা বললেও শেষে জানায়, খাশোগিকে সৌদিতে নিয়ে যেতে রাজি করানোর চেষ্টার এক পর্যায়ে ওই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে; পরে তার মৃতদেহও সরিয়ে ফেলা হয়। সৌদি সরকারী কৌঁসুলিরা এরই মধ্যে খাশোগি হত্যাকান্ডের দায়ে অভিযুক্ত পাঁচ সন্দেহভাজনের মৃত্যুদন্ড চেয়ে আবেদন করেছেন বলেও জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা। হত্যাকান্ড সম্পর্কে যুবরাজ কোনভাবেই অবগত ছিলেন না বলেও দাবি সৌদি কৌঁসুলিদের। ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট খাশোগি হত্যার ঘটনাটি সৌদি আরবকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সঙ্কটে ফেলেছে বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের।
×