ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন প্রধানমন্ত্রী

আমজাদ হোসেনকে থাইল্যান্ডে নেয়া হতে পারে আজ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ২৬ নভেম্বর ২০১৮

আমজাদ হোসেনকে থাইল্যান্ডে নেয়া হতে পারে আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব আমজাদ হোসেনকে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নেয়া হতে পারে আজ। তার চিকিৎসার কাগজপত্র ব্যাঙ্ককের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে আমজাদ হোসেনের বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল জানিয়েছেন, সেখানকার চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা। দোদুল বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। তবে সোমবার তাকে থাইল্যান্ডে নেয়া যাবে কিনা সেটা নির্ভর করছে বামরুনগ্রাদ হাসপাতালের ডাক্তারদের সিদ্ধান্তের ওপর। আমজাদ হোসেনের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গতকাল আব্বার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এখনও কোন উন্নতি হয়নি। প্রায় ছয় ঘণ্টার মতো ডায়ালাইসিসে ছিলেন। শরীর থেকে দেড় লিটারের মতো পানি বের করা হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থার সবশেষ রিপোর্ট থাইল্যান্ডে মেইল করা হয়েছে; ডাক্তাররা আব্বার শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাকে সেখানে নেয়ার মতো অবস্থা আছে কিনা। এদিকে আমজাদ হোসেনকে থাইল্যান্ডে নেয়াসহ তার চিকিৎসার সব ব্যয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহন করবেন বলে প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে পাঠানোর এয়ার এ্যাম্বুলেন্স ভাড়াসহ একুশে পদক বিজয়ী চিত্রপরিচালক আমজাদ হোসেনের সকল চিকিৎসার ব্যয় বহন করবেন। এছাড়া আমজাদ হোসেনের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন বলেও জানান উপ- প্রেসসচিব। গত ১৮ নবেম্বর সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে তেজগাঁওয়ের ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আমজাদ হোসেনকে। সেখানকার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার মহিউদ্দিন মাজেদ চৌধুরী এর আগে জানিয়েছিলেন, তার বড় ধরনের স্ট্রোক হয়েছে। মাথার মধ্যে রক্তনালী সংকুচিত হয়ে গেছে। আমজাদ হোসেনের অসুস্থতার খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার তার দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমানকে নিজের কার্যালয়ে ডেকে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খ্যাতিমান এই চিত্রপরিচালকের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। ১৯৪২ সালের ১৪ অগাস্ট জামালপুরে জন্ম নেয়া আমজাদ হোসেন চিত্র পরিচালনার বাইরে লেখক, গীতিকার, অভিনেতা হিসেবেও পরিচিত। ১৯৬১ সালে ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে রুপালি পর্দায় তার আগমন। পরে অবশ্য চিত্রনাট্য রচনা ও পরিচালনায় বেশি সময় দেন। ১৯৬৭ সালে মুক্তি পায় তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘খেলা’। সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ‘জীবন থেকে নেয়া’র চিত্রনাট্য লেখায় জহির রায়হানের সঙ্গে আমজাদ হোসেনও ছিলেন। তার ‘নয়নমনি’, ‘ভাত দে’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘কসাই’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রও দর্শক ও বোদ্ধামহলের প্রশংসা পেয়েছে। তার লেখা ও নির্মিত টিভি নাটকও জনপ্রিয়তা পায়। গান লেখায়, চিত্রনাট্যে ও পরিচালনায় চারবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। এছাড়া তিনি একুশে পদকেও ভূষিত হয়েছেন।
×