ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিইসিকে সরিয়ে অন্য কাউকে নিয়োগ না দিলে আইনী ব্যবস্থা

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২৬ নভেম্বর ২০১৮

 সিইসিকে সরিয়ে অন্য কাউকে নিয়োগ না দিলে আইনী ব্যবস্থা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ মন্তব্য করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, তাকে সরিয়ে অন্য কাউকে নিয়োগ দেয়া না হলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামে যোগ দেন একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালামসহ আরও কয়েকজন। ড. কামাল বলেন, সম্প্রতি তিনি (সিইসি) বলেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার নির্দেশেই কাজ করছে। তাহলে নিশ্চয়ই তার নির্দেশেই নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আমি জানতে চাই, এমনটা তিনি কেন করছেন? তিনি বলেন, ‘সিইসির ওপর প্রথম থেকেই আমরা সন্তুষ্ট ছিলাম না। তার পরিবর্তে একজন বিশ্বাসযোগ্য লোককে আনতে হবে। উনি বয়স্ক লোক, সিনিয়র অফিসার ছিলেন। আমি ওনাকে আবারও বলছি, এখনও সময় আছে, এতদিন যা করেছেন, এখন থেকে পরিবর্তন হন। তা না হলে তার রিপ্লেস করা হোক। আমরা ওনার রিমুভ (সরিয়ে দেয়া) চাই না। ওনার রিপ্লেস (বদলি) চাই। ড. কামাল বলেন, আমরা একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষা করছি। জনগণ দেশের মালিক। ভোটে তাদের নেতা নির্বাচনের সুযোগ দেয়া উচিত। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্তরায় বর্তমান ধরপাকড়। এখনই পাইকারি হারে গ্রেফতার বন্ধ হওয়া দরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উচিত ধরপাকড় না করে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন সরকারের বাহিনী না, তারা রাষ্ট্রের বাহিনী সবার বাহিনী। নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ ইভিএমের ব্যবহার বাতিল করেছে। এটা নির্ভরযোগ্য না। এটাতে বিশেষ কায়দা করলে এক জায়গার ভোট অন্যজনের ওপর পড়তে পারে, চেকও করা যায় না। এটা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না।’ সংবাদ সম্মেলনে সরকারী দলের প্রার্থীদের আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারের বিষয়ে বক্তব্য দেন গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে পরিস্থিতি সৃষ্টির কথা ছিল, নির্বাচন কমিশন তা করতে পারেনি। গণভবন, মন্ত্রীদের বাসা ও সরকারী অফিস সরকার দলীয়রা রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধি ১৪/১, ১৪/২ এর লঙ্ঘন। নির্বাচন কমিশনের এতে কোন ভূমিকা নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন হাজার হাজার লোককে গ্রেফতার করছে, মামলা দিচ্ছে। গ্রেফতাররা যাতে জামিন না পায় সেজন্য বিচার বিভাগকে ব্যবহার করছে। সরকার দলীয়রা পুলিশ প্রটোকল নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছে। অথচ বিরোধীরা প্রচার চালালে, ঘরোয়া বৈঠক করলে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত ১৩ অক্টোবর বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে আরও চারটি দলের সমন্বয়ে কামাল হোসেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের ঘোষণা দেন। এ ফ্রন্টে বিএনপি ছাড়া অন্য চারটি দল হচ্ছে, জেএসডি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য ও জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। পরে এ ফ্রন্টে যুক্ত হয় কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া, জেনারেল (অব.) আ ম সা আ আমিন এবং একুশে টেলিভিশনের সাবেক মালিক আবদুস সালাম গণফোরামে যোগ দেন। এদিন এ কে খন্দকারের আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। কামাল হোসেন বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিরপেক্ষ হচ্ছে না। তাই তার জায়গায় অন্য কাউকে নিয়োগ দেয়া হোক। আর তা না হলে আমরা আইনী পদক্ষেপ নেব। তিনি বলেন, যারা আদিষ্ট হয়ে কাজ করে তারা সংবিধান লঙ্ঘন করছে। এদের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
×