ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গণফোরামে যোগদান করেই আলোচনায় আমসাআ আমিন

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

 গণফোরামে যোগদান  করেই আলোচনায়  আমসাআ আমিন

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ সাবেক সেনা কর্মকর্তা, কুড়িগ্রাম-২ আসনে ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেজর জেনারেল আমসাআ আমিন (অব) হঠাৎ গণফোরামে যোগদান করায় কুড়িগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। মনোনয়ন অনিশ্চিত দেখে তিনি শনিবার দুপুরে ঢাকায় গণফোরামে যোগদান করেই দলের মনোনয়ন ফরম কেনেন। ধারণা করা হচ্ছে তিনি এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হচ্ছেন। এদিকে আওয়ামী লীগ থেকে ঐক্যফ্রন্টে যোগদানকে কেন্দ্র করে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা এ খবরে মুষড়ে পড়েছেন। পূর্বে কোন আলোচনা ছাড়াই আমসাআ আমিনের নাটকীয় যোগদানের কারণে দলের সাধারণ নেতা-কর্মীরা এ নিয়ে অনেকটা অন্ধকারে। আসন্ন নির্বাচনে কুড়িগ্রাম-২ আসনে (কুড়িগ্রাম সদর, ফুলবাড়ি ও রাজারহাট) বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন দলের জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু বকর সিদ্দিক, সাবেক সাংসদ উমর ফারুক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ। গত কয়েক দিন ধরে এই তিন প্রার্থী মাঠে বেশ সক্রিয় আছেন। এ ব্যাপারে সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ বলেন, ‘শনিবার সকাল পর্যন্ত নিশ্চিত ছিলাম আমি দল ও জোটের প্রার্থী হচ্ছি। দীর্ঘদিন ধরে আমি মাঠে দলকে সংগঠিত করার কাজ করছিলাম। কিন্তু আকস্মিক এই যোগদানের খবরে আমরা অনেকটা হতাশ। তারপরেও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে।’ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘মনোনয়ন বোর্ডেই বলা হয়েছিল, আপনাদের মধ্যে অথবা বাইরে থেকে কাউকে প্রার্থী করা হলে মেনে নিতে হবে। তাই বৃহত্তর স্বার্থে দলের যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।’ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগ থেকে আমসাআ আমিনের গণফোরামে যোগদানের কারণে আওয়ামী লীগের কোন ক্ষতি হবে না বলে দাবি করে বলেন, বরং এতে আওয়ামী লীগ লাভবান হবে। কারণ তিনি জনবিচ্ছিন্ন, এলাকার সঙ্গে কোন যোগাযোগ নেই। আর এ কারণেই জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ হারাতে হয়েছিল। এছাড়া বিএনপির মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা কোন দিনই তাকে স্বাভাবিকভাবে বরণ করবে না। এর আগে তাজুল ইসলাম চৌধুরীও জাপা থেকে বিএনপিতে যোগ দিয়ে নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছিলেন। একই পরিণতি অপেক্ষা করছে আমসাআ আমিনের ক্ষেত্রেও।’ ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আমসাআ আমিন (অব) আওয়ামী লীগে হঠাৎ যোগ দিয়ে কুড়িগ্রাম-২ আসনে দলের মনোনয়ন পেয়ে চমক সৃষ্টি করেন। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী তাজুল ইসলাম চৌধুরীর কাছে ১৭ হাজার ভোটে পরাজিত হন। ২০০৩ সালে তিনি দলের জেলা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালের উপ-নির্বাচনে তিনি দলের মনোনয়ন পাননি। পরে তাকে কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের প্রশাসক পদে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু পরে তিনি জেলা পরিষদ নির্বাচনের আগেই এই পদ থেকে পদত্যাগ করেন। সেই থেকে রাজনীতিতে অনেকটা নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। মাঝে মধ্যে মাদকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন নিয়ে তাকে সভা করতে দেখা গেছে। এছাড়া ঢাকা ও দেশের বাইরে পড়ে থাকতেন। এ বিষয়ে তার মুঠোফোনে ০১৫৫৫০০০১১১ নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তার প্রতিক্রিয়া জানা সম্ভব হয়নি।
×