ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রয়েছে ॥ সিইসি

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

 সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রয়েছে ॥ সিইসি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রয়েছে। নির্বাচনে পুলিশ প্রশাসনও কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইসির কথা পুলিশ প্রশাসন প্রতিপালন করছে। ইসির নির্দেশ ছাড়া পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা। শনিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচনে দায়িত্বপালনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশে ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। গত ৮ নবেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনে মুখ্য দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে নিয়মিত ব্রিফিং করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। ১৩ নবেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তাদের মাধ্যমে এই ব্রিফিং শুরু হয়। এরপর ধারাবাহিকভাবে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ কর্মকর্তা, নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে ব্রিফিং সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করবেন তাদের উদ্দেশে ব্রিফিং। এদিন ঢাকায় ময়মনসিংহসহ ১৮ জেলার ম্যাজিস্ট্রেটরা ইসির ব্রিফিংয়ে অংশ নেন। এ সময় আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তবে ব্রিফিংয়ের শুরুর পরপরই সাংবাদিকদের অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার নির্দেশ দেয়া হয়। আগের সব ব্রিফিং অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা অংশ নিলেও এদিন তাদের থাকতে দেয়া হয়নি। সাধারণত শুরু থেকেই এ ধরনের বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার উদ্বোধনী বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত গণমাধ্যম কর্মীরা সভাকক্ষের ভেতরেই থাকেন। শনিবারের বৈঠকেও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হলেও তাতে সায় দেয়নি ইসি। অনুষ্ঠান ত্যাগের নির্দেশনা পাওয়ায় গণমাধ্যম কর্মীরা অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে আসেন। পরে অবশ্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন। গত কয়েকদিন ধরেই ইসিতে সরকারী দলের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ এবং তফসিল ঘোষণার পরও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয়ে অভিযোগ করে আসছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, পুলিশ প্রশাসন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কমিশনের কথা মতোই তারা চলছে। নির্বাচনে সব দলের জন্য লেভেল ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ রয়েছে। আইন মতোই এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। দলীয় সরকারের অধীনে ভোট হলেও স্থানীয় প্রশাসনও ইসির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। একটি বিশেষ সভা করে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছি। তারা আমাদের কথা দিয়েছে এবং সে অনুযায়ী তারা কাজ করছে। এখানে সরকারের কোন নির্দেশ নেই। নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের নির্দেশ মাঠে যায় এবং সেটাই প্রতিফলিত হয় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নির্বাচন পরিচালনা করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য রিটার্নিং অফিসারদের জেলা-উপজেলা ও নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক দায়িত্ব প্রদান করে থাকে ইসি। রিটার্নিং অফিসাররা আবার সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিজাইডিং অফিসারদের মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে থাকে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের সহযোগিতা করবেন। এসব বিষয়সহ আইনের বিভিন্ন বিধিবিধান সম্পর্কে তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরে অবশ্য তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিং অনুষ্ঠান থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের বের করে দেয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি। গণমাধ্যম কর্মীদের অনুষ্ঠানের প্রথম অংশে থাকতে দিলে ভাল হতো। আগামীকালও (আজ) একই ধরনের বৈঠক আছে। সেখানে গণমাধ্যম কর্মীরা থাকবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিইসি নুরুল হুদা। ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মোঃ রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক। ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৩০ ডিসেম্বর রবিবার নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার প্রথম দলীয় সরকারের অধীনে সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। তাই ইসির পক্ষ থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে এসব কর্মকর্তাদের কঠোর নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৮ নবেম্বর প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। ২ ডিসেম্বর এসব মনোনয়পত্র যাচাই-বাছাই করা হবে। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহরের পর প্রার্থীরা নির্বাচনের মাঠে নামবেন। ৩০ ডিসেম্বর ভোটে জয়-পরাজয় নির্ধারণ হবে।
×