ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠক

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

 আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজ রবিবার কিংবা আগামীকাল সোমবারের মধ্যে আওয়ামী লীগ শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে যাচ্ছে। শনিবার মহাজোট শরিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, শরিক বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে ৬৫ থেকে ৭০টি আসন ছাড়তে চায় আওয়ামী লীগ। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আলোচনা করছি, ১৪ দল ও জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য শরিক দলের সঙ্গেও আমরা কথা বলেছি। এখন আসন ভাগাভাগির বিষয়টি আলাপ-আলোচনার পর্যায়ে আছে। কাল-পরশুর মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। কোন দল কত আসন পাচ্ছে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। শরিকদের কতটি আসন দেয়া হবে- জানতে চাইলে কাদের বলেন, ৬৫ থেকে ৭০টির বেশি আসন দেয়া হচ্ছে না। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নবেম্বর। এর আগেই রাজনৈতিক দলগুলোকে আসন ভাগাভাগি ছাড়াও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে। বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট ডাঃ অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট, বিভিন্ন ইসলামী দল এবং ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার তৃণমূল বিএনপিও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিক হচ্ছে। আসন চাওয়ার ক্ষেত্রে বড় শরিকদের মধ্যে জাতীয় পার্টি ৭০, জাসদ এবং ওয়ার্কার্স পার্টি ১৫টি করে, যুক্তফ্রন্ট ৩০টি চাইছে। এ ছাড়াও ইসলামী দলগুলো নিজেদের প্রার্থীর জন্য নির্বাচনে আসন চাইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে শরিক দলগুলো কে কোন আসন চায় কেন চায় তার একটি লিখিত ব্যাখ্যা তুলে ধরা হয়। তবে বৈঠকে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। বৈঠকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, তিনি কথা বলে এ বিষয়ে জানাবেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতারাও স্পষ্ট কোন আভাস দেননি। তাদের সকলেই বলেছেন, আলোচনা চলছে, চূড়ান্ত না হাওয়া পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা ১৫টি আসন চেয়েছি। কেন চেয়েছি তার একটি লিখিত ব্যাখ্যা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে দেয়া হয়েছে। এর আগে আমাদের ছ’টি আসন ছিল এখনতো বেশি চাইতেই পারি। বৈঠকে কোন সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে বলেন, কথা বলে আমাদের জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। এদিকে শনিবার সকালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তিনিও বলেছেন জাতীয় পার্টি চাহিদা মতো আসন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী। রুহুল আমিন বলেন, তবে আসনের দাবিকে কম গুরুত্ব দিয়েই আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে চায় জাতীয় পার্টি। হাওলাদার বলেন, যেসব আসন আমরা চাই, সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য নির্ভুল পথে চলতে হবে, এখানে আবেগের সুযোগ নেই। বিএনপি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বয়কট করলে জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচন করে। বিএনপির বদলে দেশের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে পাঁচ বছর সংসদে ছিল জাতীয় পার্টি। এর আগে ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট বেঁধেই অংশ নিয়েছিল। এবার বিএনপি ভোটে আসায় আবার মহাজোটে ফিরে এসেছে জাতীয় পার্টি। ২০০৮ সালে ২৭টি আসনে জয়ী জাতীয় পার্টির এখন সংসদে আসন রয়েছে ৩৪টি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে অন্তত ৪০টি আসন আওয়ামী লীগের কাছে জাতীয় পার্টি পাবে বলে আশা করছেন দলের নেতাকর্মীরা। যদিও জাতীয় পার্টি মহাজোটের শরিক হিসেবে ৭০ আসন দাবি করেছে। আলোচনায় হাওলাদারের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, মুজিবুল হক চুন্নু, কাজী ফিরোজ রশীদসহ আরও তিন নেতা। এর বাইরেও ওয়ার্কার্স পার্টি, যুক্তফ্রন্ট ছাড়াও অন্যদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে আওয়ামী লীগের।
×