ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্ষতি কয়েক হাজার কোটি ডলার

প্রকাশিত: ০৪:০৬, ২৫ নভেম্বর ২০১৮

 ক্ষতি কয়েক হাজার কোটি ডলার

যুক্তরাষ্ট্রের একটি সরকারী প্রতিবেদন হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতন না হলে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চতুর্থ ন্যাশনাল ক্লাইমেট এ্যাসেসমেন্টে বলা হয়েছে, ভবিষ্যত ঝুঁকি নির্ভর করছে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর । বিবিসি ও এএফপি। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন জীবাশ্ম জ্বালানির পর যেভাবে জোর দিচ্ছে প্রতিবেদনটি তার প্রতি একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা। এতে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে কিনা তা নির্ভর করছে আজকের নেয়া সিদ্ধান্তের ওপর। বর্তমানে যে হারে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে সেটি অব্যাহত থাকলে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ কয়েকটি খাতে বার্ষিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে শত শত কোটি মার্কিন ডলার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখনই দেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর লোকজন টের পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শত শত কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি হতে পারে, ফলে মারাত্মক হুমকিতে পড়তে পারে জনস্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান। বিশ্লেষকরা মনে করেন, প্রতিবেদনটি জীবাশ্ম জ্বালানি ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে মতভেদ তৈরি করতে পারে। প্রতিবেদন বলছে ভবিষ্যতের বিপর্যয় এড়ানো যাবে যদি গ্রীনহাউস গ্যাস নিঃসরণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমালে জীবনযাত্রার ধারায় যে পরিবর্তন হবে তার সঙ্গে সাধারণ মানুষকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। গত মাসে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, জলবায়ু বিজ্ঞানীদের রাজনৈতিক এজেন্ডা আছে। ফক্স নিউজকে তিনি বলেছিলেন, তিনি মনে করেন না তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য মানুষের কর্মকা- দায়ী। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নামার প্রথম থেকে জলবায়ু পরিবর্তন বিরোধী মনোভাব প্রকাশ করে এসেছেন ট্রাম্প। দায়িত্ব নিয়েই তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের করে আনার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, মার্কিন ব্যবসাবাণিজ্য ঠিকঠাক রেখে নতুন কোন চুক্তি করা যায় কিনা সে বিষয়ে তিনি উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। তিনি নির্বাচনী প্রচারের সময়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি ধাপ্পাবাজি বলে উল্লেখ করেন। তবে সম্প্রতি তিনি ওই বক্তব্য থেকে সরে আসেন। ট্রাম্প বলেছেন, আমি এটাকে ধাপ্পাবাজি বলে মনে করি না। আমার মনে হয় এই বিষয়ে কারও কারও ভিন্নমত রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে এরই মধ্যে যেসব প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পেতে শুরু করেছে তার কিছু উদাহরণ প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে সাম্প্রতিক দাবানলের ব্যাপক বিস্তারের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতনতার অভাব এই দুর্যোগের একটি কারণ। এছাড়া সাউথ ক্যারোলাইনার বাঁধ উপচানো বন্যা, উর্বর মধ্যাঞ্চলীয় সমতলভূমির ফসল উৎপাদন হ্রাস ও ফ্লোরিডায় কীটপতঙ্গ বাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবের কথা এতে বলা হয়েছে। পরিবেশ ইস্যুর চেয়ে অর্থনৈতিক ঊন্নয়ন হোয়াইট হাউসের বর্তমান নীতি নির্ধারকদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রতিবেদন তাদের সেই নীতিকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করাবে। হোয়াইট হাউস বলেছে, অনেক সরকারী দফতর ও এজেন্সির কাছ থেকে নেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে, তাই এর বিষয়বস্তু যথাযথ নয়। বহু বিজ্ঞানী মনে করেন, জলবায়ু পরিবর্তনের পেছনে মানবসৃষ্ট কারণের প্রভাব রয়েছে। চলতি সপ্তাহেই হোয়াইট হাউসে প্রচন্ড শীত পড়েছে। ট্রাম্প টুইটে মজা করে লিখেছেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কি হলো ?
×