পাকিস্তানী পুলিশ শুক্রবার রাতে কট্টরপন্থী এক ধর্মীয় নেতাকে আটক করেছে। ধর্ম অবমাননার জন্য অভিযুক্ত খ্রীস্টান নারী আসিয়া বিবির মুক্তির প্রতিবাদে সম্প্রতি তার দলের সহিংস বিক্ষোভে দেশ অচল হয়ে পড়ে। খবর এএফপির।
দেশের তথ্যমন্ত্রী ফওয়াদ চৌধুরী টুইটে বলেছেন, তেহরিক-ই-লাবায়েক পাকিস্তান (টিএলপি) দলের এ উগ্রপন্থী ধর্মীয় নেতা খাদিম হুসেন রিজভিকে ইসলামাবাদে শনিবার এক নির্ধারিত সমাবেশের আগে আটক করা হয়। টুইটে বলা হয়, খাদিম হুসেন রিজভিকে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে এবং এক অতিথি ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। এ পদক্ষেপ খ্রীস্টান নারী আসিয়া বিবির মামলার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দোষী সাব্যস্তের রায় সুপ্রীমকোর্ট গত মাসে খারিজ করার আগে তার মৃত্যুদ- নিয়ে গুঞ্জন চলে এসেছে ৮ বছর ধরে। তথ্যমন্ত্রী তার টুইটে বলেন, জনজীবন সম্পদ ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং আসিয়া বিবি মামলার বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, আইন নিজস্ব গতিতে চলবে এবং কিছুসংখ্যক লোকের ওপর তা ছেড়ে দেয়া যায় না।
আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থী টিএলপির নেতৃত্বে তীব্র বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা বিবির মৃত্যুদ-ের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে। প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যায় এবং দেশের বিস্তৃত এলাকা অচল হয়ে পড়ে। সরকার পদক্ষেপ হিসেবে বিবির ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ইসলামপন্থীদের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছে।
বিবিকে এ মাসের প্রথমদিকে মুক্তি দেয়া হয়। তিনি তার মামলা চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ ফলের জন্য প্রতীক্ষায় ছিলেন দীর্ঘসময়। বিবিকে দেশত্যাগের অনুমতি দেয়া হলে আবারও বিক্ষোভে নামার অঙ্গীকার করেছে টিএলপি। শুক্রবার প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় বলা হয়, টিএলপির অন্য এক নেতা পীর আফজাল কাদরি নতুন করে বিক্ষোভের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পুলিশ লাহোরসহ পাঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ও বন্দর শহর করাচীতে প্রায় ১শ’ দলীয় কর্মীকে গ্রেফতার করেছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে ধর্মের অবমাননা অত্যন্ত উত্তেজনাকর বিষয়। দেশটি ইসলাম ও এর নবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ অপ্রমাণিত হলেও বিচারহীন হত্যার ঘটনা ঘটে। বিবি ২০০৯ সালে মাঠে কাজ করার সময় তাকে পানি আনতে বলা হলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। মুসলিম নারী শ্রমিকরা তাকে অমুসলিম হিসেবে পানির বল স্পর্শ করতে বাধা দেয় এবং সূচনা হয় সহিংসতার। এক স্থানীয় ইমাম তখন দাবি করে বিবি নবী মোহাম্মদকে তিরস্কার করেছেন। বিবি এ অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেন এবং মামলায় তার পক্ষে জড়ো হন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গ্রুপ, রাজনীতিবিদ ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: