ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

২৬টি বিজ্ঞাপনকে রাজনৈতিক তালিকায় ফেলেছে ফেসবুক

প্রকাশিত: ১৯:১০, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

২৬টি বিজ্ঞাপনকে রাজনৈতিক তালিকায় ফেলেছে ফেসবুক

অনলাইন ডেস্ক ॥ যুক্তরাজ্যের কয়েক ডজন গয়না, টুপি আর পোশাক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনকে কারণ ছাড়াই রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই জানে না কেন তাদের ‘রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে’র তালিকায় ফেলা হয়েছে। ফেসবুকে যুক্তরাজ্যের ১২শ’র বেশি পণ্যের বিজ্ঞাপন রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ২৬টি বিজ্ঞাপনকে রাজনৈতিক তালিকায় ফেলেছে ফেসবুক। এমনকি ভারতের লোক গানের এক আসরের বিজ্ঞাপনও ফেলা হয়েছে এই তালিকায়। এই ২৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে হ্যাট বা টুপি তৈরি করে এমন প্রতিষ্ঠান, ফ্যাশন বুটিক, অনলাইন গয়না বিক্রির প্রতিষ্ঠান, ম্যাগাজিন, কফি কোম্পানি ইত্যাদি। তবে মার্কিন বা ব্রাজিলিয়ান একই ধরনের প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক তালিকায় যুক্ত করা হয়নি। তাহলে যুক্তরাজ্যের বেলায় এমটা করার কী কারণ থাকতে পারে? ডাটাবেসে যে প্রতিষ্ঠানটিকে সবচেয়ে বেশি রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, সেই হ্যাট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান কনসেপ্ট ক্যাপ জানিয়েছে, বিবিসি তাদের সঙ্গে যোগাযোগের আগ পর্যন্ত তারা বিষয়টি খেয়ালই করেননি। প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাদের পণ্যে কোনো রকম রাজনৈতিক বার্তা নেই। তবে শুরুতে তারা নিয়ম মাফিক একটি ফর্ম পূরণ করেছিলেন, যা জমা দেবার পর তাদের কাছে নোটিফিকেশন পাঠানো হয়েছিল, যে তারা চাইলে রাজনৈতিক বা ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি পোস্ট করতে পারবে। রাজনৈতিক হিসেবে চিহ্নিত বিজ্ঞাপনের তালিকা দেখে ফেসবুক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে মনে হয়েছে, সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমের এই বিভাগটি সম্ভবত কোনো মানুষ দ্বারা পরিচালিত হয় না। বরং সেটি কোনো রোবট বা যান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন দেবার সময় নির্ধারিত ফর্ম পূরণ করতে গিয়ে বুঝতে না পেরে অনেক বিজ্ঞাপনদাতাই ‘রাজনৈতিক’ বক্সে টিক দেন। এক্ষেত্রেও এমনটাই হতে পারে বলে ফেসবুক মনে করে। গত মাসে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ একটি নতুন ডাটাবেস তৈরির ঘোষণা দেয়, যেখানে যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের তালিকা সংরক্ষণ করা হবে। ডাটাবেসে প্রতিটি বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু এবং সেটি ফেসবুকে প্রচারের জন্য কে পয়সা দিয়েছে, সে তথ্যও যুক্ত করা হবে। কর্তৃপক্ষ বলছে, যুক্তরাজ্যের মতো এই ডাটাবেস যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রাজিলে ইতোমধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে। এই মূহুর্তে ডাটাবেসে নিজের বিজ্ঞাপনটি তালিকাভুক্ত করা বাধ্যতামূলক নয়। তবে নিকট ভবিষ্যতেই ফেসবুকে দেয়া সব ধরণের ‘রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন’ সমূহের সকল তথ্য ডাটাবেসে বাধ্যতামূলকভাবে প্রদান করতে হবে বলে জানায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। গত কয়েক সপ্তাহে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, নতুন যে টুল ফেসবুক চালু করছে তার মাধ্যমে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের স্বচ্ছতা কতটা নিশ্চিত করা যাবে। গত মাসে ভাইস নিউজের একজন সাংবাদিক যুক্তরাষ্ট্রের ১০০ জন সিনেটরের পক্ষে ভুয়া বিজ্ঞাপন কেনার জন্য আবেদন করেছেন। এরপর বিজনেস ইনসাইডারের একজন রিপোর্টার ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা থেকে অর্থ পেয়েছেন এমন একটি ভুয়া বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের এক তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, বেক্সিট নিয়ে প্রচারণা চালানো কিছু ভুয়া প্রচারণা চলছে।তবে সেসব বিজ্ঞাপনের পেছনে কারা আছে সে সম্পর্কে তথ্য দিতে ফেসবুক অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর মধ্যে আটটি দেশের আইনপ্রনেতারা ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের কাছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভূমিকা রাখা এবং ভুল তথ্যের ব্যপারে প্রমাণ হাজির করার আহ্বান জানিয়েছেন। সূত্র : বিবিসি
×