বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া, ১৯ নবেম্বর ॥ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের মরহুম সভাপতি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ চলছে। এটি কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরের মইজ্জ্যারটেকের গোল চত্বরে বসানো হবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রাক্তন সদস্য আবু সাদাত মোঃ সায়েমের ব্যক্তিগত অর্থে ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। গত একমাস ধরে নগরীর চকবাজার এলাকায় ভাস্কর্য শিল্পী মোঃ জাহিদ হোসেন এই নির্মাণ কাজ শুরু করছেন। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু দলের হাজারও ভক্ত, আত্মীয়-স্বজন রেখে ২০১১ সালের ৪ নবেম্বর পরপাড়ে যান। প্রতিবছর তার গ্রামের বাড়ি আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর গ্রামের করবস্থানে ফুল দিয়ে সাদামাটা মৃত্যু বার্ষিকী পালন করেন। আখতারুজ্জমান চৌধুরী বাবুর অন্ধভক্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সায়েম কর্ণফুলী উপজেলার মইজ্জ্যারটেক এলাকার গোলচত্বরে তার নেতার স্মৃতিস্বরূপ দৃষ্টিনন্দন একটি ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ গত এক মাস ধরে চলছে। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করার পাশাপাশি পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশ, আনোয়ারা, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও বাঁশখালী উপজেলার নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছিলেন। তারই ভক্ত প্রাক্তন ছাত্রলীগ নেতা সায়েম নেতাকে হারালেও নেতার স্মৃতিকে হারাতে পারেনি। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর নির্দেশে মিছিল, সভা-সমাবেশ করতে গিয়ে সায়েম কয়েকবার গ্রেফতার, মামলা ও বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকারও হয়েছেন। নেতার আদর্শকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে চান। যার স্মৃতি হিসেবে শাহ আমানত সেতুর দক্ষিণ পাড়ে কর্ণফুলীর মইজ্যারটেক এলাকার গোল চত্বরে নিজের অর্থ দুই লাখ টাকা ব্যয় করে নেতার ভাস্কর্য বানিয়ে দিতে চান। নেতার মৃত্যুর পর দলের কেউ ঠিকমতো স্মরণও করে না। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগে বর্তমানে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ভাইয়ের শূন্যতা বিরাজ করছে। বাবু ভাইয়ের স্বপ্ন ছিল পশ্চিম পটিয়ার ৫ ইউনিয়নকে নিয়ে নতুন একটি উপজেলা করা হয়। দেশরতœ প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বাবু ভাইয়ের সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন। মরহুম নেতার পুত্র ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ কর্ণফুলী উপজেলার অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম শুরু করেছেন। তবে মইজ্জ্যারটেকের গোল চত্বর এতদিন ছিল আবর্জনা ও ঝোপ জঙ্গলে ভরপুর। ২০১০ সালের পর থেকে গোল চত্বরটি পরিচর্চা না করার কারণে সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। এই গোল চত্বরে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ভাস্কর্যটি বসানো ও পরিচর্চা করা হলে ওই এলাকাটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের পাশাপাশি দশর্নীয় স্থানে পরিণত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন সদস্য আবু সাদাত মোঃ সায়েম বলেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ভাইয়ের মতো নেতা আগামী প্রজন্ম পাবে না। নেতার ছিল না কোন লোভ-লালসা। তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে সব সময় কাজ করেছেন। স্মৃতিচিহ্নহ্ন হিসেবে নিজের অর্থে ভাস্কর্য তৈরি করে দিচ্ছেন।
ভাস্কর্য শিল্পী জাহিদ হোসেন, তিনি ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন ভাস্কর্য নির্মাণ করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৩ ফুট উঁচু একটি ভাস্কর্য রাঙ্গামাটি জেলার মানিকছড়িতে নির্মাণ করে দিয়েছেন। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে এটি নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ লোকদের দৃষ্টি কাড়বে।