ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গার্ডিওলার নতুন লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

 গার্ডিওলার নতুন লক্ষ্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্ব ক্লাব ফুটবলে দারুণ সফল পেপ গার্ডিওলা। এবার কোন জাতীয় দলের কোচ হওয়ার লক্ষ্য স্থির করেছেন তিনি। ৪৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ডের দৃঢ় বিশ্বাস, কোন না কোন সময় জাতীয় দলের কোচের ভূমিকা পালন করবেন তিনি। এ প্রসঙ্গে পেপ গার্ডিওলা বলেন, ‘আমি জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক কোচ হতে চাই। খুব শীঘ্রই কিংবা দেরিতে হলেও আমি এটা চাই। কেননা আমি তিনদিন কোচিং পেশার সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে চাই। আমি চাই আরও বেশি গলফ খেলতে...। কিন্তু এখন খেলার সময় পাই না।’ এদিকে চলতি মাসের শুরুতেই ম্যানচেস্টার ডার্বিতে মুখোমুখি হয়েছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দুই জায়ান্ট ক্লাব ম্যানসিটি এবং ম্যানইউ। নতুন মৌসুমের প্রথম ম্যানচেস্টার ডার্বির আগেই সেই ম্যাচের রেফারি এ্যান্থনি টেইলরকে নিয়ে মন্তব্য করে বসেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্ডিওলা। যা ইংলিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এফএ’র নিয়মবহির্ভূত। সে জন্য বুধবার পেপ গার্ডিওলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সতর্কবার্তা পাঠায় এফএ। এর আগে জোশে মরিনহোকে ৫০ হাজার পাউন্ড জরিমানা করেছিল এফএ। ২০১৬ সালের নবেম্বর লিভারপুলের বিপক্ষে ম্যাচের আগে রেফারি টেইলরকে নিয়ে মন্তব্য করায় এই জরিমানার কবলে পড়েছিলেন স্পেশাল ওয়ান। এর পেছনে কারণও ছিল। এর আগে চেলসির কোচ থাকাকালীন সময়ও এ রকম অপরাধ করেছিলেন ম্যাচের আগে কোচের বিষয়ে মন্তব্য করে। সে জন্য তাকে প্রথমবার সতর্কবার্তাও পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তা অমান্য করে দ্বিতীয়বার ম্যাচের আগে মন্তব্য করার কারণেই জরিমানা গুনতে হয়েছিল সাবেক রিয়াল মাদ্রিদের এই অভিজ্ঞ কোচকে। এরপর যদি কোন ম্যাচের আগে রেফারিকে নিয়ে মন্তব্য করেন তাহলে জরিমানা গুনতে হবে পেপ গার্ডিওলাকেও। জার্মান ফুটবলের বর্তমান করুণ দশার জন্য পেপ গার্ডিওলাকে কাঠগড়ায় তুললেন দেশটির সাবেক ফুটবলার হ্যান্স পিটার ব্রিগেল। তার বিশ্বাস, জোয়াকিম লো’র দলের বর্তমান সঙ্কটের পেছনে সাবেক বেয়ার্ন মিউনিখের কোচ গার্ডিওলার ফুটবল দর্শনই দায়ী। বার্সিলোনা অধ্যায় (২০০৮-১২) শেষে বেয়ার্নে তিন মৌসুম কাটিয়ে ২০১৬ সালে ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দেন এই স্প্যানিশ কোচ। দ্রুতগতির প্রতি আক্রমণ নির্ভর খেলায় অভ্যস্ত বেয়ার্ন গার্ডিওলার অধীনেই প্রথম শেখে কিভাবে বল নিজেদের দখলে রেখে ধীরে ধীরে আক্রমণে উঠে গোল করতে হয়, কিভাবে ম্যাচের পুরোটা সময় পাসিং ফুটবল খেলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ রেখে ম্যাচ জেতা যায়। এই দর্শনে খেলেই বেয়ার্নকে টানা তিনবার বুন্দেসলিগা জেতানোর পাশাপাশি উয়েফা সুপার কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপ ও দুইবার জার্মান কাপের শিরোপা উঁচিয়ে ধরেন গার্ডিওলা। তিনি বেয়ার্নের কোচ থাকার সময়ই ২০১৪ সালে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি। জার্মানির বর্তমান দলে খেলা ম্যানুয়েল নিউয়ের, টমাস মুলার, জোশুয়া কিমিখ, লেরয় সানে, জেরম বোয়াটেং, ম্যাটস হামেলস, ইলকায় গুন্দোগান প্রত্যেকেই ক্যারিয়ারের কোন না কোন সময় গার্ডিওলার অধীনে খেলেছেন। কেউ বেয়ার্নের হয়ে, আবার কেউ তার বর্তমান দল ম্যানসিটির হয়ে। তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির হয়ে ১৯৮০ উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী ডিফেন্ডার ব্রিগেল তাই বলেন, ‘খুবই স্বাভাবিক লক্ষ্য আমাদের মাথার বাইরে চলে গেছে যে, ফুটবলে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণের চেয়ে ফলাফলই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা সম্পূর্ণ গার্ডিওলার দোষ। তিনি বেয়ার্নের কোচ হওয়ার পর থেকেই কিছু একটা বদলে গেছে। আমাদের ধোঁকা দিয়েছেন তিনি। তিনিই প্রথমে এসে শিখিয়ে গেছেন যে, ম্যাচ জিততে হলে ৭৫% বল দখলে রাখার কৌশলে থাকতে হবে। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাশিত ফলাফলের জন্য যথেষ্ট নয়। অন্তত সবসময়ের জন্য নয়। বিশ্বকাপ জিতে ফ্রান্স দেখিয়ে দিয়েছে, প্রতিপক্ষের কাছে বল ছেড়ে দিয়ে ৫০ শতাংশের নিচে বল নিয়ন্ত্রণে রেখেও ম্যাচ জেতা যায়।’
×