ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শীতকালীন সবজি ও মাছের দাম কমেছে

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

 শীতকালীন সবজি ও মাছের দাম কমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাম্পার ফলন ও সরবরাহ বাড়ায় গত কয়েক বছরের মধ্যে এখন সবচেয়ে কম সবজির দাম। হাত বাড়ালেই পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন সবজি। দাম কম হওয়ায় খুশি নগরবাসী। তবে কৃষক পর্যায়ে ন্যায্য দাম প্রাপ্তি নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। ১৫-৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন সবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিম। সবজির পাশাপাশি মাছ, চাল ও ভোজ্যতেলের মতো পণ্যের দামও কমে গেছে। আমনের ফলন ভাল হওয়ায় কৃষকের ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব। শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, কাওরান বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং ফার্মগেট বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। জানা গেছে, কৃষক পর্যায়ে এবার শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। এ কারণে মৌসুমের আগেই রাজধানীর বাজারগুলোতে পাওয়া গেছে শীতকালীন সবজি। আর এখন ঘর থেকে বেরিয়ে হাত বাড়ালেই নগরীর অলি-গলিতে মিলছে শীতের বাহারী সব সবজি, দামও কম। একই অবস্থা মাছের ক্ষেত্রেও। হঠাৎ করে রাজধানীতে দেশীয় জাতীয় মাছ ও ইলিশের সরবরাহ বেড়ে গেছে। কমে গেছে পেঁয়াজের দাম। ২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ। সবজি বিক্রেতারা বলছে, গত পাঁচ-ছয় বছরে এ রকম দেখা যায়নি। এবার সেপ্টেম্বর মাস থেকে শীতের সবজির সরবরাহ বাড়তে বাড়তে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। অথচ পুরোপুরি শীত আসতে এখনও এক মাস বাকি। দাম কমে যাওয়ায় ভোক্তারা খুশি। ১০০ টাকার সবজি কিনলে ভরে যাচ্ছে ভোক্তার বাজারের থলে। তাদের মতে, এ বছর সবজির উৎপাদন হয়েছে সবচেয়ে বেশি। আর এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা বলছে, সরবরাহ বাড়ায় কমেছে সবজির দাম। বেশির ভাগ সবজিই এখন পাওয়া যাচ্ছে ১৫-৩০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজার হিসেবে খ্যাত কারওয়ান বাজারে পাঁচ কেজির এক পাল্লা শিম বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৯০ টাকায়। এসব শিম খুচরা বাজারভেদে ২৫-৪০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ পনেরো দিন আগেও খুচরা বাজারে প্রতিকেজি শিম ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া আকার ও মানভেদে খুচরা বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকা পিস দরে। বড় আকারের লাউ পাওয়া যাচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকায়। গত বছর ঢাকায় এই সময়ে এরকম দামে কোন সবজি পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শীতকালীন সবজি ছাড়াও অন্য সবজির দামও বেশ কম। পটোল ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা কেজিতে। এছাড়া ঢেঁড়স, করলা, ঝিঙে, ধুন্দলের দাম কমে হচ্ছে প্রতি কেজি ২০-৪০ টাকা দরে। প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। সবজির দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাপ্তান বাজারের ক্রেতা আসলাম আলী জনকণ্ঠকে বলেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই মৌসুমের শুরুতে সস্তায় সবজি পাওয়া যাচ্ছে। আগে সচরাচর এরকম দেখা যায়নি। তিনি জানান, সবজির পাশাপাশি স্বস্তি রয়েছে মাছের বাজারে। দেশীয় প্রজাতির বেশির ভাগ মাছের দাম এখন কমতির দিকে রয়েছে। এদিকে বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ আমদানি ২৫-৩৫ টাকা, দেশীটি ৩৫-৪০, প্রতিকেজি মসুর ডাল (দেশী) ৯০-১০০ টাকায়, মসুর ডাল মোটা ৫০-৭০ টাকায়, মুগ ডাল ১২০ টাকায়, ভোজ্যতেল প্রতি লিটার খোলা ৭৮-৮৪ টাকায় ও বোতলজাত ১০০-১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিনি ৫৫-৬০, আটা ২৬-৩৬ টাকা প্রতিকেজি আদা ১০০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, কেজিতে ১০ টাকা দাম কমেছে ব্রয়লার মুরগি। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে নদী, নালা, খালবিল, হাওড়-বাঁওড়, ডোবা ও পুকুরের পানি কমতে শুরু করায় দেশী জাতের মাছের সরবরাহ বেড়েছে রাজধানীর বাজারে। বছরের অন্য সময়ে মাছ বেশি দামে বিক্রি হলেও এখন দাম কমতে শুরু করেছে। বিশেষ করে বাজারে ইলিশের সরবরাহ বেড়ে গেছে। প্রতিজোরা মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকায়। এছাড়া চিংড়ি ৪৫০-৫৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। মানভেদে রুই ও কাতলা ২০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পর ফের সাগর ও নদীতে ইলিশ মাছ ধরা শুরু হয়েছে। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। এ কারণে ঢাকায় মাছের সরবরাহ বেড়ে গেছে। মাছের দাম কমায় খুশি ভোক্তারা।
×