ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

‘হিডেন এজেন্ডা’ বাস্তবায়ন করতে চায় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ॥ ১৪ দল

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

 ‘হিডেন এজেন্ডা’ বাস্তবায়ন করতে চায় বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট ॥  ১৪ দল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মিথ্যা অভিযোগের মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রশ্নবিদ্ধ করে নিজেদের ‘হিডেন এজেন্ডা’ বাস্তবায়ন করতে চায় বলে অভিযোগ করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ১৪ দলের ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সেঙ্গ সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন। এ সময় ইসির কাছে ১৪ দলের পক্ষ থেকে আট দফা লিখিত দাবি তুলে ধরা হয়। সাক্ষাত শেষে ব্রিফিংকালে দিলীপ বড়ুয়া বলেন, বিএনপি দ্বিমুখী আচরণ করছে। তারা একদিকে নির্বাচনমুখী আচরণ দেখাচ্ছে, আবার সুযোগ পেলেই তারা নির্বাচন বানচাল করতে কার্পণ্য করবে না। আর ‘এক ঢিলে দুই পাখি শিকার’-এর চেষ্টা করছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তারা একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, আবার প্রতিদিন নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে মনগড়া ও বানোয়াট অভিযোগ করে সংশ্লিষ্টদের মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার অপচেষ্টা করছে, যাতে তারা নিরপেক্ষভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতে না পারে। তিনি বলেন, বিএনপি প্রতিনিয়ত নির্বাচনী আইন ও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বক্তব্য রাখছে। অথচ ঐক্যফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেন একজন আইনজ্ঞ হয়েও এ বিষয়ে কিছুই বলছেন না। বিএনপি যে দাবিগুলো উত্থাপন করছে সেগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়। নির্বাচনের পরিবেশ অস্থিতিশীল করে তারা তাদের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়। সাক্ষাতকালে ১৪ দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে ও পরে যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কোন ধরনের নির্যাতন না হয় এবং নির্বাচনে তারা যাতে নির্বিঘেœ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য ইসির প্রতি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব ভোট কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণের কথা বলে নির্বাচনকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়। প্রশাসনের রদবদল সম্পর্কিত বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে দিলীয় বড়ুয়া বলেন, এটি সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া বিএনপির কথামতো যেন এ ধরনের রদবদল করা না হয়, এ বিষয়ে আমরা কমিশনকে জানিয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে কমিশন সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে পারে। এটা সম্পূর্ণ ইসির এখতিয়ার। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাব। ১৪ দলের অপর নেতা জাতীয় পার্টি (জেপি) মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। আমরা তাদের বক্তব্যে আশ্বস্ত। আমরাও নির্বাচন কমিশনকে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব। তবে বিরোধী রাজনৈতিক জোটগুলো নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। এ বিষয়ে কমিশনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছি। প্রধান নির্বাচন কমিশনরাকে দেয়া এক চিঠিতে ১৪ দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বানচালের অংশ হিসেবেই প্রতিদিন অসত্য ও মনগড়া অভিযোগ ইসিতে নিয়ে আসছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল ও জোটকে সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং আইন বহির্ভূত কর্মকা- থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য কর্তব্য। অথচ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন একজন দ-িত ও পলাতক আসামি হওয়ার পরও তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন। চিঠিতে আরও বলা হয়, সংবিধান অনুযায়ী দ-প্রাপ্ত কোন আসামি জাতীয় সংসদের সদস্য পদ প্রার্থীদের বাছাই করতে পারেন না। এ ধরনের কর্মকা- সংবিধানের প্রতি চরম অবমাননা এবং রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তারেক রহমানের এ ধরনের বেআইনী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসির প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। দিলীপ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ১৪ দলের প্রতিনিধি দলে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ওয়ার্কার্স পার্টির কামরুল আহসান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির ডাঃ শাহাদাত হোসেন, জাসদের নাদের চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন প্রমুখ। এ সময় ইসি কমিশনার রফিকুল ইসলাম ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ ইসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×