ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কঠোর অবস্থানে ইসি ॥ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২৪ নভেম্বর ২০১৮

কঠোর অবস্থানে ইসি ॥ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি

তপন বিশ্বাস/শাহীন রহমান ॥ সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনায় কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন মনে করছে এবারের নির্বাচন অন্য যে কোন সংসদ নির্বাচনের চেয়ে ব্যতিক্রম। সরকার, সংসদ বহাল রেখে এবারই প্রথম সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বর্তমান ব্যবস্থা সম্পর্কে দেশে, বিদেশে প্রশ্ন উঠতে পারে। এছাড়া এই ব্যবস্থা রাজনৈতিক দল ও জনগণের আস্থা হারাতে পারে। ইসি মনে করছে বর্তমান ব্যবস্থা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হলে নির্বাচন সুষ্ঠু করার কোন বিকল্প নেই। এজন্য নির্বাচন সুষ্ঠু করতে যত কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ইসি তা নেবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইতোমধ্যে নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্য কর্মকর্তাদের কমিশনে ডেকে কমিশনের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদাভাবে ব্রিফিং করা হচ্ছে। ব্রিফিংয়ে তাদের দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন করে কঠোর বার্তা দেয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে পুরো কমিশনের সম্মানের সঙ্গে জড়িত আপনাদের কর্মকান্ড। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আপনাদের কর্মকান্ডই প্রধান। নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বা ব্যক্তিগত কারও ব্যর্থতার দায় যে কমিশন নেবে না সে বিষয়টি ইসি নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে। বর্তমান আইন, সংবিধান ও বিধি ব্যবস্থার মধ্যেই নির্বাচন যে সুষ্ঠু করা সম্ভব তা ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর বিষয়টি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। গত ১৫ নবেম্বর ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে জোটের নেতারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় ২ ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে ড. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, এই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ইসি আন্তরিক। এমনকি বৈঠক থেকে হাসি মুখেই বের হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইন, বিধান মেনে নির্বাচন করলে ইসির পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়া সম্ভব। সম্প্রতি টাঙ্গাইলে মওলানা ভাসানীর কবরস্থানে ফুল দিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মন্তব্য করেছেন গত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা ভুল করেছেন। সব দল নির্বাচনে আসায় নির্বাচন কমিশনও রাজনৈতিক দলগুলোর দাবি দাওয়া বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে। বিশেষ করে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেয়ার পরই তারা নির্বাচন পেছানোর দাবি জানায়। রাজনৈতিক দলগুলোর এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের পুনর্তফসিল করা হয়েছে। এরপরেই ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে দ্বিতীয় দফায় নির্বাচন পেছানোর দাবি তোলা হয়। কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের এই দাবি কমিশনের পক্ষ থেকে বিবেচনার আশ্বাস দেয়া হলেও বাস্তবতার কারণেই কমিশনের পক্ষে তা সম্ভব হয়নি। তবে তফসিল ঘোষণার পর বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই কমিশনে অভিযোগ দেয়া হচ্ছে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে। জানা গেছে, ঢালাও অভিযোগ বাদ দিয়ে কিছু কিছু অভিযোগ আমলেও নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে সুনির্দিষ্ট অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখেও তদন্তের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করে যাচ্ছেন। সেই অনুযায়ী তিনি তাদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা জারি করেছেন। যা আগের কোন নির্বাচনে করা হয়নি। গত ৮ নম্বেবর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষণা করা হয়। এরপর ১২ নবেম্বর পুনর্তফসিল ঘোষণা করা হয়। পুনর্তফসিলের পরেই পুরো নির্বাচনের দায়িত্বভার যেসব কর্মকর্তার ওপর ন্যাস্ত থাকবে সেই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কমিশনে ডেকে এনে ব্রিফ করা হয়েছে। বিফ্রিংয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাদের উদ্দেশে বলেন, এবারের নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। গতবার সংসদ রেখে নির্বাচন হলেও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন এজন্য যে আগেরবার সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। এবার সব দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ফলে যে নির্বাচন আসছে তা পরিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের ওপর জনগণের গভীর দৃষ্টি রয়েছে। কারও অবহেলায় যেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন বিঘিœত না হয়। আইন অনুসারে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করতে হবে। সংবিধান অনুসারে কমিশন যে দায়িত্ব নিয়েছে নির্বাচন সামনে রেখে সেই দায়িত্ব আপনাদের উপর অর্পণ করা হয়েছে। এখন থেকে নির্বাচনের সব দায়িত্ব আপনাদের। ব্যক্তিগত ব্যর্থতার কারণে সার্বিক নির্বাচন যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ইসির গুরুত্বপূর্ণ অংশ রিটার্নিং কর্মকর্তারা। সব দায়িত্ব আপনাদের। আইন মেনে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ব্যক্তিগত ব্যর্থতার দায়ে যেন কমিশন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। এবার নির্বাচনে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে। সরকার বহাল থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় এই নির্বাচনের মাধ্যমে সেটা প্রমাণ হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্য নিয়ে গত বৃহস্পতিবার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বিশেষ সভা আহ্বান করে নির্বাচন কমিশন। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধতন সব সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। এ সভায় তাদেরও নির্বাচন সামনে রেখে দিক নির্দেশনামূলক নির্দেশও দেয়া হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ব্রিফিংকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবারের নির্বাচনের ১৫ দিন আগেই সশস্ত্র বাহিনী প্রতিজেলায় মোতায়েন এবং পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজের কথা বলেন। তিনি এ সময় পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে পুলিশ বাহিনী ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ প্রশাসনের কারণে নির্বাচন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের যারা প্রশিক্ষণ দেবেন সেই প্রশিক্ষকদের আলাদা প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। নির্বাচন যারা পর্যবেক্ষণ করবেন তাদেরও দায়িত্ব কর্তব্য সম্পর্কে দিননির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া এবারই প্রথম বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা এজেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন, তাদেরও আলাদা প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন থেকে নির্বাচন কমিশন থাকবে কঠোর অবস্থানে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে সরকারের কাছে ছয় শ’ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট চাওয়া হয়েছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে মাঠে থাকবেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা। সরকার নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা করবে। সরকার ইতোমধ্যে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের তালিকা প্রস্তুত করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। সূত্র জানায়, বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটকে সার্বিক সহযোগিতা করতে পর্যাপ্তসংখ্যক পুলিশ, বিডিআর মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনীও থাকবে। এছাড়া ভোটের কাজে নিয়োজিত থাকবেন সরকারের সাত লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সরকার মনে করে তারা অন্য যে কোন সরকারের চেয়ে দেশের অনেক বেশি উন্নয়ন করেছে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে রয়েছে উন্নয়নের ছোঁয়া। দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মানুষের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে। মঙ্গা দূর হয়ে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ডিজিটাল যুগে উন্নীত হয়েছে এই দেশ। এর সুফল পাচ্ছে দেশের প্রতিটি মানুষ। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশের মানুষ আবার এই সরকারকে ক্ষমতায় বসাবে। পাশাপাশি এই সরকারের অধীনে যে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তা আবারও প্রমাণিত হবে। সরকারও চায় সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, দলীয় কর্মী এবং সমর্থকদের নির্বাচনী অনিয়ম রোধে দেড় শ’ তদন্ত কমিটি গঠন করছে নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে সাড়ে ৬শ’ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট। এরই মধ্যে ৩০০ সংসদীয় আসনের নির্বাচনী এলাকায় ভোটের পরদিন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের নির্দেশনা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই নির্দেশ দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, মোবাইল কোর্ট আইন অনুযায়ী, ২০০৯-এর আওতায় আচরণবিধি প্রতিপালনের জন্য প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পরের দিন পর্যন্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন। প্রতি উপজেলায় একজন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত প্রতি ৩ থেকে ৪টি ওয়ার্ডের জন্য একজন, সিটি কর্পোরেশন ছাড়া জেলা সদরে প্রতি পৌর এলাকায় এক থেকে দু’জন এবং পার্বত্য এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত ৩ থেকে ৪টি উপজেলার জন্য একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। ইসি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন তদন্ত কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আসনের আয়তন, একাধিক উপজেলা এবং ভোটার সংখ্যাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবার কমিশন। এ হিসেবে জেলার আসনানুপাতে ৪টি, কোনটিতে ৩টি, কোনটিতে দু’টি এবং ক্ষেত্রবিশেষে একটিও কমিটি গঠন করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বড় জেলায় যেখানে পাঁচটির অধিক আসন রয়েছে ওইগুলোতে দু’জন করে ২০ জনের বেশি বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এসব নির্বাচনী তদন্ত কমিটির সদস্যদের আসন্ন সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইন, বিধি ও আচরণ বিধি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে আইন ও বিচার বিভাগের সচিবকে পত্র দিয়েছে ইসি। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (জাতি) তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আরপিওর অনুচ্ছেদ ৮৯-এ এর উল্লিখিত অনুচ্ছেদ ৭৩(২বি), ৭৪(২এ), (৩)(৪)(৫)(৬), আনুচ্ছেদ ৭৮ থেকে ৮১(১) ও ৮২ এর অধীন নির্বাচনী অপরাধসমূহ ‘দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮ (এ্যাক্ট)’ অধীন অপরাধ আমলে নেয়া ও সংক্ষিপ্ত বিচার সম্পন্নের নিমিত্তে ৩০০ নির্বাচনী এলাকার জন্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা আবশ্যক। এসব ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনকালীন অপরাধ আমলে নেন এবং সামারি ট্রায়ালের মাধ্যমে বিচার করা সম্পন্ন করেন। আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য সাড়ে ৬শ’ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন। তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করার জন্য বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান জরুরী। তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, পঞ্চগড়-১ আসনটি তিনটি উপজেলা নিয়ে (সদর, তেঁতুলিয়া ও অটোয়ারী) গঠিত। এ আসনে ৩ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। একইভাবে পঞ্চগড়-২ আসনটি বোদা ও দেবীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ আসনে দায়িত্ব পালন করবেন ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট অর্থাৎ দুই সংসদীয় আসনের জন্য ১টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। একইভাবে দিনাজপুর জেলার ছয় আসনের জন্য ১৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন; যার মধ্যে দিনাজপুর-৬ আসনে সর্বোচ্চ ৪ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ জেলার জন্য তদন্ত কমিটি রাখা হয়েছে ২টি। ঠাকুরগাঁও জেলার ৩টি আসনের বিপরীতে ১টি কমিটির অধীনে ম্যাজিস্ট্রেট থাকছেন ৫ জন। তবে সর্বোচ্চ ১১টি কমিটি ঢাকায়, চট্টগ্রামে ৯টি এবং কুমিল্লায় ৬টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনের কাজে যুক্ত করা হয়। তবে, নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম তদন্তে তফসিল ঘোষণা থেকে ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা। নির্বাচনের প্রচারের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাজা দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা অপরাধ আমলে নিয়ে তথ্য-উপাত্তের আলোকে সামারি ট্রায়াল করে বিচার কাজ সম্পন্ন করেন।
×