ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নাইকো দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে

প্রকাশিত: ০৮:২৯, ২৩ নভেম্বর ২০১৮

নাইকো দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় এফবিআই ও কানাডা পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু। আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘আগামী ৯ ডিসেম্বর এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।’ এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বৃহস্পতিবার রাত দশটায় তার বেইলি রোডের বাসভবনে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী বিশেষ জজ-৯ আদালতের বিচারক মাহমুদুল কবিরের আদালতে মামলাটির বিচার চলছে। ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তত্ত¡াবধায়ক সরকার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক এমপি এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, হাওয়া ভবনকে প্রভাবিত করে নাইকোর আর্থিক লেনদেন বিষয়ে তদন্ত ঘুষ দেয়ার প্রমাণ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআই ও কানাডার রয়াল পুলিশ। কানাডায় নিবন্ধিত নাইকো নামে একটি প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশের কয়েকটি গ্যাস ফিল্ড লিজ নেয়ার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। ২০০২ সাল পর্যন্ত পূর্ব ছাতক গ্যাস ফিল্ডটি একটি ভার্জিন গ্যাস ফিল্ড অর্থাৎ গ্যাসে পরিপূর্ণ ছিল বলে বাপেক্স এবং আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অভিমত দিয়েছিল। কিন্তু নাইকো নানারকম অসৎ পন্থা অবলম্বন করে আমাদের দেশের তৎকালীন ক্ষমতাসীন কিছু ব্যক্তি, বিশেষ করে হাওয়া ভবনকে প্রভাবিত করে এই পূর্ব ছাতক গ্যাস ফিল্ডটি গ্রহণ করে এবং একটি পরিত্যক্ত গ্যাস ফিল্ড হিসেবে এটাকে তখন তাদের হাতে দেয়া হয়। আসলে এই গ্যাস ফিল্ড কখনও পরিত্যক্ত ছিল না। এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ঘুষের বিনিময়ে ওই গ্যাস ফিল্ড লিজ দেয়া হয়েছিল। আমাদের অনুরোধে এফবিআই ও কানাডার রয়েল পুলিশের কাছে আমরা তথ্য পেয়েছিলাম। তাদের ওই তথ্য আমাদের হস্তগত হয়েছে। এ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘৭-৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন এটি। সেটি আমাদের হস্তগত হওয়ায় আদালতে দিয়েছি। আমাদের আবেদনের ভিত্তিতে আদালত পরবর্তী দিন ঠিকও করেছে।’ প্রতিবেদন দাখিলের সময় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গত ১৪ নবেম্বর ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের পক্ষে অভিযোগ গঠনের আংশিক শুনানি শেষ করে সময়ে আবেদন করেন। নাইকো দুর্নীতি মামলায় এফবিআই ও কানাডা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তারা যাতে দেশে আসতে পারেন, তাদের প্রতিবেদনের পক্ষে বক্তব্য দিতে পারেন সে বিষয়ে অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। মাহবুবে আলম এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এসব প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর নাম নেই। কেননা ঘটনার সূত্রপাত ২০০২ সালে।
×