ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত

মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে ॥ ডেনিশ রাষ্ট্রদূত

প্রকাশিত: ০৫:১৮, ২১ নভেম্বর ২০১৮

 মিয়ানমারকে অবশ্যই  রোহিঙ্গাদের নিজ  দেশে ফেরত নিতে হবে ॥  ডেনিশ রাষ্ট্রদূত

ঢাকায় ডেনমার্কের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত উইনি এস্ট্রাপ পিটারসেন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের উচিত তাদের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিয়ে যাওয়া।’ ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ আহ্বান জানান। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। খবর বাসস’র। তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ থেকে ফেরত নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পুনরায় গুরুত্বারোপ করেন। বিপন্ন রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনে তার সরকারের পদক্ষেপসমূহের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের অস্থায়ী আবাসনের জন্য তার সরকার নোয়াখালীতে একটি চরের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। দেশের গণতন্ত্রের প্রসঙ্গ উঠলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ চাই।’ উইনি এস্ট্রাপ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের চমকপ্রদ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি আপনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের বিশেষ করে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে জানতে পেরে আনন্দিত হয়েছি।’ দেশের উন্নয়নে তার সরকারের নিরন্তর প্রচেষ্টার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায় এখন উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের খাদ্য নিরাপত্তাসহ মৌলিক চাহিদাগুলো নিশ্চিত করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’ শেখ হাসিনা এ সময় তার সরকারের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং নারীর ক্ষমতায়নের উল্লেখযোগ্য সাফল্যসমূহও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, তার সরকারের বিবিধ পদক্ষেপের কারণে দেশের নারী সমাজ এখন দেশের সব সেক্টরে অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুত খাতে দ. কোরীয় বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ॥ এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বিদ্যুত খাতের উন্নয়নে এবং দেশে একটি তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগ এবং সহযোগিতা কামনা করেছেন। আজ দুপুরে ঢাকায় নবনিযুক্ত দক্ষিণ কোরীয় রাষ্ট্রদূত হু ক্যাং-ইল প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করতে এলে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোরীয় রাষ্ট্রদূতকে জানান, তার সরকার দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে এবং এ বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়া সহযোগিতার হাত প্রসারিত করলে কাজটি আরও সহজ হয়। তিনি বিদ্যুত উৎপাদনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়াকে আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধিষ্ণু অর্থনীতির ভূয়সী প্রশংসা করে দক্ষিণ কোরীয় রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটা খুবই প্রশংসার দাবি রাখে যে, বাংলাদেশ বিগত কয়েক বছর ধরে ৬ শতাংশের ওপরে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।’ ‘এটি একটি বিরাট অর্জন,’ যোগ করেন তিনি। হু ক্যাং-ইল বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিদ্যুত খাতে সহযোগিতা দানে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সামনে একটি উজ্জ্বল ও ইতিবাচক ভবিষ্যত থাকায় আরও কোরীয় বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আসবে।’ রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাষ্ট্রদূত বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ গৃহীত প্রস্তাবে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। ‘আমরা রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে সফল প্রত্যাবাসন প্রত্যাশা করি,’ যোগ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূত এ প্রসঙ্গে বলেন, দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য ৫০ লাখ মার্কিন ডলার সহযোগিতা প্রদান করেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
×