ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জয়নুল গ্যালারিতে তরুণ শিল্পীদের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২১ নভেম্বর ২০১৮

 জয়নুল গ্যালারিতে তরুণ শিল্পীদের চিত্রকর্ম প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তরুণ চিত্রকরদের ক্যানভাসে চিত্রিত হয়েছে বিবিধ বিষয়। রং-তুলির আঁচড়ে দৃশ্যমান হয়েছে যাপিত জীবনের চিত্র। নিরীক্ষাপ্রবণ দৃষ্টিতে তারা যেমন দেখেছেন সমাজ ও চারপাশের নানা নান্দনিক দৃশ্যাবলী, তেমনই অবলোকন করেছেন সমাজ ও রাষ্ট্রের অসঙ্গতিও। তরুণ শিল্পীদের নিরীক্ষামূলক চিত্রকর্ম নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো যৌথ চিত্রকর্ম প্রদশর্নী। প্রদর্শনীতে উপস্থাপিত হয়েছে ২৩তম বার্জার তরুণ শিল্পী চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ছয় তরুণের ৬টি চিত্রকর্ম। পাশাপাশি রয়েছে আরও ৩৪ তরুণ চিত্রশিল্পীর চিত্রকর্ম। সব মিলি তরুণ শিল্পীদের ৪০টি চিত্রকর্মে সজ্জিত হয়েছে প্রদর্শনী। মঙ্গলবার বার্জার পেইন্টসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রূপালী চৌধুরী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পী মনিরুল ইসলাম, সৈয়দ আবুল বারক আলভী। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতার জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান শিল্পী নিসার হোসেন। রূপালী চৌধুরী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নই একমাত্র উন্নয়ন নয়। তার সঙ্গে মানুষের চিন্তাচেতনার উন্নয়নও জরুরী। তার জন্য শিল্প-সাহিত্য-সঙ্গীতসহ সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ করতে হবে। শিল্পী-সাহিত্যিকদের সহযোগিতা করতে হবে। কেননা শিল্পী-সাহিত্যিকরাই তৈরি করেন একটি জাতির রুচি ও মননবোধ। তরুণদের চিত্রকর্ম ও বার্জার তরুণ শিল্পী চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতা সম্পর্কে প্রতিযোগিতার জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান শিল্পী নিসার হোসেন বলেন, ‘তরুণ শিল্পীদের প্রমোট করার জন্য আকর্ষণীয় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতা এটি। ২৩ বছরের পদাপর্ণ করল এ আয়োজন। প্রতিবছরই এ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে প্রতিভাবন তরুণ শিল্পী বেরিয়ে আসে। পরে তাদের বিদেশে উচ্চতর চিত্রপ্রশিক্ষণও দেয়া হয়। তরুণদের দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ও তাদের নিরীক্ষামূলক কাজ সবাইকে নতুন করে ভাবাবে।’ ২৩তম বার্জার তরুণ শিল্পী চিত্রকর্ম প্রতিযোগিতার বিজয়ী ছয় শিল্পী হলেনÑচিত্রম সেন অনিক (প্রথম), তরিকুল ইসলাম হিরক (দ্বিতীয়), নবরাজ রায় (তৃতীয়), জান্নাতুল নেসা টুম্পা (চতুর্থ), আসমা চৌধুরী (পঞ্চম) এবং সুবর্ণা মোর্শেদা (ষষ্ঠ)। প্রদর্শনী চলবে ২৪ নবেম্বর পর্যন্ত। খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। দি জুবলী হোটেল নাটকের মঞ্চায়ন ॥ নারীর প্রতি সহিংসতা, সংঘ্যালঘু নির্যাতন আর আক্রান্ত মুক্তচিন্তাÑসমাজ বাস্তবতার এমন প্রেক্ষপটে নির্মিত নাটক ‘দি জুবলী হোটেল’। প্রগতির বিরুদ্ধে অশভ শক্তির উন্মাদনার চিত্র তুলে ধরা নাটকটি মঞ্চস্থ হলো মঙ্গলবার। এদিন সন্ধ্যায় নাট্যদল আরণ্যকের ৫৭তম প্রযোজনাটির প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিনায়তনে। রচনার পাশাপাশি নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন মান্নান হীরা। মফস্বল শহরের এক অতি পরিচিত চায়ের দোকানকে কেন্দ্র করে এগিয়ে যাওয়া নাটকের দেখা যয়, জুবলী হোটেলে শহরের সর্বস্তরের মানুষের নিয়মিত আড্ডা চলে। সেখানে হারু মন্ডল নামের এক প্রবীণ নাট্য নির্দেশকও তার দলবল নিয়ে নিয়মিত আড্ডা দেয়। ‘সুলতানা রাজিয়া’ নামে একটি নাটক করার জন্য নিয়মিত চলে বৈঠক। ২০ বছর ধরে সেই প্রক্রিয়া চললেও অদ্যাবধি সুলতানা রাজিয়া মঞ্চে আসেনি। কারণ সুলতানা রাজিয়া চরিত্রে অভিনয় করার জন্য কোনো অভিনেত্রী খুঁজে পাননি হারু মন্ডল। এমন অবস্থায় শহরে আসে যাদুর দল ‘দি ঘোষ ম্যাজিক পার্টি’। সেই ম্যাজিক পার্টির নৃত্যশিল্পী হেমা মালিনীকে দেখে হারু মন্ডলের মনে হয় সেই হতে পারে তার নাটকের সুলতানা রাজিয়া। হারু মন্ডল তাকে প্রস্তাব দেয় অভিনয় করার জন্য। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় ম্যাজিক পার্টির সঙ্গে পাকা স্ট্যাম্পে চুক্তি। অন্যদিকে জুবলী হোটেলের এক কর্মী মমতা। যে কিনা নানা প্রতিকূলতার মাঝেও একটি সুন্দর সংসারের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক সমাজের নির্মম ষড়যন্ত্রে তা ভেঙ্গে হয় খানখান। জুবলী হোটেলের আরেকজন নিয়মিত আগন্তুক হলেন বাউল। জুবলী হোটেলে বাউল এলে যেন প্রাণের স্পন্দনে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে হোটেলটি। বাউলের কণ্ঠে মানবধর্মের গান শুনে সকলের মনে বোধোদয় হলেও ধর্মীয় উগ্রবাদের সঙ্গে যুক্ত কিছু মানুষের তা ভাল লাগে না। তাই তো তাদের রোষানলে পড়ে বাউল। এমন নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মধ্য দিয়ে এগুতে থাকে নটকের কাহিনী। ঘনীভূত হয় মারাত্মক সঙ্কট। ধর্ষিত হয় জুবলী হোটেলের সামনে নিয়মিত ঝাড়ু দেয়া শহরের মেথরকন্যা মনলোভ। এ নিয়ে হৈচৈ পড়ে গেলে ১৪৪ ধারা জারি হয় শহরে। শহর ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় ম্যাজিক পার্টি। গুম করে ফেলা হয় বাউলকে। অপমানের যাতনায় আত্মহত্যা করে মনলোভা। যে জুবলী হোটেলে শিল্প-সংস্কৃতি-বিজ্ঞানসংশ্লিষ্ট মানুষসহ সমাজের প্রগতিশীলদের নিয়মিত আনাগোনা ছিল, প্রগতির বিপক্ষ অপশক্তি বন্ধ করে দেয় তাদের আনাগোনা। জ্বলতে থাকে জুবলী হোটেল। প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে রূপ দিয়েছেন- তমালিকা কর্মকার, মান্নান হীরা, আরিফ হোসেন আপেল, সাজ্জাদ সাজু, রুবলী চৌধুরী, মনির জামান, ইশতিয়াক হোসেন, কৌশিক সাহা, মাহফুজ মুন্না, নিকিতা নন্দিনী, সাঈদ সুমন, মরু ভাস্কর, তাজউদ্দিন তাজু, রেজওয়ান পারভেজ, কামরুল হাসান, ফিরোজ মামুন, জুবায়ের জাহিদ, শাহরান, শেখ জিয়াদুল হক, এস রানা, আল আমিন, সুজাত শিমুল, সাক্ষ্য শাহীদ ও আমিনুল হক। নাটকটির নেপথ্যশিল্পীদের মধ্যে রয়েছেন- সহকারী নির্দেশক কামরুল হাসান। মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা করেছেন ফয়েজ জহির। সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন সুজেয় শ্যাম। প্রিয়াংকা প্যারিসের কোরিওগ্রাফিতেক পোশাক পরিকল্পনা করেছেন সুরাইয়া শান্তা।
×