ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মেয়েরাও দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগ করতে পারবেন

প্রকাশিত: ০৪:৫৭, ২১ নভেম্বর ২০১৮

 মেয়েরাও দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগ করতে পারবেন

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ আন্তর্জাতিক টয়লেট দিবসে সোমবার ভারতে চালু করা হয়েছে অভিনব এক প্রোডাক্ট, যেটি উদ্ভাবন করেছেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ দিল্লী আইআইটির দু’জন ছাত্র, অর্চিত আগরওয়াল ও হ্যারি শেহরাওয়াত। প্রোডাক্টটির নাম দেয়া হয়েছে ‘স্যানফে’, মানে স্যানিটেশন ফর ফিমেল। ভারতে এক-একটার দাম দশ রুপীরও কম। কিন্তু রাস্তাঘাটে নোংরা শৌচাগারেও এই সস্তা, সহজ পদ্ধতিটাই মেয়েদের দাঁড়িয়ে মূত্রত্যাগে বিরাট সাহায্য করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দেশটির সেরা চিকিৎসা গবেষণা প্রতিষ্ঠান এইমস- এটি পরীক্ষা করে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ বলে রায় দিয়েছে। খবর বিবিসির। জনস্বাস্থ্য খাতের গবেষকরাও বলেছেন, স্যানফে জনপ্রিয়তা পেলে ভারতে রাস্তাঘাটে মেয়েদের শৌচাগার ব্যবহারের অভ্যাসটাই আমূল বদলে যেতে পারে। স্যানফে যারা তৈরি করেছেন, তাদের অন্যতম অর্চিত আগরওয়াল বলেন, ‘খুব সহজ। আসলে মেয়েদের মূত্রত্যাগ করার দরকার হলেই যে টয়লেট সিটের ওপর বসতে হয়, সেই প্রয়োজনটাই দূর করে দেবে এটা।’ ভারতে পাবলিক টয়লেটগুলোর পরিচ্ছন্নতার যে হাল তাতে বেশিরভাগ মহিলা সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন না। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাই বলেছে প্রতি দু’জনের মধ্যে একজন মহিলা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট বা মূত্রনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত হন। কাজেই শৌচাগারের কোন অংশ স্পর্শ না-করেই যাতে মহিলারা সহজে মূত্রত্যাগ করতে পারেন, তার জন্য এই ‘স্ট্যান্ড এ্যান্ড পি’ (দাঁড়াও ও প্রস্রাব করো) ডিভাইসটা নক্সা করা হয়েছে। যখনই তাদের শৌচাগার ব্যবহারের দরকার পড়বে, জিনিসটা খুলে নিয়ে মহিলারা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থাতেই তাদের ফ্লো এরিয়ায় ঠিকমতো বসিয়ে নেবেন। তারপর প্রস্রাব করে জিনিসটা ছুড়ে ফেলে দিলেই, ব্যস! টয়লেটের কোন অংশ তাদের টাচ করার দরকারই হবে না! দিল্লী আইআইটির অধ্যাপক শ্রীনিবাসন ভেঙ্কটরামনও এই প্রোডাক্টটির ডিজাইনিংয়ের সঙ্গে যুক্ত, যা তৈরি হয়েছে পুরোপুরি বায়োডিগ্রেডেবেল উপাদান দিয়ে। এই প্রোডাক্টটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে বিভিন্ন এনজিও’র সাহায্যে এক লক্ষ স্যাম্পল (নমুনা) সারাদেশে মহিলাদের মধ্যে বিনা পয়সায় বিলিও করা হচ্ছে। তার আগে গত দু’মাস ধরে প্রোডাক্টটির ট্রায়াল চালানো হয়েছে বিভিন্ন বয়সী মহিলাদের মধ্যে। তাদের অভিজ্ঞতাও রীতিমতো তৃপ্তিদায়ক। দিল্লীর কলেজছাত্রী রিমা জানিয়েছেন, ‘এখন জিমে গেলে আমি সব সময় সঙ্গে স্যানফে রাখছি। এতে সুবিধাটা হল ওয়াশরুমে গেলে আমার ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণের ভয় থাকছে না। তার চেয়েও ভাল জিনিস হল, বারবার টয়লেট সিটটা মুছে নেয়ার কষ্টও করতে হচ্ছে না।’ মধ্যবয়সী গৃহবধূ নীহারিকা শর্মা বলেছেন, ‘যে কোন পাবলিক টয়লেটে গেলেই মাথার ভেতর একটা ভয় কাজ করে না জানি আবার কী ইনফেকশনে পড়ব। এইটা ব্যবহার করার পর থেকে সেই ভয়টা অনেক দূর হয়েছে।’ ভারতে পাবলিক টয়লেটগুলো এতই নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন যে সেগুলো ব্যবহার করার কথা ভাবাই যায় না। কিন্তু এই নতুন ডিভাইসটা মেয়েদের জন্য দারুণ একটা ব্যাপার।
×