ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সুফিয়া কামাল শুধু কবি নন অপ্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ২১ নভেম্বর ২০১৮

 সুফিয়া কামাল শুধু  কবি নন  অপ্রকাশিত  মুক্তিযোদ্ধা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কবি সুফিয়া কামাল শুধু কবি নন, তিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ ও অপ্রকাশিত মুক্তিযোদ্ধা। তার অবদান বাংলাদেশের সব আন্দোলন এবং নারী আন্দোলনে উজ্জ্বল ভূমিকা রাখে। তিনি সারাজীবন অতিবাহিত করেন সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য। জননী সাহসিকতা কবি সুফিয়া কামালের ১৯তম প্রয়াণবার্ষিকীর বক্তৃতায় এসব কথা বলেন অধ্যাপক কাজী মদিনা। সুফিয়া কামালের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত ‘বাংলার সমাজ ও নারী জাগরণে কবি সুফিয়া কামাল’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে তিনি এ মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার বিকেলে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক কাজী মদিনা। আলোচনায় অংশ নেন সুফিয়া কামালের মেয়ে এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ও মহিলা পরিষদের সভানেত্রী আয়েশা খানম। সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সুলতানা কামাল বলেন, কবি সুফিয়া কামালের জীবনের বিস্তার যতটা বড় তা সংক্ষিপ্ত আলাপে বলে শেষ করা যাবে না। তিনি কাজ করতেন জাতি, ধর্ম, বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সব সাধারণ মানুষের জন্য। আয়েশা খানম বলেন, ১৯৪৬ সালে কলকাতায় যখন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা বাধে, তখন দাঙ্গাপীড়িতদের সাহায্যেও ক্ষেত্রে সুফিয়া সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে নারীজাগরণ এবং সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এই সংগ্রামী নারী উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শরিক হয়েছেন, কার্ফিউ উপেক্ষা করে নীরব শোভাযাত্রা বের করেন। মুক্তবুদ্ধির পক্ষে এবং সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিপক্ষে আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সুফিয়া কামাল ১৯৬৯ সালে মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেন। পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ইতিপূর্বে প্রদত্ত তমঘা-ই-ইমতিয়াজ পদক বর্জন করেন। ১৯৭০ সালে মহিলা পরিষদ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭১ সালের মার্চে অসহযোগ আন্দোলনে নারীদের মিছিলে নেতৃত্ব দেন। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, এই সাহসী নারী আজীবন অন্যায়ের প্রতিবাদের পাশাপাশি তিনি নারীদের অধিকার আদায়ের পথ দেখিয়েছেন। কাব্যপ্রতিভা ও কর্মের গুণে তিনি আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবেন।
×