ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নির্বাচনে রোহিঙ্গা সম্পৃক্ততা রোধে ইসির কঠোর নির্দেশনা

প্রকাশিত: ০৪:৫৩, ২১ নভেম্বর ২০১৮

  নির্বাচনে রোহিঙ্গা সম্পৃক্ততা রোধে ইসির কঠোর নির্দেশনা

মোয়াজ্জেমুল হক/ এইচএম এরশাদ ॥ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন থমকে যাওয়ার পর এদের নিয়ে নতুন শঙ্কার জন্ম দিয়েছে আগামী নির্বাচনকেন্দ্রিক। সুবিধাবাদী স্বার্থান্বেষী মহল নির্বাচনী মাঠে এবং ভোটে এদের ব্যবহার করতে পারে এমন গোপন রিপোর্টের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সকল বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসা গ্রহণে ইচ্ছুক ছাড়া অন্য কোন বাহানায় শিবির থেকে যাতে বের হতে না পারে তা নিয়ে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে প্রশাসন। উখিয়া-টেকনাফ অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ৩০টি আশ্রয় শিবির ছাড়াও বিক্ষিপ্তভাবে বসতি গেড়ে রয়েছে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। কক্সবাজার জেলাজুড়ে চারটি সংসদীয় আসন রয়েছে। এসব সংসদীয় ভোটার সংখ্যার প্রায় সমানসংখ্যক রোহিঙ্গা রয়েছে উখিয়া টেকনাফ অঞ্চলে। নিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের অনেকে বিক্ষিপ্তভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে এমনকি জেলার বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন অনুযায়ী ক্যাম্প ইনচার্জের অনুমতি ছাড়া কোন শরণার্থীর অবাধ চলাফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু টেকনাফ থেকে উখিয়ার কুতুপালং পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের অবাধ যাতায়াত এখনও বন্ধ করা যায়নি। শিবির টু শিবির এদের আনাগোনা তো রয়েছেই এমনকি এর বাইরেও এরা চলাফেরার অবৈধ সুযোগ করে নিচ্ছে। স্থানীয়দের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংসদীয় আসন উখিয়া, টেকনাফ, কক্সবাজার সদর ও রামু, মহেশখালী কুতুবদিয়া এবং চকরিয়া-পেকুয়া এ চার আসনে স্বার্থান্বেষী মহল রোহিঙ্গাদের সংযুক্ত করে নির্বাচনী প্রচার এবং ভোটের ময়দানে কাজে লাগাতে চায়। এ প্রক্রিয়ায় যে কোন সময় যে কোন ধরনের সহিংস ঘটনার জন্মও নিতে পারে। এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশন বিষয়টি অবহিত হয়ে এ বারো লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় শিবিরের বাইরে আসা যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে বটে। কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ ব্যাহত যাতে না হয় সে জন্য সেনা, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, নির্বাচনী প্রচার সহসা শুরু হবে। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। এ সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের কাজে লাগাতে স্বার্থান্বেষী মহলগুলো তৎপর রয়েছে। সঙ্গত কারণে বিভিন্ন মহল থেকে ৩০ আশ্রয় শিবির কেন্দ্রিক রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরা বন্ধে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হচ্ছে। কয়েকটি সূত্র বলেছে, ন্যূনতম পক্ষে নির্বাচনের আগে এসব রোহিঙ্গা যাতে ক্যাম্প ছেড়ে অন্যত্র না যেতে পারে সে বিষয়ে ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করতে হবে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা শরণার্থী বিষয়ক কোন আইন কানুন এবং বিধিমালা না মেনেই চলে আসছে। শুধু তাই নয়, তারা নাশকতার কাজেও জড়িয়ে পড়ছে। কক্সবাজারের মোট চার আসনের মধ্যে উখিয়া টেকনাফে ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার ৮২৪। বিপরীতে এ দুই উপজেলায় আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১২ লক্ষাধিক। অপরদিকে, কক্সবাজার সদর রামু আসনে ৪ লাখ ১৪ হাাজর ১৮৫, চকরিয়া-পেকুয়া আসনে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৭৫, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনে ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৬ ভোটার রয়েছে। রোহিঙ্গাদের একটি অংশ এ চার আসনের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। নির্বাচনে এদের যাতে সম্পৃক্ততা না ঘটে সেটাই এখন প্রশাসনের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে আছে। এনজিও গাড়িতে হামলা ॥ দুই নারী এনজিও কর্মীকে উত্যক্তের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ করায় রোহিঙ্গাদের একটি দল হামলা করেছে এনজিও ব্র্যাকের দুটি গাড়িতে। ব্র্যাকের ২টি গাড়ি থামিয়ে এনজিও কর্মীদের নামিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছে রোহিঙ্গারা। এতে ৫ ব্র্যাক কর্মী আহত হয়েছে। উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার বিকেলে।
×