ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভাল খেলার পুরস্কার হিসেবে টেস্ট দলে সাদমান

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২০ নভেম্বর ২০১৮

 ভাল খেলার পুরস্কার হিসেবে টেস্ট দলে সাদমান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে নজরটা বিসিবি একাদশের ফলাফলের দিকে ছিল না। বিশেষ নজর ছিল ওপেনার সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন ও নাইম হাসানের দিকে। কারণ তারা ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের ঘোষিত দলে আছেন। তবে বিশেষ এক নজর যে বাঁহাতি ওপেনার সাদমান ইসলাম অনিকের দিকে নির্বাচকরা রেখেছিলেন সেটা বোঝা গেল প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে। চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে হওয়ার প্রস্তুতি ম্যাচে ৭৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন ২৩ বছর বয়সী এ তরুণ। এ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটেও ব্যাট হাতে দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন। সবমিলিয়ে অবশেষে ক্যারিয়ারের বড় পুরস্কারটা পেয়েছেন। প্রস্তুতি ম্যাচ শেষেই নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন তাকে জানিয়েছেন প্রথম টেস্টের দলে নেয়া হয়েছে তাকে। অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে চার বছর আগে সবার নজরে পড়েন ৬ ম্যাচে ১০১.৫০ গড়ে ৪০৬ রান করে। এক সময়ের সতীর্থ সৌম্য সরকার, তাইজুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজদের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়ে গেছে। সাবেক সতীর্থদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেখেই এতদিন তৃপ্ত থাকতে হয়েছে সাদমানকে। তবে আশা ছাড়েননি। গত প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) ব্যাট হাতে তেমন ভাল না করতে পারলেও এ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজেকে মেলে ধরেন। দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচে সাদমান ভিন্ন ধাঁচের। এখানে তিনি ধারাবাহিকভাবেই রান করেছেন। সর্বশেষ জাতীয় ক্রিকেট লীগে (এনসিএল) ঢাকা মেট্রোর হয়ে ৬ ম্যাচে ২ সেঞ্চুরি, ৩ ফিফটিতে ৬৪.৮০ গড়ে ৬৪৮ রান করেছেন। আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনিই এবার। ঢাকা বিভাগ এবং সিলেট বিভাগের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ২টি ছিল বিশাল- ১৮৯ ও ১৫৭। বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগেও (বিসিএল) ছিলেন দুর্দান্ত। সবমিলিয়ে এ বছর প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৪ ম্যাচে ৪ সেঞ্চুরি, ৬ ফিফটিতে ৫৬.০৪ গড়ে ১১৭১ রান করেছেন। তবে ২৩ বছর বয়সে এসে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে তার। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন। সেটিও আবার মর্যাদার ফরমেট টেস্ট ক্রিকেটে। আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য ১৩ সদস্যের দল। সেই দল থেকে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে খেলা লিটন দাস বাদ পড়েছেন, ফিরেছেন সৌম্য। ২ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে সাদমান ৭৩ রান করেন ২৩০ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৬৯ বল খেলে। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত ডাক পেলেন টেস্ট দলে। ডাক পাওয়ার পর ঢাকার এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আমি সবসময় টেস্ট খেলার স্বপ্ন দেখতাম। তবে হুট করে টেস্ট দলে খেলার কথা কল্পনায়ও ভাবতাম না। সব পরিবেশে ধারাবাহিক ব্যাটিং করে, একটু পরিণত হয়ে যেন ডাক পাই, সেটাই ছিল আমার প্রত্যাশা। বলতে পারেন, ঠিক বয়সে এসে টেস্ট দলে ডাক পেয়েছি।’ তবে ২ দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে ভাল খেলে নির্বাচকদের কিছুটা নজর কাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। এ বিষয়ে সাদমান বলেন, ‘দুইদিনের ম্যাচে ভাল ব্যাটিং করলে আমাকে ডাকা হবে টেস্ট দলে, তা জানতাম না। প্র্যাকটিস ম্যাচে আমি শুধু নিজের ব্যাটিংয়ের দিকেই মনোযোগ দিয়েছি। মাঝে কিছুদিন আমার ফর্ম ভাল ছিল না। প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে রান পাইনি। সে কারণেই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটকে সিরিয়াসলি নিয়েছিলাম। জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিভিন্ন খেলায় ড্রেসিং রুম শেয়ার করার সুযোগটাও কম নয়। অনেক বড় অভিজ্ঞতা। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যবধান অনেক তা জানি।’ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস ভাল করতে পারেননি। তাই প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত ৪২ ম্যাচে ৭ সেঞ্চুরি ও ১৬ হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৬.৫০ গড়ে ৩০২৩ রান করা সাদমানের সুযোগ চট্টগ্রাম টেস্টেই অভিষেকের।
×