ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হোসেন

অটিজমে করণীয়

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ২০ নভেম্বর ২০১৮

অটিজমে করণীয়

অটিজম কথার অর্থ হলো নিজেকে গুটানো। সমাজ থেকে, পরিবার থেকে পরিবেশ থেকে নিজেকে গুটিয়ে আড়াল করে একাকীত্ব জীবনযাপনে অভ্যস্ত হওয়া। কেনার এই শব্দটি প্রথম আলোচনা করেন। এটি এক ধরনের Developmental disoder কিছু সমস্যা ও বিহেভিয়ার কিছু সমস্যা হয়ে যায় ফলে একজন স্বাভাবিক শিশু যেমন কথাবার্তা, যোগাযোগ ও আচার-ব্যবহার করে অটিস্টিক শিশু তা করতে পারে না। প্রায় ৫.২/১০০০ অর্থাৎ হাজারে ৫.২টি শিশু এই অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে। ছেলেমেয়ে সবাই আক্রান্ত হতে পারে। তবে ছেলেরা প্রায় ৪ গুণ বেশি ভুক্তভোগী। অটিস্টিকের কারণ কি : অটিস্টিকের কারণ নির্দিষ্ট কোন কিছু দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না। তবে জেনেটিক, জন্মগত, বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাবের সংমিশ্রণ এর কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। ১। জন্মগত (৫০%)। ২। বাচ্চা প্রসবকালীন সময়, স্থান ও পদ্ধতি খুবই স্পর্শকাতর ইস্যু। কোন কারণে মাথায় আঘাত পাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া ও অন্য কোন বড় অসুখ ইত্যাদি। ৩। বায়োলজিক্যাল কারণের মধ্যে csfg হেমোভিনিলিক এ্যাসিড বেশি থাকে। ৪। ক্রোমোজোম সমস্যা থাকে। ৫। সাইকোলজিক্যাল কারণের মধ্যে পিতা-মাতা খুব emotionalcold, detached I obsessive থাকা। ৬। গবেষণায় দেখা গেছে অনেক অটিজম শিশুর ক্সপিটাল লোব বড় হতে পারে। লক্ষণ : প্রধান লক্ষণের মধ্যে- ১। শিশুর সামাজিক বিকাশ একদমই হয় না। যেমন বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, সমবয়সীদের সঙ্গে কোনভাবেই সম্পর্ক করতে পারে না। ২। কোন কোন শিশু একদম কথা বলে না, কেউ কেউ কথা পুরা বাক্য বুঝিয়ে বলতে পারে না আবার অনেকের কথা ঠিকমতো শুরু হয় কিন্তু তিন বছরের পর disappear করে। ৩। আচার-ব্যবহারের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থাকতে পারে। যেমন ংঃereotype behavior করে। ৪। চোখের দিকে তাকায় না। নিজের মতো চলাফেরা, কাজকর্ম করে। এছাড়া- ১। বাবা-মার আদার-সোহাগ বুঝে না, একটি শিশুকে কোলে নিলে যেমন হাসে, তাকায়; এ ধরনের শিশু এগুলো বোঝে না, তাকে তার মা নিয়েছে না অন্য কেউ নিয়েছে কোন তফাৎ থাকে না। ২। সমবয়সীদের সঙ্গে মিলে না, কোন খেলাধুলায় শেয়ার করে না, একাকীত্ব জীবনযাপন করে। ৩। একই ধরনের খেলনা, একই ধরনের খেলা ও খাবার বেশি পছন্দ করে। ৪। একটা নির্দিষ্ট ভঙ্গিতে হাত তালি দেয়া, শব্দ করে, টেবিলের চতুর্দিকে হাটা, দৌড়াদৌড়ি করে। ৫। কোনো কোনো সময় নিজের কথা ঠিকমতো প্রকাশ করতে পারে না দেখে শরীরে আঘাত করে। অটিজম প্রতিরোধ : ১। গর্বাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো মতেই ওষুধ না খাওয়া। গবেশনায় দেখা গেছে মৃগী রোগের ওষুধে অটিজম বেশি হতে পারে। ২। মায়ের মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে বাচ্চা নেয়ার আগে তা ছেড়ে দেয়া। ৩। বেশি বয়সে বাচ্চা না নেয়া এ ক্ষেত্রে পিতার বয়সকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। ৪। বাচ্চা নেয়ার আগে মাকে রুবেলা ভেকসিন দেয়া। ৫। বাচ্চাকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো। গবেষনায় দেখা গেছে বুকের দুধ না খাওয়ালে শিশুর অটিজমের ঝুঁকি বেশি থাকে। ৬। সাধারণত প্রতি একশোতে ০.৫ জন আর প্রথম শিশু অটিজম হলে দ্বিতীয় বাচ্চার অটিজম হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় ৮%। আর জমজ বাচ্চার মধ্যে বৃদ্ধি পায় ৭৫%। ৭। Bieth defect এর প্রতি ব্যবস্থা নেয়া। বাচ্চা জন্মের সময় যদি বাচ্চার ওজন কম থাকে APGAR SEORE কম হয় এবং ৩৫ সপ্তাহের আগে বাচ্চা ডেলিভারি হয় এমন শিশুর মধ্যে ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মায়ের ওজন বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা একান্ত প্রয়োজন। ৮। ফিনাইল কেটোনোরিয়া ও সিলিয়াক রোগ দ্রুত নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা করা দরকার। ৯। বাবা-মার সিজোফ্রেনিয়া মুডডিসওডার থাকলে বাচ্চার মধ্যে অটিজম বেড়ে যেতে পারে। ১০। পরিবেশ থেকে Heavy metals ও pesticide কমানোর ব্যাপারে অর্থাৎ বায়ুদুষণ প্রতিরোধে জাতীয়ভাবে উদ্যোগ নেয়া। ততো ঝুঁকি কম থাকে। সহকারী অধ্যাপক মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসা যোগাযোগ : ০১৮১৭০২৮২৭৭
×