ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সারাদেশে সন্ত্রাসী জঙ্গী মাদক কারবারি গ্রেফতার অভিযান

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২০ নভেম্বর ২০১৮

  সারাদেশে সন্ত্রাসী জঙ্গী  মাদক কারবারি  গ্রেফতার অভিযান

শংকর কুমার দে ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে কোন ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করা হলে তা মোকাবেলায় পরিকল্পনা গ্রহণ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে মাঠে নামার পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা সংস্থা। সারাদেশে নির্র্বাচনকে সামনে রেখে সন্ত্রাসী, জঙ্গী, মাদক কারবারিসহ অপরাধীদের গ্রেফতারের জন্য বিশেষ অভিযান পরিচালনা শুরু করা হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া অতীতের নির্বাচনের সময়ের যে কোন পরিস্থিতির চেয়ে উন্নত, ভাল ও সন্তোষজনক। সব রাজনৈতিক দল, জোট নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। শুধুমাত্র রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ফরম কেনার ঘটনার সময়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের কর্তব্যরত পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িতে আগুন, ভাংচুর, নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির ঘটনা ছাড়া রাজধানীতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঘটার মতো কোন ঘটনা ঘটেনি। ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি মিডিয়া মাসুদুর রহমান বলেছেন, রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, গাড়ি ভাংচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও নেতাকর্মীদের গ্রেফতারসহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তদন্ত করে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন পুলিশ। রবিবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়। নয়াপল্টনের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করতে পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বিএনপি অফিসের সামনের সহিংস সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার সময়ের তোলা ছবি, ভিডিও ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণাদিও জমা দেয়া হয়েছে। বিএনপি দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণের মধ্যে গত ১৪ নবেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশের দুটি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অভিযোগ করেছে পুলিশ। আর পুলিশ বলেছে, বিএনপি নেতাকর্মীরা বিনা উস্কানিতে তাদের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সব ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রস্তুত রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নির্বাচন নিয়ে কেউ যদি কোন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়, তবে সেটি কঠোর হস্তে দমন করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন পয়েন্টে র‌্যাব ও পুলিশের তল্লাশি ও টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি। এছাড়া পোশাকে ও সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নিরাপত্তা নিশ্চিতে মাঠে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পুলিশ কর্মকর্তা। গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম তত বাড়তে হবে এমন পরিস্থিতি বিবেচনা করেই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। কোনভাবেই ২০১৪ সালের পুনরাবৃত্তির মতো বিশ্বের কাছে আমরা আর পেট্রোল বোমার দেশ হিসেবে চিহ্নিত করতে দেয়া হবে না। পুলিশ, র‌্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ। নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতে উন্নত, ভাল ও সন্তোষজনক, উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ আর দেখা যায়নি, যা অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে।
×